আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ৩০/০৭/২০২৫ ১০:৫৮ এএম

বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদী শাসন চালিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতার এক জনসভায় কেন্দ্রীয় সরকারের শরণার্থী নীতির কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ভারত গণতন্ত্রের দেশ, এখানে গণহত্যাকারীদের ঠাঁই হতে পারে না।”

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ওই জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাম না করে ইঙ্গিত দেন, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত শাসকগোষ্ঠীর কিছু সদস্য বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন। আর এর পেছনে রয়েছে দিল্লির ‘রাজনৈতিক ইশারা’।

মমতা বলেন, “আমি তো কিছু বলিনি, তবে সবাই জানে কিছু সরকারি অতিথিকে এখানে রাখা হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশে সমস্যা হয়েছে বলে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে—এটাও এক ধরনের রাজনৈতিক কারণ। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ কোনও হত্যাকারী বা লুটপাটকারীর জন্য আশ্রয়স্থল হতে পারে না।”

বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার একদিকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিকে প্রভাবিত করার কৌশল নিতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ভূখণ্ডকে ব্যবহার করছে, অন্যদিকে এতে আঞ্চলিক রাজনীতিতে অস্থিরতা তৈরি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। মমতার বক্তব্যে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, দিল্লির এই নীতির সঙ্গে তিনি একমত নন।

জানা গেছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে বহুল আলোচিত “জুলাই আন্দোলন”-এ ছাত্র-জনতার উপর গুলির নির্দেশদাতা হাসিনা বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন ছোট বোন শেখ রেহানা এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের একাধিক শীর্ষনেতা। এদের মধ্যে কয়েকজনকে ইতোমধ্যে ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে সাক্ষাৎকার দিতে দেখা গেছে, যা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

এ পরিস্থিতিকে ঘিরে পশ্চিমবঙ্গের সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। রাজনৈতিক ভাষ্যকারদের মতে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এ ধরনের বক্তব্য একদিকে যেমন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর চাপ তৈরি করবে, অন্যদিকে বাংলাদেশের পালিয়ে আসা নেতাদের জন্যও সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।

সামগ্রিকভাবে প্রশ্ন উঠেছে—গণতন্ত্রবিরোধী, মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত এবং রাষ্ট্রীয় অপরাধে নাম জড়ানো নেতাদেরকে আশ্রয় দিয়ে ভারত কিসের বার্তা দিচ্ছে? কূটনৈতিক সৌজন্য, নাকি বৃহৎ রাজনৈতিক হিসাব?

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নির্যাতন করছে আরাকান আর্মি: এইচআরডব্লিউ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর দমনমূলক নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে জাতিগত ...

রয়টার্সের প্রতিবেদনমিয়ানমারের বিরল খনিজে নজর যুক্তরাষ্ট্রের, বিদ্রোহীদের পক্ষে টানছে ট্রাম্প প্রশাসন

মিয়ানমারের বিরল খনিজ সম্পদের দিকে চোখ পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। মিয়ানমারের বিরল খনিজে চীনের কর্তৃত্ব সরিয়ে নিতে ...

মিয়ানমার জান্তা ঘনিষ্ঠদের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার

মিয়ানমারের সামরিক জান্তাঘনিষ্ঠ চার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন অর্থ ...

বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ব্ল্যাকলিস্ট, তালিকায় এক ডজন দেশ

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের জন্য বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ ও ভিসা পাওয়া আগের চেয়ে অনেক বেশি কঠিন ...