প্রকাশিত: ২৩/১১/২০১৭ ১০:০৭ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১০:৩৯ এএম

ঢাকা: আগামী সপ্তাহে বাংলাদেশ সফরকালে ঢাকায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন পোপ ফ্রান্সিস। ভ্যাটিকান মুখপাত্র নিশ্চিত করেছেন এই তথ্য।

মায়ানমারে সংখ্যালঘু মুসলমানদের উপর নির্মম নির্যাতনের নিন্দা একাধিকবার জানিয়েছেন পোপ ফ্রান্সিস। সেদেশে সেনাবাহিনী এবং উগ্রপন্থি বৌদ্ধদের হামলা থেকে বাঁচতে বর্তমানে সব মিলিয়ে প্রায় দশ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশের কক্সবাজার এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে।

ভ্যাটিক্যান জানিয়েছে যে, ১ ডিসেম্বর ঢাকায় এক সম্মেলনে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের একটি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন পোপ।

বাংলাদেশ সফরের আগে অবশ্য তিনদিন মায়ানমারে অবস্থান করবেন পোপ ফ্রান্সিস। সেখানে তিনি দেশটির বিতর্কিত সেনাপ্রধান মিন অং লাইংয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। মূলত ইয়াঙ্গনের আর্চবিশপ চার্লস বোয়ের পরামর্শে এই বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।

আর্চবিশপ পোপকে এই বলেও সতর্ক করেছেন যে, তিনি যেন দেশটিতে সফরকালে রোহিঙ্গাদের ‘রোহিঙ্গা’ হিসেবে সম্বোধন না করেন, কেননা, সেটা করলে বৌদ্ধপ্রধান দেশটিতে রোহিঙ্গাদের উপর নিপীড়ন আরো বেড়ে যেতে পারে।

মায়ানমারের সরকার এবং সেনাবাহিনী দেশটির রাখাইন অঞ্চলে অবস্থানরত সংখ্যালঘু মুসলমানদের ‘রোহিঙ্গা’ বলতে নারাজ। তারা মনে করে, রোহিঙ্গাদের রোহিঙ্গা বলা হলে তারা একটি জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মর্যাদা পাবে, যা দেশটি দিতে চায় না। বরং মায়ানমার আনুষ্ঠানিকভাবে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করে।

ভ্যাটিকান মুখপাত্র অবশ্য বলেছেন যে, পোপকে রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করতে পুরোপুরি নিষেধ করা হয়নি, তবে তিনি ইয়াঙ্গনের আর্চ বিশপের পরামর্শ মেনে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মুখপাত্র গ্রেগ বুর্কে বলেন, ‘দুই দেশের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে পোপের এই সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে।’

মায়ানমার সফরের সময় সেনাপ্রধান ছাড়াও আলাদাভাবে সেদেশের ‘ডি ফেক্টো’ বেসামরিক নেত্রী অং সান সূচির সঙ্গেও সাক্ষাৎ করবেন পোপ। রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতন বন্ধে ব্যর্থ হওয়ায় আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে রয়েছেন সূচি। অতীতে তিনি অবশ্য ক্ষমতায় গেলে রোহিঙ্গা সংকটের সমধান করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন।

এদিকে, বাংলাদেশ সফর উপলক্ষ্যে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। এতে তিনি বাংলাদেশের মানুষদের সঙ্গে সাক্ষাতে তার আগ্রহের কথা জানানোর পাশাপাশি যারা সফরের জন্য পরিশ্রম করছেন তাদের ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র শূন্য দশমিক দুই শতাংশ খ্রিষ্টান। অর্থাৎ দেশটির ১৫৬ মিলিয়ন অধিবাসীর মধ্যে ৩৫০,০০০ খ্রিষ্টান। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার নব্বই শতাংশই মুসলমান।

সূত্র: ডয়চে ভেলে

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গাদের ৩০ মিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিভাগ এবং ইউএসএআইডিয়ের মাধ্যমে কক্সবাজার, ভাসানচর এ অঞ্চলের ...