
সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলে নেয়া মিয়ানমারের জান্তা সরকার দেশটির ২৩ হাজারেরও বেশি কারাবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।
শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সাধারণ ছুটির দিনে রাষ্ট্রায়ত্ব গণমাধ্যমে সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং এ ঘোষণা দিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘শান্তি, উন্নয়ন ও শৃঙ্খলাসহ মিয়ানমার যখন একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করছে তখন বন্দিদের নির্দিষ্টভাবে ভদ্র নাগরিক হিসেবে পরিণত করতে, জনগণকে সন্তুষ্ট করতে এবং মানবিক ও সহানুভূতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে বন্দিদের সাধারণ ক্ষমা দেয়া হলো।’
ঘোষণায় জানানো হয়েছে, মিয়ানমারের ২৩ হাজার ৩১৪ জন ও বিদেশি ৫৫ জন বন্দির মুক্তি দেয়া হয়েছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি ভোরে সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মিয়ানমারে রাষ্ট্রক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নেয় দেশটির সামরিক বাহিনী। আটক করা হয় গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি’সহ মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও শাসক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) শীর্ষ কয়েকজন নেতাকে। দেশটিতে এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও নিন্দার ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্র মিয়ানমারের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে।
গেল নভেম্বরে দেশটিতে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখলে নেয় সেনাবাহিনী। সুষ্ঠু ভোটের মধ্য দিয়ে জনগণের নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা যথারীতি হস্তান্তর করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেনাপ্রধান মিং অং হ্লাইং।
এদিকে দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন গ্লোবাল নিউ লাইট বলছে, যারা সাধারণ ক্ষমা পেয়েছেন তাদের কারাদণ্ডের বাকি সাজা ভোগ করতে হবে না। তারা মুক্ত থাকবেন।
মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার প্রতিজ্ঞায় টানা ষষ্ঠদিনের মতো গতকাল বৃহস্পতিবারও সারা দেশে বিক্ষোভ হয়েছে। রাজধানী নেপিদোর রাস্তায় হাজার হাজার প্রতিবাদকারী জান্তাবিরোধী স্লোগান দিয়েছে, সু চি’র সমর্থনে লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভকারীদের দমনে বলপ্রয়োগ করেছে সামরিক সরকার।
বিক্ষোভ চলাকালে গেল মঙ্গলবার এক নারী জান্তা সরকারের আগ্রাসনে গুলিবিদ্ধ হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই গণবিক্ষোভ দমনে জলকামান ও রাবার বুলেট ব্যবহার করা হচ্ছে।
পাঠকের মতামত