প্রকাশিত: ০৩/০৯/২০১৮ ১২:৩৬ পিএম

অনলাইন ডেস্ক – দেখতে অনেকটা গ্রিন টির মতো। মোড়কও অন্যসব কোম্পানির গ্রিন টির মতো।

গ্রিন টির লেভেলে সিঅ্যান্ডএফ-এর মাধ্যমে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টমস পার হচ্ছিল চালানগুলো। ইথিওপিয়া থেকে আসা এই মাদকগুলোতে গ্রিন টির লেভেল লাগিয়ে ইউরোপ, আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়ায় পাচার করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল আন্তর্জাতিক মাদক ব্যবসায়ীরা। তবে সবশেষ চালানে ধরা পড়েছেন মো. নাজিম নামের একজন। গত শুক্রবার বিকালে শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ৪৬৬ কেজি, পরে শান্তিনগর থেকে আরও ৪০০ কেজি খাত উদ্ধার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি)। তবে এরই মধ্যে পার্শ্ববর্তী ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশে ‘খাত’ পাচার করেছে এমন তথ্য পেয়েছে ডিএনসি।

ডিএনসির অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম শিকদার বলেন, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে এই মাদকসহ মো. নাজিম (৪৭) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। ইতিহাদ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে নওয়াহিন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ঠিকানায় মাদকের এই চালানটি আসে। নাজিমের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শান্তিনগরের নওশীন এন্টারপ্রাইজে অভিযান চালিয়ে আরও প্রায় ৪০০ কেজি খাত উদ্ধার করা হয়। জব্দ হওয়া মাদক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
<
উইকিপিডিয়া বলছে, হর্ন অব আফ্রিকা ও আরব উপদ্বীপাঞ্চলে জন্মায় গুল্ম জাতীয় এই মাদক। এর বৈজ্ঞানিক নাম ‘কাথা ইডুলিস’, যদিও স্থানীয়ভাবে একে খাট, কাট, খাত, ঘাট, চাট, অ্যাবিসিনিয়ান টি, সোমালি টি, মিরা, অ্যারাবিয়ান টি ও কাফতা নামেও ডাকা হয়। খাত-এ ‘অ্যালকালোইড ক্যাথিনন’ নামক এক ধরনের উদ্দীপক উপাদান থাকে, যার কারণে উত্তেজনা বাড়ে, ক্ষুধা কমে যায় এবং শরীরের উষ্ণতায় তারতম্য ঘটে। আমেরিকান কোকো পাতা, এশিয়ান পানের মতোই স্থানীয়দের মধ্যে হাজার বছর ধরে এই নেশাদ্রব্যের শুকনো পাতা চিবিয়ে খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। খাত-এর আসক্তি খুব ভয়ঙ্কর। এর কারণে অবসাদ, দৃষ্টিভ্রম, অনিদ্রা, ক্ষুধামন্দাসহ নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। বেশি রস চিবিয়ে নেশা করলে বিপদও মারাত্মক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘দাঁত এবং মাড়িতে ঘা হতে পারে। এ ছাড়াও, ইন্দ্রিয় শক্তি এবং যৌনক্ষমতা হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খাত জীবনী শক্তিও কমিয়ে দেয়। ১৯৮০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) একে মাদকদ্রব্য হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। কানাডা, জার্মানি, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে এটি অবৈধ না হলেও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণযোগ্য। ইসরায়েলে এই উদ্ভিদের পাতা ওষুধ তৈরিতে ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে। তবে মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থা— ডিইএ একে ক্ষতিকারক হিসেবে সতর্ক করেছে। অন্যদিকে আফ্রিকার দেশ জিবুতি, কেনিয়া, উগান্ডা, ইথিওপিয়া, সোমালিয়া এবং ইয়েমেনে এর উৎপাদন, ক্রয়-বিক্রয় এবং অবাধে সেবনের বৈধতা রয়েছে। সোমালিয়ার স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সোমালিল্যান্ডের প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ ‘খাত’-এ আসক্ত। ডিএনসি বলছে, ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবাবায় বসবাসরত জিয়াদ মোহাম্মাদ ইউসুফ এনপিএসের চালানটি এ দেশে পাঠিয়েছেন। ক্রেজি ড্রাগস ইয়াবার পর খাত (এনপিএস-নিউ সাইকোট্রফিক সাবসটেনসেস) সেবনের কিছু সময়ের মধ্যেই মানবদেহে এক ধরনের উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ইয়াবার চেয়েও ভয়ঙ্কর ড্রাগস এই খাত। পানির সঙ্গে মিশিয়ে তরল করে এটি সেবন করা হয়। রাজধানীর অভিজাত এলাকার বখে যাওয়া যুবক-যুবতীদের কাছে খাত এরই মাঝে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ইয়াবার বিকল্প হিসেবেও অনেকে ‘খাত’ সেবন করছে। এটি ‘খ’ ক্যাটাগরির মাদক।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আশা বাংলাদেশ-গাম্বিয়ার

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া। ...

কারামুক্ত হলেন মামুনুল হক

হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক কারামুক্ত হয়েছেন। শুক্রবার (৩ মে) সকাল ...

সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উখিয়ায় হবে উন্মুক্ত কারাগার, শিগগির নির্মাণ শুরু

উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ...