প্রকাশিত: ১২/০৮/২০১৭ ৭:৫৮ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৩:১৯ পিএম

কলকাতা প্রতিনিধি::
ভারতে অবৈধভাবে বসবাসরত প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে ভারত সরকার।

শুক্রবার একথা জানিয়েছে দেশটির এক সরকারি মুখপাত্র। এই লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলিকে টাস্ক ফোর্সও গঠন করার কথা বলা হয়েছে।

ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সূত্রে খবর বৌদ্ধ ধর্মালম্বী অধ্যুষিত মিয়ানমারে অত্যাচারিত হওয়ার পর প্রাণ বাঁচাতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা ৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর মধ্যে কিছু রোহিঙ্গা অরক্ষিত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে।

দিল্লির অভিমত, ভারতে বসবাসরত মাত্র ১৪ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম জাতিসঙ্ঘের উদ্বাস্তু এজেন্সি’এর দ্বারা নিবন্ধিত। বাকীরা প্রত্যেকেই অবৈধ এবং তাদেরকে ফেরত পাঠাতে ভারতও বাধ্য থাকবে। ভারত জাতিসঙ্ঘের উদ্বাস্তু সম্মেলনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ নয়। তাছাড়া দেশটিতে এই জাতীয় কোনো আইনও চালু নেই।

এবিষয়ে ভারতের আভ্যন্তরীণ মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র কে.এস.ধাতওয়ালিয়া জনান ‘কূটনেতিক স্তরে এই বিষয়গুলি নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। সঠিক সময়ে এই বিষয়টিতে আরও স্পষ্টতা আসবে’।

এর আগে বুধবারই ভারতের সংসদে এক লিখিত বিবৃতি দিয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানান ভারতে অবৈধ ভাবে বাস করা রোহিঙ্গা মুসলিমদের চিহ্নিতকরণ করে তাদের বিতাড়িত করার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলিকে একেবারে জেলা স্তর থেকে টাস্ক ফোর্স গঠন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১৯৪৬ সালের ১৪ ফরেনারস অ্যাক্ট অনুয়ায়ী অবৈধ রোহিঙ্গা মুসলিমদের ফেরত পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি। সম্প্রতি মিয়ানমারে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়েছিলেন রিজিজু, সেখানেও এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে সূত্রে খবর।

অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের অভিমত রোহিঙ্গাদের বিতাড়ন ও তাদের পরিত্যাগ করাটা একটি অযৌক্তিক কাজ হবে।

এদিকে ইউনাইটেড নেশনস হাই কমিশনার ফর রিফিউজি (ইউএনএইচসিআর)-এর ভারতীয় কার্যালয় জানাচ্ছে রোহিঙ্গাদের বিতাড়িত করতে চেয়ে দিল্লি যে পরিকল্পনা নিয়েছে সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ভারতের ব্যুরো অফ ইমিগ্রেশন (বিওল)-এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী মুসলিম অধ্যুষিত রাজ্য জম্মু-কাশ্মীর ছাড়াও উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, দিল্লি, হায়দরাবাদ, রাজস্থানে রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়ে আছে। গোটা ভারতে রোহিঙ্গাদের এই বাড়বাড়ন্তে দেশটির আভ্যন্তরীন নিরাপত্তা, জনবিন্যাসের দিক থেকে সত্যিই খুব উদ্বেগের।

পাঠকের মতামত