প্রকাশিত: ২৭/০৩/২০২০ ৭:১২ পিএম
ফাইল ছবি

ডেস্ক নিউজ::

ফাইল ছবি

কক্সবাজার জেলার প্রথম করোনা রোগী একজন রত্নাগর্ভা মা। তার এমন দুর্দিনে ভয়ে পালাচ্ছেন সবাই। আত্মীয়স্বজন-চিকিৎসক-নার্স এমনকি হাসপাতালের অন্যান্য রোগীরাও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। অনেক রোগী হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়েছেন। জরুরি বিভাগেও চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা কমে গেছে। কিন্তু এমনই আতঙ্কজনক পরিস্থিতিতে এই রত্নাগর্ভা মায়ের পাশে রয়েছেন মাত্র একজন, তিনি মেয়ে শাফিয়া। সাহসী-অবিচল-মানবতাবাদী শাফিয়া টানা এক সপ্তাহ ধরে অসুস্থ মায়ের পাশে থেকেও রয়েছেন সম্পূর্ণ সুস্থ!
জেলার প্রথম করোনা রোগী ওমরা ফেরত ৭৮ বছর বয়স্ক বৃদ্ধা দেশে ফেরার ৫ দিন পর গুরুতর অসুস্থ হয়ে গত ১৮ মার্চ কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। গত ২৪ মার্চ (মঙ্গলবার) দুপুরে কক্সবাজারে তার শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর তার সংস্পর্শে আসা আত্মীয়স্বজন, এলাকাবাসী, চিকিৎসক, নার্স, স্টাফসহ জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে আতংক তৈরি হয়। ফলে রোগীর সন্তান ও আত্মীয়স্বজন হোম কোয়েরেন্টাইনে চলে যান। একইভাবে সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কসহ রোগীর সংস্পর্শে আসা ১৪ জন চিকিৎসক, ৪ জন নার্স ও ৩ জন স্টাফ কোয়েরেন্টাইনে রয়েছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে রোগীর সন্তানদের কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম শহরের বাসা লকডাউন করে দেয়া হয়েছে। এ করোনা রোগীর শয্যা পাশে রয়েছেন কেবল তার এক মেয়ে, নাম শাফিয়া। আত্মপ্রত্যয়ী শাফিয়া টানা এক সপ্তাহ ধরে অসুস্থ মায়ের পাশে রয়েছেন। তবে টানা পাশে থেকেও এখনও সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন বলে জানান শাফিয়া।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আইসোলেশন বেডে চিকিৎসাধীন মায়ের পাশে থাকা শাফিয়া টেলিফোনে এ প্রতিবেদকের মাধ্যমে সবার কাছে দোয়া কামনা করেন এবং শীঘ্রই সুস্থ হয়ে ফিরে আসার আশা ব্যক্ত করেন।
করোনা আক্রান্ত রোগী ৭৮ বছর বয়স্কা বৃদ্ধার তৃতীয় সন্তান শাফিয়া, মেয়েদের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তারা ৫ ভাই চার বোন। সবাই উচ্চশিক্ষিত ও স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। তাদের মধ্যে একজন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, আরেকজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, একজন আইনজীবী এবং বাকী দুইজন বেসরকারি কোম্পানির পদস্থ কর্মকর্তা। মায়ের সংস্পর্শে আসা সকলেই হোম কোয়েরেন্টাইনে থাকায় চিকিৎসাধীন মায়ের একমাত্র সঙ্গী হয়ে ওঠেছেন মেয়ে শাফিয়া খাতুন (৪৯)। আর শাফিয়ার এমন বীরোচিত কর্মকান্ড নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও স্থানীয় মিডিয়া তার প্রশংসায় সরব। ৩ ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জননী শাফিয়ার সকল সন্তান দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে জেলার প্রথম করোনা রোগী ধরা পড়ার ঘটনাটি প্রকাশ হয়ে পড়ার পর মঙ্গলবার দুপুর থেকে আতঙ্কে অনেক রোগী হাসপাতাল ছেড়ে অন্যত্র চলে যান।

পাঠকের মতামত

উখিয়াবাসীর স্বপ্ন পূরণ করতে চাই – জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর বিবৃতি

গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি সংবাদের প্রেক্ষাপটে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে বিবৃতি দিয়েছেন উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ...