প্রকাশিত: ১১/০৫/২০১৭ ১১:৪৩ পিএম

টিউবওয়েল চাপলেই বের হচ্ছে গরম পানি। শুনতে আশ্চর্য শুনালেও গত প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে এমনটিই হয়ে আসছে জেলার তাড়াইল উপজেলার ধলা ইউনিয়নের কাওয়াখালী, ভেইয়ারকোনা, সিকদারপাড়া, নয়াপাড়া ও আজবপুর গ্রামে। এসব গ্রামের অর্ধশতাধিক টিউবওয়েলের প্রতিটিতেই কিছুক্ষণ চাপলে গরম পানি বের হয়। এ কারণে বিশুদ্ধ পানির সংকটে রয়েছেন এসব গ্রামের মানুষ। এই গরম পানি পান করলে আলসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, এমন তথ্য দিয়েছে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তোজাম্মেল হক জানিয়েছেন, এসব এলাকার টিউবওয়েলের পানিতে মিথেন গ্যাস ছাড়াও মাত্রাতিরিক্ত ম্যাংগানিজ ও পিএইচ পাওয়া গেছে। তারা টিউবওয়েল থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করেছেন। পূর্ণাঙ্গ তথ্যের জন্য এগুলো পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ধলা ইউনিয়নের কাওয়াখালী, ভেইয়ারকোনা, সিকদারপাড়া, নয়াপাড়া ও আজবপুর গ্রামের অর্ধ শতাধিক টিউবওয়েল থেকে দীর্ঘদিন যাবত গরম পানি বের হচ্ছে। এসব টিউবওয়েলে কিছুক্ষণ চাপলেই গরম পানি বের হওয়া শুরু হয়। টিউবওয়েলের এই গরম পানি থেকে রেহাই অনেকেই একাধিক টিউবওয়েল বসিয়েছেন। কিন্তু গরম পানি থেকে মুক্তি পাচ্ছেন না তারা। বাধ্য হয়ে এই গরম পানি সংগ্রহ করে ঠা-া করার পর তাদের পানি পান করতে হয়। এছাড়া এসব টিউওয়েলের পানিতে অন্যরকম একটি গন্ধ থাকে এবং সাবানের পানির মতো অনেকটা পিচ্ছিল।
স্থানীয় ইউপি সদস্য সবুজ মিয়া জানান, এই টিউবওয়েলগুলো চাপলে প্রথম কয়েক মিনিট কিছুটা স্বাভাবিক থাকে। এরপর থেকেই ফুটন্ত গরম পানির মতো পানি বের হতে থাকে। তখন পানিতে হাত লাগানো যায় না।
টিউওয়েল থেকে গরম পানি বের হওয়ার খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. তোজাম্মেল হক ও সদর উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. আবু জাকারিয়া মঙ্গলবার রাতে কাওয়াখালী বাজার এলাকায় যান। সেখানে গিয়ে তারা টিউবওয়েলের পানির নমুনা সংগ্রহ করেন এবং নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান। পানি পরীক্ষার পর তারা জানান, টিউবওয়েলের পানিতে মিথেন গ্যাস থাকায় পানি বের হওয়ার পর একধরনের গন্ধ পাওয়া যায়। এই পানি সঙ্গে সঙ্গে পান করা ক্ষতিকর। এ ছাড়া লিটার প্রতি পানিতে ১ দশমিক ৫ মিলিগ্রাম ম্যাংগানিজ পাওয়া গেছে. যা স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। পানিতে স্বাভাবিক মাত্রায় শূণ্য দশমিক ১ মিলিগ্রাম ম্যাংগানিজ থাকার কথা। ম্যাংগানিজের এই মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতির কারণে পানি কিছুটা পিচ্ছিল হচ্ছে। এছাড়া পানিতে পিএইচের পরিমাণও স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশি পাওয়া গেছে। পানিতে পিএইচের স্বাভাবিক পরিমাণ ৬ দশমিক ৮ থেকে ৭ দশমিক ৫ থাকার কথা থাকলেও এই পানিতে ৯ দশমিক ৮ পাওয়া গেছে। পিএইচের এই অস্বাভাবিক উপস্থিতির কারণে পানি হাতে-পায়ে বা শরীরে লাগলে চুলকায়। এছাড়া এসব টিউবওয়েলের পানি পরীক্ষা করে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা পাওয়া গেছে। অস্বাভাবিক এই তাপমাত্রার কারণেই টিউবওয়েল থেকে গরম পানি বের হয়। স্বাভাবিক পানির তাপমাত্রা ২৪ থেকে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে বলেও জানান এই দুই প্রকৌশলী।

পাঠকের মতামত

‘বাংলাদেশ-মিয়ানমার রাজি থাকা সত্ত্বেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না হওয়ার কারণ খুঁজতে হবে’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ...