প্রকাশিত: ০৬/০৯/২০১৮ ৯:৩১ এএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক:
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত সে দেশের প্রায় ১২ লাখ অসহায় নাগরিকের (রোহিঙ্গা) প্রথম দলটি শিগগির সে দেশে ফিরে যাবে। এ লক্ষ্যে এরইমধ্যে তিন হাজারের বেশি রোহিঙ্গার বিষয়ে ক্লিয়ারেন্সও দিয়েছে মিয়ানমারের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ।

তবে এ বিষয়ে তাড়াহুড়ো না করে মিয়ারমারে রোহিঙ্গাদের পরিবেশ তৈরির জন্য আরো চাপ বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বাংলাদেশকে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

তারা বলছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুটি এখন আর বাইলেটারাল বিষয় নেই। জাতিসংঘের স্বাধীন ‘ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি’র রিপোর্ট প্রকাশের পর এটি এখন বৈশ্বিক বিষয়। একটি গণহত্যার বিচার বা সমাধান কেবলমাত্র দু’টি রাষ্ট্রের সমাধানের বিষয় হতে পারেনা।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী অবশ্য বলছেন, সম্ভবত অল্পসময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটি মিয়ানমারে ফিরে যাবে।

বাংলানিউজের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রথম দফায় তিন হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে তারা (মিয়ানমার) ক্লিয়ারেন্স দিয়েছে। আমরা আশা করছি, খুব দ্রুতই তাদের প্রত্যাবাসন করা সম্ভব হবে।

বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) মিরপুরের ন্যাশনাল ডিফেনস কলেজে ‘এনডিসি’দের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যের পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মন্ত্রী। এ সময় তিনি এরচেয়ে আর বেশি কিছু বলতে চাননি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কবে থেকে প্রত্যাবর্সন শুরু হবে তা বলা যাবেনা। এ নিয়ে বেশি কিছু বলা ঠিকও হবেনা। মিয়ানমারের সঙ্গে আমরা আমাদের এনগেজমেন্ট বাড়িয়েছি এবং বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করছি।

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক এবং সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, আমরা গত বছর রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসার (২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে) এ প্রত্যাবাসনের কথা শুনে আসছি। এটাকে গুরুত্ব দেওয়ার কিছু নেই।

তিনি বলেন, জাতিসংঘের স্বাধীন ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে, বাংলাদেশ ও আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়কে সেটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। এটা মনে রাখতে হবে, ওই রিপোর্টে বিষয়টিকে স্পষ্ট গণহত্যা বলা হয়েছে। এখানে কিন্তু ‘জাতিগত নিধন’ বা অথেনেটিক ক্লিনজিং শব্দটিও তারা (জাতিসংঘ) বাদ দিয়েছে। এর অর্থ এটা একটি ভয়ঙ্কর গণহত্যা। এটা এখন আর বাইলেটারাল বিষয় নেই। এটা এখন সারাবিশ্বের সমস্যা।

ড. ইমতিয়াজ বলেন, ১০টি দেশ হয়তো মিয়ানমারের পক্ষে আছে কিন্তু ১৮০টি দেশই রোহিঙ্গাদের পক্ষে। তাই এর বিচার হতেই হবে। এজন্য চাপ প্রয়োগের কোনো বিকল্প নেই। চাপ আসা শুরু হয়েছে। জেনারেলদের নাম আসছে। ফেসবুক পর্যন্ত তাদের বয়কট করছে। এরপর হয়তো বৈশ্বয়িক কোম্পানিগুলো তাদের বয়কট করবে। তখন বিষয়টি আরো জোরালো হবে। তখন রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের বিষয়ও উঠে আসবে।

এদিকে আর্ন্তজাতিক অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক জাতিসংঘ অভিবাসন সংস্থার (আইএমও) বাংলাদেশ প্রধান আসিফ মুনির জানান, প্রথম দলটি পাঠানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহলের সতর্ক হতে হবে।

তিনি বলেন, প্রথম দলটি রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবে। তাদের অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করবে অন্যদের ফিরে যাওয়া। এক্ষেত্রে কোনো ভুল হলে তার দায় বাংলাদেশ, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মহলকেই নিতে হবে।

পাঠকের মতামত

ফের লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আবারও চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাচ্ছেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে ...

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সব কমিটি স্থগিত

শাহবাগে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত রশিদ। ছবি: সংগৃহীত কেন্দ্রীয় ...

শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ডে অভিভাবকের ফোন নম্বর যুক্ত করার নির্দেশ

দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ডে বাবা-মা বা অভিভাবকের ফোন নম্বর সংযুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন ...

বিমান দুর্ঘটনা: চলে গেলেন আরো চার শিক্ষার্থী, মোট মৃত্যু ২৭

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুলে প্রশিক্ষরত যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ...