
উখিয়া নিউজ ডেস্ক:
কক্সবাজারে বছরের শেষ সূর্যকে বিদায় জানাতে প্রতিবার সৈকত জুড়ে থাকে লাখো পর্যটকের কোলাহল। নির্বাচনের কারণে এ বছর বিশেষ দিনে পর্যটকশূন্য সৈকত নগরী কক্সবাজার।
সমুদ্র সৈকতের খোলা মঞ্চে নেই কনসার্ট, সাংস্কৃতিক আয়োজন, হোটেল-মোটেলগুলোতে নেই বাড়তি কোনো চাপ। তবে অল্প কিছু পর্যটক যারা আছেন, তারা নির্বিঘ্নে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
পর্যটকদের নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করেই ইনডোর বা আউটডোর কোনো অনুষ্ঠান রাখা হয়নি।জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
কক্সবাজার ডিসি মো. কামাল হোসেন জানান, প্রতি বছর সমুদ্র সৈকতকে ঘিরে কনসার্টসহ বিনোদনমূলক নানা ব্যবস্থা থাকে। লাখো পর্যটক এখানে সমাগম হয়। কিন্তু এবার নির্বাচন কমিশনের নিষেধাজ্ঞার কারণে পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে থার্টি ফার্স্ট নাইটে কোনো আয়োজন রাখা হয়নি।
তিনি আরো জানান, যেহেতু ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন এবং এ নির্বাচনের ফলাফল তৈরি করতে অনেক রাত পর্যন্ত সময় লেগে যায়। এ প্রক্রিয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সবাই ব্যস্ত ছিল। এমনকি পর্যটকদের যারা নিরাপত্তা দেবে ট্যুরিস্ট পুলিশও এ কাজে ব্যস্ত ছিল। তাই পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি চিন্তা করে নির্বাচন কমিশন নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
থার্টিফার্স্ট নাইটে কনসার্ট বা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান না থাকায় যারা কক্সবাজারে অবস্থান করছেন তারা হতাশা প্রকাশ করেছেন। আবার অনেকে নিরিবিলি পরিবেশে, ঝামেলাহীন পরিবেশ পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
কক্সবাজারে বেড়াতে আসা রাজীব হাসান জানান, ফাঁকা সৈকতে ঘুরে বেড়াচ্ছি, খুব ভালো লাগছে। অন্যান্য বছর এদিনে এখানে অনেক পর্যটক থাকে, আজ ফাঁকা থাকবে জেনেই কক্সবাজার এসেছি।
আরেক পর্যটক ফরিদপুরের আতিকুর রহমান। তিনি সহকর্মীদের সঙ্গে সৈকতে বেড়াতে এসেছেন। আতিক জানান, থার্টিফার্স্ট উপলক্ষেই এখানে আসা। কিন্ত্র এসেই দেখি পুরো সৈকত ফাঁকা। তবুও মজা করছি, তবে কনসার্ট বা অন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থাকলে আরো ভালো লাগতো।
পর্যটন ব্যবসায়ী বদরুল আলম মিল্কি জানান, শুক্রবার থেকে সোমবার পর্যন্ত সেন্টমার্টিন-টেকনাফ রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল। কাল থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হবে। যে কারণে এই কয়দিন আশানুরূপ পর্যটক নেই বললে চলে। রোহিঙ্গা সমস্যার কারণে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পের উপর বিরূপ প্রভাব আছে।
কক্সবাজার তারকামানের হোটেল দি কক্সটুডের পরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, অন্যান্য বছর এই দিনে হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউসগুলোতে শতভাগ বুকিং থাকে। কিন্তু এবছরের চিত্র ভিন্ন। নির্বাচনের কারণে কোনো পর্যটক নেই। এমনকি প্রশাসনের নির্দেশনার কারণে সৈকতের উন্মুক্ত মঞ্চে এবং হোটেলগুলোতে ইনডোর কোনো আয়োজন রাখা হয়নি।
তবে পর্যটকদের নিরাপদ ভ্রমণ নিশ্চিত করতে কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের সহকারী এএসপি মো. ফকরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, রোববার জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সীমিত পর্যায়ে সৈকত এবং আশপাশের এলাকাগুলোতে ট্যুরিস্ট পুলিশের নজরদারি আছে।
পাঠকের মতামত