
পেকুয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা::
কক্সবাজারের পেকুয়ায় আসফি রাহাত তামিম (১৩) নামের এক পক্ষাঘাতগ্রস্ত শিক্ষার্থী বেদড়ক মারধর করেছে স্কুল শিক্ষক। ওই ছাত্র পেকুয়া মডেল জিএমসি স্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র ও পেকুয়া সদর ইউনিয়নের মিয়া পাড়া এলাকার মোস্তাফিজুর রহমানের পুত্র।
সোমবার (২৭ফেব্রুয়ারি) দুপুরে স্কুলে শ্রেণী কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে তুচ্ছ অযুহাতে ওই শিক্ষার্থীর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায় একই স্কুলের শিক্ষক কফিল উদ্দিন।
শিক্ষার্থী আসফি রাহাত তামিম বলেন, সহপাঠীর সাথের কথা বলার অযুহাতে আমাকে তিনটি আলাদা বেত দিয়ে মারধর করে শিক্ষক কফিল উদ্দিন। এছাড়াও আমার পক্ষাঘাতগ্রস্ত পায়ে জুতা পরতে না পারার অযুহাতেও তিনি আমার মাথায় চড় থাপ্পড় মারেন। এসময় আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি। পরে সন্ধ্যায় আমার জ্ঞান ফিরে।
তার বেশ কয়েকজন সহপাঠী নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, কোন কারণ ছাড়াই ব্যক্তিগত ক্রোধের বশিভূত হয়ে কফিল স্যার তামিমকে মারধর করেছে। আমারা স্যারকে অনেক অনুরোধ করেছি তাকে না মারার জন্য। কিন্তু তিনি তা না শুনেই তামিমকে বেত্রাঘাত ও চড় থাপ্পড় মারতে থাকেন। এমনকি ক্লাসের সকল ছাত্রছাত্রীদের সামনে তাকে ছাত্রীদের আসনে বসতে বাধ্য করেন তিনি। আমরা বারবার চিৎকার করে বলেছি যে, সে অসুস্থ, তাকে মারবেন না। প্রয়োজনে আমাদের মারুন।
এঘটনায় মঙ্গলবার (২৮ফেব্রুয়ারি) ওই শিক্ষার্থীর পিতা মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে পেকুয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমার ছেলে মাস তিনেক আগে স্ট্রোক করে। এতে তার শরীরের বাম পাশ অবস হয়ে যায়। এমতাবস্থায় আমরা তাকে ঢাকা এপ্যালো হসপিটালে দীর্ঘ দুমাস উন্নত চিকিৎসা শেষে বাড়িতে নিয়ে আসি। ডাক্তার আমার ছেলেকে সম্পুর্ণ বিশ্রামে রাখতে বললে তার আবদারের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠাতে বাধ্য হই। তবে আমি তার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গিয়ে শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ করে আসি যাতে পড়ালেখা চাপ সৃষ্টি করা না হয়। কিন্তু এরইমধ্যে স্কুল শিক্ষক কতৃক আমার অসুস্থ ছেলেকে নির্মম নির্যাতন মেনে নেয়ার নয়। এব্যাপারে আমি বিচার চাইতে উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক জহির উদ্দিনের সরণাপন্ন হলে তিনি আমাকে তিরষ্কার করেন। আমি আমার অসুস্থ ছেলেকে মারধরের বিচার দাবি করছি।
অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব উল করিম বলেন, আমি ওই স্কুল শিক্ষক এবং একই স্কুলের প্রধান শিক্ষককে এঘটনার কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে জড়িতদের আমি যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি।
পাঠকের মতামত