শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর
দফায় দফায় হামলা, মারধর, ঘর ভাংচুর, লুটপাট, হুমকিসহ নানামুখী অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে জন্মদাতা পিতা। এসব নির্যাতনের বিষয়ে ভুক্তভোগী পিতা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করলে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা আবারো পিতাকে হত্যা করতে বহুমুখী ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত রবিবার ও প্রকাশ্য দিবালোকে উপর্যুপরী মারধর পূর্বক হত্যার চেষ্টা চালায় তারা। ভুক্তভোগী পিতা ন্যায় বিচার ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের হস্তক্ষেপ চাইলে স্থানীয় পুলিশ তার বিরুদ্ধে একাধিকবার নোটিশ জারী করে। কিন্তু আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে তারা একবারও শালিসে আসেনি। এ লোমহর্ষক ও অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজার সদরের পোকখালী জম সিকদার পাড়া গ্রামের মৃত ছৈয়দ আহমদের পুত্র মোঃ ইউনুছ (৮২) এর উপর। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইউনুছের ২ পুত্র নুরুল হক (৪২), মোবারক (২৮) দীর্ঘদিন ধরে আলাদা সংসার করে আসছিল। হঠাৎ একদিন চলতি বছরের ২০ মার্চ ব্যবসা করার অযুহাতে বিপুল পরিমাণ টাকা চাইলে পিতা ইউনুছ তার কাছে এত টাকা না থাকায় দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এসময় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথারী দায়ের কোপ দিয়ে মারাত্মক আহত করে। তার শোর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে তারা পালিয়ে যায়। এলাকাবাসীর সহায়তায় উদ্ধার করে ঈদগাঁওর একটি ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেদিন শুধু মারধর নয়, নুরুল হক ও মোবারকের নেতৃত্বে নুরুল হকের পুত্র মোস্তফা কামাল ও মোবারকের স্ত্রী রোজিনা আক্তারসহ আরো কয়েকজন দুর্বৃত্ত নিয়ে যায় ঘরে থাকা নগদ ৪৫ হাজার টাকা, ৩ ভরি ওজনের বিভিন্ন প্রকার স্বর্ণালঙ্কার। ভাংচুর করা হয় শোকেস, আলমিরাসহ হরেক রকম আসবাবপত্র। ঐ ঘটনায় দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে মোঃ ইউনুছ বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর থানায় এজাহার দায়ের করে। ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ঐ এজাহারটি অভিযোগ হিসাবে প্রেরণ করেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা উক্ত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে একাধিকবার নোটিশ জারী করলেও তারা আইনকে তোয়াক্কা না করে শালিসে আসে না। আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ধারাবাহিক অত্যাচারের অংশ হিসাবে চলতি মাসের ১৯ জুন বিকালে পোকখালী মুসলিম বাজারে ডাক্তার নুরুল আলমের ফার্মেসীতে প্রকাশ্য দিবালোকে নুরুল হক ও মোবারকের নেতৃত্বে পিতার উপর হামলা চালায়। স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অপর এক নিকটাত্মীয়ের বাসায় অবস্থান করছে বলে তার আরেক পুত্র ফোরকান জানিয়েছে। পুত্রদ্বয়ের বহুমুখী অত্যাচার থেকে রেহাই পেতে তিনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা কামনা করে অশ্রুসিক্ত নয়নে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে মামলা মোকদ্দমা করলে তাকে হত্যা করা হবে বলে হুমকি দেয়। এসব বিষয়ে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ মিনহাজ মাহমুদের কাছে জানতে চাইলে তিনি অভিযুক্ত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কয়েকবার নোটিশ দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তারপরও শালিসে না আসায় ভুক্তভোগী ইউনুছকে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। অভিযোগের বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নুরুল হকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে প্রথমে জমি সংক্রান্ত ব্যাপার বলে এড়িয়ে যান। উল্লেখ্য উক্ত নুরুল হক ও মোবারকের বিরুদ্ধে এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অস্ত্র ভাড়া, মাদক ব্যবসা, দখল বাজিসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তাদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে এলাকার ২ সহস্রাধিক মানুষ। ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস করে না। কেউ প্রতিবাদ করলে তার উপরও নেমে আসে বর্বর নির্যাতন। তাদেরকে গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় আনতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন এলাকাবাসী।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ায় যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে দুজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) ...
পাঠকের মতামত