প্রকাশিত: ০৩/০৯/২০২১ ৯:৫৮ এএম

ফের মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞা আরোপ
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য। দেশটির সামরিক সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রধান একজন ব্যবসায়িক সহযোগীকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। অভিযুক্ত ওই ব্যবসায়ী মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে অর্থনৈতিক সহযোগিতার পাশাপাশি অস্ত্র দিয়েও সহায়তা করে আসছেন বলে শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ব্রিটেনে থাকা মিয়ানমারের তো গ্রুপ অব কোম্পানিজ এবং এর প্রতিষ্ঠাতা তায় জা’র সকল সম্পদ ফ্রিজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর পক্ষে ধনী ওই ব্যবসায়ী একটি অস্ত্র চুক্তিতেও জড়িত ছিলেন।

ADVERTISEMENT

এছাড়া ২০১৭ সালে সংখ্যালঘু মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালাতে তো গ্রুপ অব কোম্পানিজ অর্থায়ন করেছিল বলেও জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলনকারীদের ওপর নিপীড়নের কারণে যুক্তরাজ্য এর আগে মিয়ানমারের বেশ কিছু ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।

এক বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব জানিয়েছেন, ‘মিয়ানমারের সাধারণ মানুষের ওপর বর্বর হামলা বন্ধের জন্য কোনো কাজই করছে না দেশটির সামরিক জান্তা সরকার। আর তাই অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে জান্তা সরকার ও এর সহযোগীদের প্রতিরোধ অব্যাহত রাখবে যুক্তরাজ্য। শিশুসহ নিরাপরাধ সাধারণ মানুষকে তারা যেন হত্যা করতে না পারে সেজন্য সামরিক জান্তাকে বিদেশে গচ্ছিত অর্থে প্রবেশাধিকার এবং অস্ত্র সরবরাহে নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা হবে।’

এই নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্রিটেনে থাকা তো গ্রুপ অব কোম্পানিজের এবং এর মালিক তায় জা’র সকল সম্পদ আপাতত বাজেয়াপ্ত করা হবে। একইসাথে অভিযুক্ত এই ব্যবসায়ী যুক্তরাজ্যেও প্রবেশাধিকার পাবেন না।

২০২০ সালের জাতীয় নির্বাচনে মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) ভূমিধস জয় লাভের পর পার্লামেন্টে আসন বিন্যাস সংক্রান্ত সাংবিধানিক সংকট দেখা দেয় দেশটিতে। মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী দেশটির কেন্দ্রীয় পার্লামেন্টের ২৫ শতাংশ আসন সামরিক বাহিনীর জন্য সংরক্ষিত।

এর জেরে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলে সামরিক বাহিনী, কিন্তু দেশটির নির্বাচন কমিশন সেই অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উল্লেখ করার পর চলতি বছর ১ ফেব্রয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সন সুচিকে হটিয়ে জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী এবং এই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেন মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইং।

অং সান সুচি ও তার দল এনএলডির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা বর্তমানে গৃহবন্দি বা কারাবন্দি অবস্থায় আছেন। সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১০৪৫ জন নিহত হয়েছেন এবং ৬ হাজারেরও বেশি মানুষকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে।

পাঠকের মতামত

৫ বছর পর জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু জান্তাশাসিত মিয়ানমারে

অবশেষে পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমারে। ২০২১ সালে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের ...

মিয়ানমারে জনগণকে ভোট দিতে বাধ্য করতে ‘নৃশংসতা’ চালাচ্ছে জান্তা: জাতিসংঘ

মিয়ানমারের জান্তা আসন্ন সেনা-নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনে জনগণকে ভোট দিতে বাধ্য করতে সহিংসতা চালাচ্ছে এবং ভয়ভীতিও প্রদর্শন ...

দিল্লির পর কলকাতাতেও বাংলাদেশ উপদূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ

ভারতের নয়াদিল্লির পর এবার কলকাতায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসের (ডেপুটি হাইকমিশন) সামনে বিক্ষোভ করেছে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো। মঙ্গলবার ...

ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জাতিসংঘ মহাসচিবের, বিচার নিশ্চিতের আহ্বান

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই যোদ্ধা শরীফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের ...

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলার শুনানি জানুয়ারিতে

রাখাইনের রোহিঙ্গা মুসলিম সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলার শুনানি জানুয়ারিতে শুরু হচ্ছে। ...

জেনেভায় রোহিঙ্গা নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক, অগ্রগতি তুলে ধরবে বাংলাদেশ

‘গ্লোবাল রিফিউজি ফোরাম (জিআরএফ) প্রোগ্রেস রিভিউ ২০২৫’ শুরু হচ্ছে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ...