ডেস্ক রিপোর্ট::
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে হঠাৎ করেই অতিরিক্ত সেনা ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন প্রেক্ষিতে সৃষ্ট উত্তেজনার মধ্যে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত লুইন উ কে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার বিকালে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব এম খোরশেদ আলম তাকে তলব করেন। এরপর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একটি আনুষ্ঠানিক পত্র (নোট ভারবাল) তাকে দেওয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র সূত্র জানায়, তাকে একটি নোট ভারবাল বা আনুষ্ঠানিক পত্র দেওয়া হয়। এতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখা হচ্ছে না বলে জানানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হয় এবং বলা হয় এটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য ভালো নয়।
অন্য একটি সূত্র জানায়, রাখাইনে সামরিক শক্তি বাড়ালে নো ম্যানসল্যান্ডে যে ছয় হাজার রোহিঙ্গা আছে তারা মিয়ানমারে ফেরত যেতে আগ্রহী হবে না এবং রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর গোটা প্রক্রিয়াটি অনিশ্চিত হয়ে যেতে পারে।
এদিকে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দুইদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে আলোচনা হয় এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ ধরনের কার্যত্রম গ্রহণ না করার জন্য আহবান জানানো হয়।
অপরদিকে আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেলে বিজিবির সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুজিবুর রহমান জানান, অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি মোকাবেলায় মিয়ানমার সেনাকে পতাকা বৈঠকের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
মুজিবুর রহমান বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে ওই এলাকায় মিয়ানমার বর্ডার গার্ড, পুলিশ ও দেশটির সেনাবাহিনী কার্যক্রম চালাচ্ছে। তারা কাঁটাতারের বেড়া দেয়া, কাঁটাতারের বেড়া আরও শক্তিশালী, আয়রন অ্যাঙ্গেল স্থাপন ও উন্নত প্রযুক্তিসম্পন্ন যন্ত্রপাতি স্থাপন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তুমব্রু সীমান্তে ৩৪ ও ৩৫ নম্বর পোস্টের মাঝামাঝি এলাকায় মিয়ানমার সীমান্তের দেড়শ গজ ভেতরে সেনা সদস্যরা সমাবেশ করেছে।
তিনি বলেন, কয়েক দিন ধরেই জিরো পয়েন্টে থাকা রোহিঙ্গাদের ফেরত আসতে মানা করছে মিয়ানমারের সেনারা। পাশাপাশি ভারী অস্ত্র, গোলা বারুদের সংখ্যাও বাড়িয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সীমান্ত এলাকায় ভারী অস্ত্র মোতায়েন, সেনা সমাবেশ করা সীমান্ত নীতির লঙ্ঘন। যে কোনো ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতি হলে বিজিবি সব সময় দেশ মাতৃকার প্রতি নিবেদিত প্রাণ থেকে দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করবে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, এখনও এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি যে অন্য বাহিনীর সদস্যদের জানাতে হবে। তবে মিয়ানমার স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত সেনা সদস্য মোতায়েন করেছে বলেই আমরা বিজিবির জনবল বৃদ্ধি করেছি। কিন্তু পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
পাঠকের মতামত