নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮/০৫/২০২৩ ৭:৪৫ এএম

কক্সবাজারের রামুতে হতদরিদ্র পরিবারের এক কিশোরী কন্যাকে মুখ বেঁধে ও ছুরির ভয় দেখিয়ে নিয়মিত ধর্ষণ করতেন এক পরিবহণ শ্রমিক। বর্তমানে কিশোরীটি ৪ মাসের অন্তঃস্বত্ত¡া হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত রেজাউল করিম (২৪) রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের উত্তর মিঠাছড়ি গাইনপাড়া এলাকার আবদুল আজিজের ছেলে।

অন্তস্বত্ত¡া কিশোরীর মা জানান- দীর্ঘদিন পূর্বে অসুস্থ হয়ে তার স্বামী মারা যান। এরপর থেকে ডেকোরেশনের দোকানে কাজ করে তিনি ৩ সন্তানের জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। সম্প্রতি জানতে পারেন- তার মেয়ে ৪ মাসের অন্তঃস্বত্ত¡া। বিষয়টি জানার পর তিনি মেয়েকে মারধর শুরু করেন। এসময় মেয়ে জানায় ১ বছরেরও বেশী সময় ধরে তাকে জোরপূর্বক ও ছুরি দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিয়মিত ধর্ষণ করে আসছেন রেজাউল করিম। মা কাজের সন্ধানে গেলেই মিনিট্রাকের সহকারি (হেল্পার) রেজাউল করিম বাড়িতে গিয়ে তাকে ধর্ষণ করতো।
মেয়েটির মা আরও জানায়- সম্প্রতি তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে ধর্ষণকারি যুবক ও তার পরিবারের সদস্যরা মেয়েটি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান এবং পরীক্ষায় মেয়েটি অন্তস্বত্ত¡া হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। এরপর থেকে মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে গর্ভের ভ্রুন নষ্ট করার জন্য চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এমনকি তারা এতে রাজি না হওয়ায় অর্থের প্রলোভন দেখাচ্ছে।
মেয়েটির মা আরও জানান- মেয়েটি অন্তস্বত্ত¡া হওয়ার বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়ে গেছে। এখন তাদের সমাজে বেঁেচ থাকাও কঠিন হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে তিনি থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান।

স্থানীয় নারী ইউপি সদস্য মনোয়ারা বেগম মুন্নী ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান- মেয়ের মা তাকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি তাদের আইনী ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেন। তিনি আরও জানান- অন্তঃস্বত্ত¡া হওয়ার বিষয়টি জানার এলাকার সর্দারসহ গন্যমান্য ব্যক্তিরা তাদের বিয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। দুই পরিবার তাতে রাজিও ছিলো। কিন্ত চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার মূহুর্তে ধর্ষণকারি রেজাউল করিমের বোনেরা এ বিয়ে মেনে নিতে অসম্মতি জানান। ফলে বিষয়টি জটিল হয়ে পড়ে।
স্থানীয় গ্রাম সর্দার আবদুল মজিদ জানান- গত শুক্রবার তিনি সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বৈঠক করে উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিয়ের মৌখিক সিদ্ধান্ত হয়। মোহরানাও ধার্য করা হয়। মেয়ের পরিবার এবং ছেলের বাবাও এতে রাজি ছিলো। কিন্তু সেটা লিখিতভাবে চুক্তি সম্পাদনের মূহুর্তে রেজাউল করিমের বোনেরা এসে তাতে বাধা দেন। ফলে বিয়েটি সম্পন্ন হয়নি।
রামু থানার ওসি আনোয়ারুল হোসাইন জানান- এ ব্যাপারে তিনি কোন অভিযোগ পাননি। পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
এব্যাপারে জানতে চাইলে ধর্ষণে অভিযুক্ত রেজাউল করিমের বোন সাবেকুননাহার ও তাসনিম জানান- ধর্ষণের শিকার মেয়েটির সাথে অন্য ছেলেরও সম্পর্ক ছিলো। তাই মেয়েটি গর্বিত হলে এর দায়ভার তার ভাই নিতে পারেনা। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে হবে। তদন্ত ও পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার ভাই দোষী হলে বিয়েতে তাদের কোন আপত্তি নেই

পাঠকের মতামত