প্রকাশিত: ১৩/১২/২০২১ ৫:২৩ পিএম , আপডেট: ১৩/১২/২০২১ ৫:২৫ পিএম


ফরিদপুরে ইসলামি বক্তা আবু ত্বহাকে ওয়াজ মাহফিলে বাধা দেওয়ার অভিযোগে বিক্ষুব্ধ জনতা গতকাল রোববার রাতে পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়েছে। এলাকার নিরাপত্তায় আজ সোমবার সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নতুন করে কোনো সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি। গতকালের ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

গতকাল রাত সাড়ে ৯টা থেকে রাত সোয়া ১২টা পর্যন্ত ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর এলাকায় নির্মাণাধীন আমজাদ সরদারের জুট মিল মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ২২টি গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ওই মাঠে মারকাজুত তাকওয়া ইসলামি মাদ্রাসা ও সরদারবাড়ি জামে মসজিদের উদ্যোগে বার্ষিক এ ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ওই ওয়াজ মহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল ইসলামি বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানের।

স্থানীয় ব্যক্তিদের ভাষ্য, গতকাল সন্ধ্যা থেকে ওয়াজ মাহফিল শুরু হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাহফিল মঞ্চে থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় যে প্রশাসনের আপত্তির কারণে আবু ত্বহা বক্তব্য দেবেন না। পরে ওয়াজ মাহফিল সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়। ওই সময় ওয়াজ মাহফিলের মাঠে প্রায় ১০ হাজার শ্রোতা উপস্থিত ছিল। তাদের একটি অংশ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। বিক্ষুব্ধ জনতা পাশের ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। মহাসড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় বিক্ষুব্ধরা। বিক্ষোভকারী একটি অংশ ঘটনাস্থল থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে অবস্থিত করিমপুর পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালায়। তারা ইট ছুড়তে থাকে। ফাঁড়িতে থাকা পুলিশের দুটি গাড়ি ও একটি অ্যাম্বুলেন্সের কাচ ভেঙে ফেলে তারা। পরে ফরিদপুর থেকে দাঙ্গা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শটগানের গুলি ছুড়ে রাত সোয়া ১২টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হন।

করিমপুর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তা পরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুন শাহ বলেন, পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও পুলিশ সদস্যদের আহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

এই ওয়াজ মাহফিল আয়োজনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন আমজাদ সরদারের ছেলে রকিব আল হাসান সরদার। ঘটনা সম্পর্কে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ সীমিত পরিসরে ঘরোয়াভাবে আমাদের এই অনুষ্ঠান করার অনুমতি দিয়েছিল। তবে ওয়াজ মাহফিল চলাকালে গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি ফোন করে বাবাকে বলেন, আবু ত্বহাকে মঞ্চে ওঠানো যাবে না। আমরা ওয়াজ মাহফিলে আগতদের উদ্দেশে মাফ চেয়ে নিলে সমবেতদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।’

হামলার বিষয়ে রকিব আল হাসান সরদারের ভাষ্য, যারা পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা করেছে, সড়ক অবরোধ করেছে, তারা গুটিকয়েক উগ্রপন্থী। তাদের সঙ্গে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজকদের কোনো সম্পর্ক নেই।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, ওয়াজ মাহফিল করতে হলে উপজেলা থেকে অনুমতি নিতে হয়। ত্বহাকে আনার ব্যাপারে কোনো অনুমতি প্রশাসন দেয়নি। ওই স্থানে ওয়াজ মাহফিলের ব্যাপারে কোনো অনুমতি ছিল না।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জুয়েল বলেন, বর্তমানে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়নে করা হয়েছে। এ ঘটনায় করিমপুর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তা পরিদর্শক আবদুল্লাহ আল মামুন শাহ বাদী হয়ে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সুত্র: প্রথম আলো

পাঠকের মতামত

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সীমান্তরক্ষীদের নিতে জাহাজ আসবে এ সপ্তাহেই

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে চলে আসা দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যদের ফের ...