প্রকাশিত: ১০/০৮/২০১৮ ৯:২৩ এএম , আপডেট: ১৬/০৮/২০১৮ ১১:৩৫ পিএম

ইলিশের মৌসুম শুরু হয়েছে সেই কবে, ১৫ জ্যৈষ্ঠ। এরপর কেটে গেল দুই মাস। তবু বঙ্গোপসাগর ও উপকূলের বিভিন্ন নদ-নদীতে মিলছিল না ইলিশের দেখা। ভরা মৌসুমে ইলিশ ধরা না পড়ায় জেলে-ব্যবসায়ীদের বলতে গেলে খালি ট্রলার নিয়েই ফিরতে হচ্ছিল। এতে তাঁরা হতাশ হয়ে পড়ছিলেন। কারণ, ধারকর্জ নিয়ে জাল ও ট্রলার তৈরি করে তাঁরা ইলিশ ধরতে গিয়ে প্রতিনিয়ত শূন্য হাতে ফিরছিলেন।

বরিশালের অন্যতম মোকাম পোর্ট রোডের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং পটুয়াখালীর বড় মৎস্যবন্দর মহিপুর-আলীপুর ও কুয়াকাটার মাছের আড়তগুলো ঠিক জমে উঠছিল না। নগণ্যসংখ্যক ইলিশ ধরা পড়ায় দামটা অনেক বেড়ে যায়। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাহিদা অনুযায়ী ইলিশ পাঠানো যাচ্ছিল না। এই যখন অবস্থা তখন হঠাৎ করে জেলেদের জালে ধরা দিতে শুরু করল রুপালি ইলিশ। ফলে জেলে ও ব্যবসায়ীদের চোখেমুখে দেখা গেল আনন্দের ঝিলিক। খবর নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধির পাঠানো।

বরিশাল থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে এসে বুধবার নগরের প্রধান মৎস্য আড়ত বন্দর পোর্ট রোড যেন ভরে যায় ইলিশের প্রাচুর্যে। জেলে-ব্যবসায়ী-আড়তদারের মলিন চেহারা পাল্টে গিয়ে সবার মধ্যেই হাসিখুশি ভাব দেখা দেয়। কারণ, বঙ্গোপসাগরসহ উপকূলীয় নদ-নদীগুলো থেকে ফেরা ট্রলার ছিল ইলিশে ভরা। প্রাণচাঞ্চল্যে ভরে ওঠে পোর্ট রোড এলাকা। ট্রলারের খোল খুলে একদল শ্রমিক ডেকে বা মেঝেতে একে একে ইলিশ তুলছেন তো আরেক দল ঝাঁপিতে করে সেগুলো বন্দরের শেডের নিচে স্তূপ করে রাখছেন।

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ায় এক দিনেই দাম বেশ কমেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, দুদিন আগেও যেখানে ৪০০-৭০০ গ্রাম ওজনের প্রতিমণ ইলিশ ৪০-৫০ হাজার টাকা পাইকারি দামে বিক্রি হতো, সেখানে গতকাল তা এক ধাক্কায় ২০-২১ হাজার টাকায় নেমে আসে।

চার দিন পর বঙ্গোপসাগরের গভীর থেকে ফেরা ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার বেল্লাল মাঝি জানান, তাঁরা প্রায় ৮০ মণ মাছ ধরেছেন। অন্য যেসব ট্রলার গেছে তারাও সবাই প্রচুর মাছ পেয়েছে। একই সুরে আবদুল মান্নান ও জসিম উদ্দিন জানান, তাঁরাও প্রত্যেক ট্রলারে ৬০-৭০ মণ মাছ নিয়ে ফিরেছেন। গতকাল সকালে এ রকম অন্তত ৪০টি ট্রলার দেখা গেছে পোর্ট রোডের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে। আরও অনেক ট্রলার সাগর থেকে ফেরার পথে রয়েছে বলে জানা গেছে।

পোর্ট রোড মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি আশরাফ আলী প্রথম আলোকে জানান, গতকাল এখানে দুই হাজার মণের বেশি ইলিশ এসেছে।

মৎস্য বিভাগের বরিশাল বিভাগীয় উপপরিচালক মো. ওয়াহিদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বারবার লঘুচাপ ও নিম্নচাপসহ সাগরে বৈরী আবহাওয়ার কারণে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে এখন থেকে প্রচুর ইলিশ মিলবে বলে তাঁরা আশা করেন।

পটুয়াখালী প্রতিনিধি জানান, ইলিশ নিয়ে বেশ কিছু ট্রলার মহিপুর-আলীপুর মৎস্য বন্দরে এসেছে। উপকূলের মৎস্য বন্দরগুলো আবার জেগে উঠেছে।

মহিপুর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, সাগরে যেতে প্রতিটি ট্রলারে ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়। এত দিন খালি হাতে ফেরত আসায় তাঁরা হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন। এখন খুশি।

মহিপুরের জেলে সোবাহান মোল্লা বলেন, সাগর কিছুটা শান্ত হলে জেলেরা আরও মাছ পাবেন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বে) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, এখন যেহেতু সাগরে ইলিশ ধরা পড়ছে, পাশাপাশি নদ-নদীতেও ইলিশ পাওয়া যাবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ইলিশ আমদানি হলে দামও কমবে।

পাঠকের মতামত

ফের লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া আবারও চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাচ্ছেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে ...

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সব কমিটি স্থগিত

শাহবাগে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রিফাত রশিদ। ছবি: সংগৃহীত কেন্দ্রীয় ...

শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ডে অভিভাবকের ফোন নম্বর যুক্ত করার নির্দেশ

দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ডে বাবা-মা বা অভিভাবকের ফোন নম্বর সংযুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন ...

বিমান দুর্ঘটনা: চলে গেলেন আরো চার শিক্ষার্থী, মোট মৃত্যু ২৭

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুলে প্রশিক্ষরত যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ...