ফারুক আহমদ, উখিয়া নিউজ ডটকম
প্রকাশিত: ২৯/০৬/২০২৫ ৭:৫১ এএম

উখিয়ায় ১৫ টি ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার চলছে দায়সারাভাবে। সরকারিভাবে তদারকি নেই। নেই কোন প্রতিষ্ঠানের হালনাগাদ লাইসেন্স কিংবা বৈধ কাগজপত্র। ইচ্ছেমত চলছে মানহীন স্বাস্থ্য সেবা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডাঃ মাহমুদুল হক বলেন, এক পরিদর্শন জরিপে দেখা গেছে উখিয়ায় কোন হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের লাইসেন্স পাওয়া যায়নি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আগামী মাস থেকে উপজেলা পর্যায়ে অভিযান শুরু হবে।

দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারিভাবে গড়ে উঠা এসব প্রতিষ্ঠানে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড় পত্রে দেয়া শর্তাবলীর কিছুই মানা হচ্ছে না। অনেক প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রও নেই।

অভিযোগ উঠেছে, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধতন কর্মকর্তাদের মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করেই এসব প্রতিষ্ঠান ব্যবসা নির্বিঘ্নে চালিয়ে যাচ্ছে। এক্সরে থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এমন অভিযোগ রোগী ও স্বজনদের।

উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানায়, কোটবাজার, মরিচ্যা, কুতুপালং ও পালংখালী সহ বিভিন্ন স্টেশনে ১৫ টি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কিংবা সিভিল সার্জন অফিসে আবেদন করেই হাসপাতাল ও ক্লিনিক চালু করে বসেছে মালিকরা। সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে অনুমোদন কিংবা বৈধ লাইসেন্স না আসার পূর্বেই কিভাবে হাসপাতাল ও ক্লিনিক চালু করছে এই নিয়ে সচেতন মহলে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় নাগরিক সমাজের অভিযোগ, এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ডিপ্লোমাধারী ল্যাব টেকনোশিয়ান কিংবা মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট নেই। নামে মাত্র প্রশিক্ষণ নিয়ে ল্যাব পরিচালনা করছে। এতে করে অসংখ্য ভুল রিপোর্ট দেওয়া হচ্ছে রোগীদের।
এদিকে গত ২৫ জুন জেলা সিভিল সার্জন অফিসের একটি পরিদর্শন টিম উখিয়ার বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিদর্শন করেন। সদর হাসপাতালের প্যাথলজিষ্ট বিভাগের প্রধান ডাঃ জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বে পরিদর্শন দল হাসপাতাল ক্লিনিক ও প্যাথোলজি সেন্টারে গেলে কর্তৃপক্ষ হালনাগাদ বৈধ কাগজপত্র ও লাইসেন্স দেখাতে পারেননি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ সাজেদুল ইমরান শাওন, ডাঃ আসাদ ও উপজেলা স্যানেটারী ইন্সপেক্টর নুরুল আলম।
পরিদর্শনে আসা তদন্ত টিমের সদস্যার সাথে কথা বলে জানা গেছে, কোট বাজার অরিজিন হাসপাতাল, লাইফ কেয়ার, কুতুপালং পালং জেনারেল হাসপাতাল ও পালংখালী তাজমান হাসপাতাল চলতি ২০২৪ – ২০২৫ অর্থবছরের লাইসেন্স হালনাগাদ করার জন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে, কিন্তু এখনো নবায়ন করা হয়নি। এছাড়া অন্যান্য হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো লাইসেন্সের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন মাত্র। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এসব আবেদনের বিপরীতে কোন ফলাফল দেয়নি। এমনকি অধিকাংশ প্যাথলজি ল্যাবগুলো পক্ষে কর্তৃপক্ষ বরাবারে অনলাইনে আবেদনও করিনি এমন কথা জানালেন পরিদর্শন টিমের সদস্য।

কক্সবাজার জেলার সিভিল সার্জন ডাক্তার মাহমুদুল হক জানান, উখিয়ায় হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিচালনার হালনাগাদ লাইসেন্স নেই বিষয়টি জেলা টাষ্কফোর্স কমিটিকে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় হতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের মাধ্যমে আগামী মাস থেকে অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ নাসরিন জেবিন গণমাধ্যমকে জানান, সিভিল সার্জনের নির্দেশে উখিয়ায় বেসরকারিভাবে গড়ে উঠা ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো পরিদর্শন করেছে তদন্ত টিম। পরিদর্শন রিপোর্ট অনুযায়ী হালনাগাদ তালিকা তৈরি করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, অনেক ক্লিনিক ও হাসপাতাল পরিচালনার জন্য পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন পায়নি। অনেক প্রতিষ্ঠান অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আমরা বিষয়টি মনিটরিং করছি।

পাঠকের মতামত

উখিয়ায় র‍্যাব পরিচয়ে অপহরণ: মূলহোতা ‘সিকদার’ গ্রেফতার

কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী মরাগাছতলা এলাকা থেকে র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা সিকদারকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫। ...

কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট কার্যক্রম চালুর পরিকল্পনা

আগামী জুলাই মাসের শেষে কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক ...

শিশু আইন ২০১৩ নিয়ে কক্সবাজারে কর্মশালা: ন্যায়বিচারে জোর, বাস্তবায়নে গুরুত্ব

“শিশুদের আইনি অধিকার: অভিজ্ঞতা বিনিময় ও পরবর্তী করণীয়” শীর্ষক এক গুরুত্বপূর্ণ কর্মশালা কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ...