প্রকাশিত: ০৪/১২/২০১৮ ২:৫১ পিএম

ডেস্ক রিপোর্ট::
দণ্ড পাওয়া ব্যক্তিদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ বিষয়ে হাইকোর্টের রায় এবং অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমের বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী দল বিএনপির ক্ষেত্রে আইনের ভিন্ন প্রয়োগ হচ্ছে বলেও তিনি সমালোচনা করেন। রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের স্বার্থে আইন এক ধরনের ও বিএনপির ক্ষেত্রে আইন আরেক ধরনের?’
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘হাইকোর্টে ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও আমানউল্লাহ আমানসহ বিএনপির পাঁচ নেতার আবেদন নাকচ হওয়ার দিনে অ্যাটর্নি জেনারেল এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, কারো দণ্ড হলে আপিল বিচারাধীন থাকলেই চলবে না, এমনকি আপিলে মুক্তি পেলেও নিস্তার নেই। কারণ সংবিধান অনুযায়ী দণ্ডিত ব্যক্তিকে মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর অপেক্ষা করতে হবে। এরপর তিনি সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে যোগ্য হবেন। এখন আমাদের প্রশ্ন, অ্যাটর্নি জেনারেলের এই ব্যাখ্যা যদি বিবেচনায় নেওয়া হয়, তাহলে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এবং কক্সবাজারের সাংসদ আবদুর রহমান বদির সংসদ সদস্যপদ কি অবৈধ নয়?’
রিজভী আরো বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল নিজের মনের মাধুরী মিশিয়ে সংবিধান ও আইনের ব্যাখ্যা দেন সরকারপ্রধানকে খুশি করার জন্য। মঈনুদ্দিন, ফখরুদ্দীনের আমলে ২০০৭-০৮ সালে ক্যাঙ্গারু কোর্টে বিএনপির যে নেতারা দণ্ডিত হয়েছিলেন, তাঁদের আপিল বিচারাধীন থাকলেও তাঁদের সবার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। অথচ ওই ক্যাঙ্গারু কোর্টে দণ্ডিত ও সাজা স্থগিত না থাকা অবস্থায় দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মহীউদ্দীন খান আলমগীর। ১৩ বছরের সাজা নিয়ে শুধু আপিল করে এখনো এমপি হিসেবে বহাল আছেন হাজি মোহাম্মদ সেলিম। তাঁর মনোনয়নপত্রও বৈধ বলে বিবেচিত হয়েছে।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আমিনুল হকের মনোনয়ন বাতিলের বিষয়ে রিজভী বলেন, ‘আমিনুল হকের দুটি মামলার বিচারিক আদালতে সাজা হাইকোর্ট বাতিল করে দেন। আপিল বিভাগও তা বহাল রাখেন। এসব তথ্য তিনি হলফনামায় দেওয়ার পরও তাঁর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এখন বাতিলের সার্টিফায়েড কপিও তাঁকে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁকে মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আপিলের সুযোগও দেওয়া হচ্ছে না। মূলত রিটার্নিং কর্মকর্তারা সরকারের নির্দেশই পালন করছেন। আর সরকারের নির্দেশেই বিএনপি নেতাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।’
বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘ঢাকা মহানগর দক্ষিণ পল্টন থানা বিএনপির সভাপতি লোকমান হোসেন ফকিরকে গত রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উঠিয়ে নিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত কোথাও তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। বিএনপির নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে যাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আটকের বিষয়টি অস্বীকার এখন সীমা অতিক্রম করেছে। আমি অবিলম্বে লোকমান হোসেন ফকিরকে সুস্থাবস্থায় তাঁর পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। এ ছাড়া ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রাসেলকে কয়েক দিন আগে তুলে নেওয়ার পর, আজকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’
গতকাল কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুজ্জামান মঞ্জুসহ দুজনকে তাঁদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে নাশকতার মিথ্যা মামলা করেছে পুলিশ। আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে নাকি নাশকতার পরিকল্পনা করছে, এই অজুহাতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের নামে কোনো ওয়ারেন্ট ছিল না। আমি পুলিশ কর্তৃক অধ্যাপক নুরুজ্জামান মঞ্জুসহ দুজনকে গ্রেপ্তার ও নাশকতার মামলা দায়েরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে অসত্য ও বানোয়াট মামলা প্রত্যাহারসহ তাঁদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি।’
এ ছাড়া ঢাকা মহানগর পশ্চিম ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল আমিন ও মো. রিপনকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গ্রেপ্তার করেছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী।

পাঠকের মতামত

পবিত্র ঈদুল ফিতর আজ

‘ঈদ এসেছে দুনিয়াতে শিরনি বেহেশতী/দুষমনে আজ গলায় গলায় পাতালো ভাই দোস্তি’- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ...