প্রকাশিত: ১১/০৮/২০১৮ ৭:৩১ এএম , আপডেট: ১৬/০৮/২০১৮ ১১:৩৩ পিএম

মিয়ানমারের উত্তর রাখাইন রাজ্যে অবস্থানরত সাড় পাঁচ থেকে ছয় লাখ রোহিঙ্গার চিকিৎসাসেবাও প্রায় বন্ধ রয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবিক চিকিৎসা সংস্থা ‘মেডিসিন্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স/ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স’ (এমএসএফ) গতকাল শুক্রবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, উত্তর রাখাইনের অরক্ষিত ও ঝুঁকিতে থাকা সমপ্রদায়ের কাছে সাহায্য পৌঁছানোর ক্ষেত্রে স্বাধীন মানবিক সংস্থাগুলো এখনো যথেষ্ট বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। প্রয়োজনীয় মানবিক ও চিকিৎসাসেবা প্রদানের উপযুক্ত পরিবেশ ও সুযোগ না থাকায় এমএসএফের উদ্বেগ বাড়ছে।

গত বছরের ২৫ আগস্ট ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি’র (আরসা) কথিত আক্রমণ ও পরবর্তী সময়ে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর অভিযানের দুই সপ্তাহ আগে, অর্থাৎ ১১ আগস্ট উত্তর রাখাইনে এমএসএফের চিকিৎসাসেবা কার্যক্রমের ওপর মিয়ানমার সরকার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। গতকাল সেই নিষেধাজ্ঞার এক বছর পূর্ণ হলেও এমএসএফ এখনো সেখানে কাজ করতে পারছে না। তবে মংডুতে এমএসএফের কর্মীরা এখনো আছে।

এমএসএফ বলেছে, ‘রাখাইনে রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যার কথা আমরা সব সময় শুনছি। মুসলমান রোগীদের (রোহিঙ্গাদের) স্বাধীনভাবে চলাফেরায় বাধা এখনো আছে। তাদের অতিরিক্ত চিকিৎসা ফি দেওয়ার বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। এটি তাদের (রোহিঙ্গাদের) সামর্থ্যের বাইরে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা এমএসএফ মিয়ানমার টিমের একজনকে বলেছেন, কয়েক মাস আগে তিনি তাঁর মায়ের চিকিৎসার জন্য উত্তর রাখাইন থেকে বাংলাদেশে এসেছিলেন। পরে তাঁর মা বাংলাদেশেই মারা যান। ওই রোহিঙ্গা বলেন, ‘আমরা সিত্তওয়ে বা ইয়াঙ্গুনে যেতে পারি না। তাই আমাদের চিকিৎসার জন্য একমাত্র পথটি হলো সীমানা পার হয়ে বাংলাদেশে আসা। অথচ এই পথ অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। আমার খুব ইচ্ছা ছিল মাকে আমাদের গ্রামে নিয়ে বাবার পাশে কবর দেওয়ার। কিন্তু আমাদের দেশের পরিস্থিতিতে সেটা এখন আর সম্ভব না। এখানে (মিয়ানমারে) বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে পারলে তো আমরা আর বাংলাদেশে যেতামই না।’

এমএসএফ জানায়, মিয়ানমার সরকার দাবি করছে যে তারা সব স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা চাহিদা পূরণ করছে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো নিরপেক্ষ তথ্য পাওয়া যায় না। এমএসএফ-মিয়ানমারের অপারেশন ম্যানেজার বেনোয়া দ্য গ্রিজ বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা পাওয়ার জন্য মানবিক সংস্থাগুলোর প্রবেশাধিকার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পরিস্থিতি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের উপযোগী কি না তা নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্ত ছাড়া বোঝার বিন্দুমাত্র উপায় নেই।’

পাঠকের মতামত