প্রকাশিত: ১৬/১১/২০১৭ ৯:৫৪ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১১:০১ এএম

উ্খিয়া নিউজ ডেস্ক::hi
মিয়ানমারের রাখাইনে সেনাসদস্যদের গণহত্যা চালানোর পাহাড়সম প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়াভিত্তিক দুটি পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা। সেনাসদস্যরা মুসলিম সংখ্যালঘুদের গলা কাটা ছাড়াও পুড়িয়ে দেওয়ার মতো অপরাধ করেছে বলে সংস্থা দু’টির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়াম এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়াভিত্তিক ফরটিফাই গ্রুপ বুধবার যৌথভাবে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। গত বছরের ৯ অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এবং এ বছরের ২৫ আগস্ট থেকে ‘ব্যাপক ও পদ্ধতিগত হামলার’ ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে।

‘আমাদের মেরে ফেলার চেষ্টা হয়েছে’ শিরোনামের ৩০ পাতার ওই প্রতিবেদন তৈরিতে ২০০ জনের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংগঠনের কর্মীরা ছাড়াও ঘটনার শিকার বা প্রত্যক্ষদর্শীরা রয়েছেন।

রোহিঙ্গা নিপীড়নের এই অভিযানকে বিশ্বের অনেক নেতাই ‘জাতিগত নিধন’ বলে ইতোমধ্যে আখ্যা দিয়েছেন।

হলোকাস্ট মিউজিয়াম ও ফরটিফাই গ্রুপের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য ও বেসরকারি দুষ্কৃতকারীরা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। এতে জাতিগত নিধনের আলামতও রয়েছে। দুই দফা আক্রমণেই এ সব অপরাধ সংঘটিত হয়েছে।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর পাহাড়সম প্রমাণ রয়েছে বলেও ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়।

গত বছরের অক্টোবরে ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ শুরুর পর রাখাইন রাজ্য থেকে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে জোর করে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। এই সংখ্যা রাখাইনের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা রোহিঙ্গাদের ওপর আকাশ ও ভূমি থেকে গুলি ছুড়েছে। সৈন্য ও বেসামরিক লোকেরা ছুরি দিয়ে রোহিঙ্গা পুরুষ, নারী ও শিশুদের গলা কেটেছে। এমনকি জীবন্ত পোড়ানো হয়েছে রোহিঙ্গাদের। সৈন্যরা নারীদের ধর্ষণ করার পাশাপাশি পুরুষ ও বালকদের গণহারে গ্রেফতার করেছে।

ফরটিফাই গ্রুপ এবং হলোকাস্ট মিউজিয়ামের গবেষকরা রাখাইন এবং বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখেছে, যে এলাকা দিয়েই পালিয়ে এসেছে রোহিঙ্গারা। গত আগস্টের পর তিন গ্রামে গণহত্যার প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেছেন সংস্থা দু’টির গবেষকরা।

তাদের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গণহত্যা শেষে সৈন্যরা মৃতদেহগুলো মাটিতে পুঁতে ফেলেছে। এক হামলায় একশ’র বেশি মানুষকে হত্যারও ঘটনা ঘটেছে।

বিশ্বজুড়ে এই সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জোরালো হলেও মিয়ানমার সেনাবাহিনী বলছে, তারা শুধু রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করেই অভিযান চালাচ্ছে।

প্রসঙ্গত, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনের মিয়ানমার সফরের পরদিনই প্রকাশ করা হলো প্রতিবেদনটি। ওই সফরে মার্কিন মন্ত্রী রাখাইনের বিষয়ে একটি গ্রহণযোগ্য তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন। এর আগে নিজেদের একটি অভ্যন্তরীন প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের হত্যা-নির্যাতনসহ সব অভিযোগ অস্বীকার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া না হলে রাখাইন ও মিয়ানমার জুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে ফরটিফাই গ্রুপ ও হলোকাস্ট মিউজিয়াম।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারে বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের পাশাপাশি এবার গৃহযুদ্ধে যোগ দিল মুসলিমরাও

মিয়ানমারে দীর্ঘ দিন ধরেই জান্তাবিরোধী গৃহযুদ্ধ চলছে। এবার সেই যুদ্ধে প্রথমবারের মতো যোগ দিয়েছে একটি ...

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করেছেন আজহারী

জনপ্রিয় ইসলামি আলোচক মিজানুর রহমান আজহারীকে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন পুলিশ ৪ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ...