ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১৭/১০/২০২৫ ৮:১২ এএম

বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের শিশুদের সহায়তা কার্যক্রম ভয়াবহ অর্থ সংকটে পড়ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, ২০২৬ সালের মধ্যেই তাদের অর্থায়ন তলানীতে পৌঁছাবে।

ইউনিসেফের বেসরকারি তহবিল সংগ্রহ ও অংশীদারত্ব বিষয়ক প্রধান কারলা হাদ্দাদ মারদিনি কক্সবাজার পরিদর্শন শেষে বলেন, রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য বছরের পর বছর অর্জিত অগ্রগতি এখন বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে। আমরা দেখছি শ্রেণিকক্ষ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, সেবা কমে যাচ্ছে— আর লাখো শিশুর ভবিষ্যৎ হয়ে আছে অনিশ্চিত।

মারদিনি আরও বলেন, ‘আমরা কার্যক্রম একীভূত করছি, খরচ কমাচ্ছি, স্থানীয় সহায়তা জোরদার করছি- কিন্তু এত বড় অর্থ সংকট সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে, ২০২৬ সালের শুরুতেই রোহিঙ্গা সহায়তা কার্যক্রম ধসে পড়বে।’

তিনি জানান, শিক্ষাসেবা, বিশুদ্ধ পানি, পয়োনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত কর্মসূচিগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের পর প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। সাম্প্রতিক সময়ে, বিশেষ করে ২০২৪ সালের শুরু থেকে আরও দেড় লাখ রোহিঙ্গা নতুন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রধান দাতা দেশগুলো বৈদেশিক সহায়তা কমিয়ে দেওয়ার ফলে মানবিক সহায়তা খাতগুলো বিশ্বজুড়ে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।

ইউনিসেফ জানায়, ধারাবাহিক সহায়তা কমে যাওয়ায় ইতোমধ্যেই রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে তীব্র দুর্ভোগ তৈরি হয়েছে। অধিকাংশ শরণার্থী সাহায্যের ওপর নির্ভরশীল, আর পুষ্টিহীনতা এখন মহামারির পর্যায়ে পৌঁছেছে।

এছাড়াও কক্সবাজার এলাকায় বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে এবং চলতি বছরেই শিশুসেনা হিসেবে অন্তর্ভুক্তির ৬৮৫টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি।

‘শিশুদের জোরপূর্বক দলে ভেড়ানোর এই প্রবণতা ভবিষ্যতের জন্য ভয়াবহ সংকেত’ বলে মন্তব্য করেন মারদিনি।

ইউনিসেফের তথ্যমতে, রোহিঙ্গা শিশুদের মধ্যে তীব্র পুষ্টিহীনতার হার এখন ২০১৭ সালের সংকটের পর থেকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে।

পাঠকের মতামত