প্রকাশিত: ২২/০৯/২০১৭ ৯:১২ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১:১১ পিএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে পাঁচ দফা প্রস্তাব তুলে ধরে এই মানবিক সঙ্কট অবসানে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) ভোর পৌনে ছয়টার দিকে দেয়া ভাষণে তিনি এই প্রস্তাব দেন।

জাতিসংঘে নিজের চতুর্দশবার ভাষণ দিতে গিয়ে শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের কথা তুলে ধরে বলেন, “আমার হৃদয় আজ দুঃখে ভারাক্রান্ত। আমার চোখে বারবার ভেসে উঠছে ক্ষুধার্ত, ভীত-সন্ত্রস্ত এবং নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের মুখচ্ছবি।” যারা ‘জাতিগত নিধনে’র শিকার হয়ে আজ নিজ দেশ থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত। অথচ তারা হাজার বছরেরও অধিক সময় যাবত মিয়ানমারে বসবাস করে আসছেন।

গত ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে থাকে। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে প্রচুর রোহিঙ্গা।

পরিস্থিতি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এই মুহূর্তে নিজ ভূখণ্ড হতে জোরপূর্বক বিতাড়িত ৮ লাখেরও অধিক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় ও সুরক্ষা দিয়ে যাচ্ছি। আপনারা সকলেই জানেন যে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে চলমান নৃশংসতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ফলে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থার ভয়াবহ অবনতি ঘটেছে। এই নৃশংসতার হাত থেকে বাঁচার জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। আন্তর্জাতিক আভিবাসন সংস্থার তথ্যমতে গত তিন সপ্তাহে চার লাখ ত্রিশ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত যাওয়া ঠেকানোর জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সীমানা বরাবর স্থলমাইন পুঁতে রাখছে। এতে আমরা ভীষণভাবে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। এ সব মানুষ যাতে নিরাপদে এবং মর্যাদার সঙ্গে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারেন এখনই তার ব্যবস্থা করতে হবে।’

এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী পাঁচ দফা প্রস্তাব উত্থাপন করেন। সেগুলো হলো-প্রথমত, মিয়ানমারে অবিলম্বে এবং চিরতরে সহিংসতা ও জাতিগত নিধন নিঃশর্তে বন্ধ করা;

দ্বিতীয়ত, অনতিবিলম্বে মিয়ানমারে জাতিসংঘ মহাসচিবের নিজস্ব একটি অনুসন্ধানী দল (Fact Finding Mission) প্রেরণ করা;

তৃতীয়ত, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা এবং এ লক্ষ্যে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে সুরক্ষা বলয় (safe zones) গড়ে তোলা;

চতুর্থত, রাখাইন রাজ্য হতে জোরপূর্বক বিতাড়িত সকল রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে তাদের নিজ ঘরবাড়িতে প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা;

পঞ্চমত, কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালার নিঃশর্ত, পূর্ণ এবং দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।

ভাষণের শেষাংশে শেখ হাসিনা স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। আমরা অর্থনৈতিক উন্নতি চাই, মানব ধ্বংস নয়, মানব কল্যাণ চাই।”

পাঠকের মতামত

যাতায়াত সুবিধা বাড়াতে ও ভূমি ব্যবহার কমাতে দেশের সব জেলায় উড়াল সড়কের পরিকল্পনা

টিবিএস দেশের ৬৪টি জেলাকে যুক্ত করতে সারাদেশে উড়াল সড়ক (এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে) নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা ...