উখিয়া নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯/১২/২০২৩ ৭:৪০ এএম

ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান যুদ্ধের পর গাজা ‍উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ পেতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করছে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর অঞ্চলে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের প্যালেস্টাইন অথরিটি (পিএ)। এই পরিকল্পনায় উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসও রয়েছে বলে জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শতায়েহ।

মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ব্লুমবার্গের বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি গাজার যুদ্ধ-পরবর্তী পরিকল্পনা নিয়ে ফিলস্তিনি প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শতায়েহের সঙ্গে দেখা করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মোহাম্মদ শাতায়েহ জানান, গাজা উপত্যকা, পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমের সমন্বয়ে স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধ শেষে গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসকে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) জুনিয়র অংশীদার করার প্রস্তাব দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ‘৭ অক্টোবরের আগের হামাস আর এখনকার হামাস এক নয়। যদি তারা (হামাস) এই প্রস্তাব গ্রহণ করে চুক্তিতে আসতে রাজি থাকে, কেবল তাহলেই তাদের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। আমাদের (পিএলও) অবস্থান থেকে আমরা বলতে পারি, ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বিভাজন থাকা উচিত নয়।’

শতায়েহ আরও বলেন, ইসরায়েল হামাসকে নির্মূল করতে পারবে না। হামাস লেবাননে আছে, সবাই জানে হামাসের নেতৃত্ব কাতারে আছে এবং তারা এখানে (পশ্চিম তীরে) আছে।

স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবিতে আন্দোলনরত রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠীগুলো ১৯৬৪ সালে পিএলও বা পিএ জোট গঠন করে। শুরুর দিকে ইসরায়েলের বিলুপ্তি ও স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে গেলেও পরে ১৯৮৩ সালে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেয় পিএলও। এই স্বীকৃতিদানের কয়েক বছর পর ১৯৮৩ সালে গঠিত হয় সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস। এই গোষ্ঠী সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে ইসরায়েলের বিলুপ্তি ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পক্ষে।

এরপর ২০০৬ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে গাজা উপত্যকা দখল করে হামাস। তারপর থেকে এখনও ক্ষমতাসীন রয়েছে এই গোষ্ঠীটি। হামাসের শীর্ষ নেতাদের অধিকাংশই থাকেন কাতারে, আর মধ্যম সারির নেতারা বৈরুতে অবস্থান করছেন।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি বর্বরোচিত হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। মাঝে হামাসের সঙ্গে এক সপ্তাহব্যাপী মানবিক বিরতির পর গত শুক্রবার থেকে গাজা উপত্যকায় পুনরায় বিমান ও স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।

বৃহস্পতিবার অবরুদ্ধ ওই ভূখণ্ডটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে ১৭ হাজার ১৭৭ জনে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশই শিশু ও নারী। আহত হয়েছেন আরও ৪৬ হাজার মানুষ’।

এই পরিস্থিতিতে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আহ্বানে গাজায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে শুক্রবার বৈঠকে বসছে বিশ্বসংস্থাটির সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সংগঠন নিরাপত্তা পরিষদ। যেখানে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ভোটাভুটি হবে। গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের ঠেকাতে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক থেকে কী সিদ্ধান্ত আসতে পারে তা দেখার বিষয়।

পাঠকের মতামত

স্বাভাবিক পথে সেন্টমার্টিনে যাচ্ছে খাদ্যপণ্য, টেকনাফে ফিরছে যাত্রী

অবশেষে স্বাভাবিক হচ্ছে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে নৌযান চলাচল। দীর্ঘ ৩৩ দিন পর টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে যাতায়াত করছে ...