
নিজস্ব প্রতিবেদক :
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে হত্যা-নির্যাতন থেকে বাঁচতে সেদেশের রোহিঙ্গারা কক্সবাজারে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের এ আশ্রয়কে ইস্যু করে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে একটি গোষ্ঠী। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
রোহিঙ্গারা যেন রাজধানীতে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক বলেছেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের বৌদ্ধ মন্দিরগুলো বিশেষ নজরদারিতে আনা হয়েছে। এসব স্থানে হামলা চালিয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যেন কেউ সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য এ ব্যবস্থা।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের নির্দিষ্ট জায়গায় রাখা হয়েছে। তারপরও যেন তারা শহর বা অন্য কোনো স্থানে এসে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেননা তাদের দ্বারাও অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, সম্প্রতি রোহিঙ্গাদের নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের গোয়েন্দা সংস্থা রিপোর্ট জমা দেয়। সেখানে রোহিঙ্গাদের নির্দিষ্ট স্থানে রাখা, তাদের নিরাপত্তা দেওয়া, তাদের দ্বারা আইনশৃঙ্খলায় কোন ধরনের প্রভাব পড়বে তার বিস্তারিত উঠে আসে। তারই অংশ হিসেবে সব মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও অতিরিক্ত ডিআইজি, জেলা এসপিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকা, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকায় বিশেষ সতর্কতার মাধ্যমে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এলাকার বৌদ্ধ মন্দির ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্র বলছে, রোহিঙ্গারা সেদেশে সব কিছুই রেখে আসতে বাধ্য হয়েছে। এক কাপড়ে কিংবা খালি হাতে এসেছে বেশিরভাগ। এ কারণে তাদের ভেতর অভাব তীব্র আকারে দেখা দিয়েছে। এ কারণে অনেকের মাঝে শহরে প্রবেশ করার প্রবণতা থাকতে পারে। অফিস, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, কিংবা বাসাবাড়িতে নানাভাবে আশ্রয় নেওয়ার পাশপাশি অপরাধে জড়াতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
রোহিঙ্গারা কোন ধরনের অপরাধে জড়াতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এখন তারা অভাবে আছে। এ কারণে কেউ কেউ অর্থ ধরতে চুরি, ছিনতাই থেকে যেকোনো অপরাধ করতে পারে। এ কারণে পুরো রাজধানীকে বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে।’
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর অত্যাচারের ঘটনায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং হেফাজতে ইসলাম এটিকে ইস্যু হিসেবে নিতে পারে। এজন্য তাদের কর্মসূচিরও পরিকল্পনা রয়েছে। তবে তারা যেন অপ্রীতিকর ঘটনার জন্ম দিতে না পারে সেদিকেও বিশেষভাবে ভাবতে হচ্ছে।
এজন্য সাদা পোশাকের সদস্যরা রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট, আবাসিক এলাকা ও কূটনৈতিক পাড়াসহ বিভিন্ন জায়গায় টহল জোরদার করেছে। রাতের বেলায় থানার অলিগলিতেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশ পথে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। নতুন মুখ দেখলেই তল্লাশি করা হচ্ছে।
পাঠকের মতামত