মিয়ানমার ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) নেতা আসাদ উল্লাহ। দুর্ধর্ষ এই আরসা নেতা বাংলাদেশি পাসপোর্ট ব্যবহার করে সৌদি আরব যাওয়ার পথে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গ্রেফতার হন।
তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট জব্দ করা হয়। শুধু আরসা নেতা আসাদ উল্লাহ নন, চট্টগ্রামের পাসপোর্ট অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহায়তায় পাসপোর্ট পাচ্ছেন আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা।
গ্রেফতার আসাদ উল্লাহর বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার ঘটনা তদন্ত করছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
এ বিষয়ে গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর-দক্ষিণ) নিহাদ আদনান তাইয়ান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দালালের সহায়তায় ২ লাখ ১০ হাজার টাকায় বাংলাদেশি পাসপোর্ট পাওয়ার কথা জানিয়েছেন আসাদ উল্লাহ।
এনআইডি ও পাসপোর্ট নেওয়ার জন্য তাকে পাসপোর্ট অফিস কিংবা নির্বাচন অফিসে একবারের জন্যও যেতে হয়নি। দালাল চক্রের সদস্যরাই তার সব কাজ করে দিয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আসাদ উল্লাহর পাসপোর্টটি ইস্যু করা হয় চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস থেকে। এ অফিস থেকে আগেও ইস্যু হওয়া বেশ কিছু পাসপোর্ট জব্দ করেছে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। পাঁচলাইশ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট; যার নেতৃত্বে রয়েছেন ওই অফিসের এক কর্মকর্তা।
তার সহযোগী রয়েছেন পাসপোর্ট অফিসের একাধিক কর্মকর্তা, কয়েকজন পুলিশ ও আনসার সদস্য। তারা মাত্র ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের হাতে তুলে দেন বাংলাদেশি পাসপোর্ট। এজন্য আবেদনকারীকে একবারের জন্যও পাসপোর্ট অফিসে যেতে হয় না।
এ সিন্ডিকেটের এক সদস্যের বাসায় আবেদনকারীদের নিয়ে সম্পন্ন করা হয় পাসপোর্ট আবেদনের যাবতীয় কার্যক্রম। পাঁচলাইশ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসকেন্দ্রিক এ চক্রটি টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের এনআইডি এবং জাতীয়তা সনদপত্র নিয়ে দেওয়ার কাজটিও করে।
তাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে এনআইডি দেওয়ার অন্যতম হোতা জয়নাল আবেদীন ও নির্বাচন কমিশনের কয়েকজন কর্মকর্তার।
এতে জড়িত অভিযোগে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মো. আবদুল বাতেনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। ওই অভিযোগ তদন্তে নির্বাচন কমিশনের মহাপরিচালক এ কে এম হুমায়ন কবীরকে তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
পাঁচলাইশ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক তারিক সালমান বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট পাওয়ার সুযোগ নেই। রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট পেতে আমাদের অফিসের কেউ নেপথ্যে কাজ করেছেন কি না তা-ও জানা নেই।
পাঠকের মতামত