প্রকাশিত: ১২/১০/২০১৭ ৯:৪২ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১২:২২ পিএম

ঢাকা: মঙ্গলবার মায়ানমার কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিবেশী পাঁচটি দেশের রাষ্ট্রদূতদের রাখাইন প্রদেশের পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন মায়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমানও।

সেই সফর সেরে ফেরার পর বিবিসি বাংলাকে এদিন দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রদূত রহমান জানান, রাখাইনে গিয়ে তিনি বাস্তুচ্যুত বহু রোহিঙ্গার মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতা দেখেছেন এবং তারা নিজেদের গ্রামে আর ফিরে যেতে চায় না বলেও তাদের জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেছেন সেখানে যেভাবে ঘরবাড়ি পোড়ানো হয়েছে তা ‘হঠাৎ করে ঘটেনি’ বলেই তার মনে হয়েছে।

বাংলাদেশ ছাড়াও প্রতিবেশী আরও চারটি দেশ, অর্থাৎ চীন, ভারত, থাইল্যান্ড এবং লাওসের রাষ্ট্রদূতদের রাখাইনের পরিস্থিতি দেখাতে মঙ্গলবার সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন মায়ানমারের শীর্ষ মন্ত্রী ও কর্মকর্তারা।

সরকারি সহযোগিতায় সম্পাদিত সেই সফর সেরে ফেরার পর সুফিউর রহমান বলছিলেন, ‘গোটা অঞ্চল জুড়ে আমি মাইলের পর মাইল ধরে যে পোড়া বাড়িঘর দেখেছি, তা চোখে না-দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। এ জিনিস হঠাৎ করে হয়নি বলেই আমার মনে হয়েছে।’

সফরে তার সঙ্গী অন্য রাষ্ট্রদূতরাও একই রকম ‘কাছাকাছি ভাবনা’র শরিক বলেও তিনি জানান।

পাঁচ বিদেশি রাষ্ট্রদূতকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বৌদ্ধপ্রধান রাথিডং এলাকার একটি গ্রামে, যেখানে একটি বিচ্ছিন্ন গ্রামে কিছু মুসলিম রোহিঙ্গা বসবাস করছেন।

তারপর রাখাইনের সাগরপাড়ে বেশ কয়েকটি গ্রামও তারা আকাশপথে হেলিকপ্টারে চেপে ঘুরে দেখেন। পরে তিন-চারটি জায়গায় তাদের গাড়িতে চাপিয়েও নিয়ে যাওয়া হয়।

সব জায়গাতেই স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গে তাদের কথাবার্তা হয়েছে সরকারি দোভাষীদের মাধ্যমেই। কথোপকথনের সময় সরকারি কর্মকর্তারাও সেখানে হাজির ছিলেন।

সুফিউর রহমান বলছিলেন, ‘এই মানুষগুলোর চোখেমুখে ছিল চরম নিরাপত্তাহীনতার ছাপ। তারা বলছিলেন তাদের অবর্ণনীয় কষ্টের কথা। নিজের গ্রাম থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এই মানুষেরা, তবে তার পরেও তারা যে সেখানে আর ফিরতে চান না সে কথা আমাদের খোলাখুলিই বললেন।’

‘তবে সরকারি কর্মকর্তারা একটু আড়াল হতেই তাদের কথাবার্তা থেকে একটু অন্যরকম আভাসও পাওয়া যায়, বোঝা যায় সে কথাগুলো তারা সরকারের প্রতিনিধিদের সামনে বলতে সাহস পান না।’

সেই আভাসটা কী ধরনের, এই প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত রহমান জবাব দেন, ‘তারা যে কথাটা মুখ ফুটে বলতে পারেন না বলে মনে হয় সেটা হল তাদের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে তা শুধু একটা প্রতিবেশী ধর্মীয় গোষ্ঠীর কাজ হতে পারে না।’

‘এর পেছনে প্রাতিষ্ঠানিক হাত রয়েছে বলেও তাদের কথা থেকে ইঙ্গিত মেলে, কিন্তু সাহসে ভর করে তারা কারও নাম উচ্চারণ করতে পারেন না।’

তার সফরসঙ্গী অন্য রাষ্ট্রদূতরাও এই বিশাল মানবিক সঙ্কটের ব্যাপকতা দেখে বিচলিত বলে সুফিউর রহমানের মনে হয়েছে। তারা সবাই এ ব্যাপারেও একমত হয়েছেন যে যত দ্রুত সম্ভব এই সঙ্কট মোকাবিলা করা দরকার।

তবে তারা এটাও বিশ্বাস করেন, এ কাজ একা মিয়ানমারের পক্ষে সম্ভব নয় – এ জন্য তাদের অবশ্যই আন্তর্জাতিক সহায়তা লাগবে।

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল সংগ্রহে আইওএমকে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

নতুন অংশীজন খোঁজার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাকে (আইওএম) রোহিঙ্গাদের জন্য আরো তহবিল সংগ্রহের আহ্বান জানিয়েছেন ...

গ্রামাঞ্চলে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

গ্রামাঞ্চলে দ্রুত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ...

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আশা বাংলাদেশ-গাম্বিয়ার

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া। ...

কারামুক্ত হলেন মামুনুল হক

হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক কারামুক্ত হয়েছেন। শুক্রবার (৩ মে) সকাল ...

সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উখিয়ায় হবে উন্মুক্ত কারাগার, শিগগির নির্মাণ শুরু

উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ...