আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৩/১১/২০২৩ ৬:১২ পিএম

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সাথে দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহীদের তুমুল সংঘর্ষ চলছে। দেশটির কয়েকটি রাজ্যে বিদ্রোহীদের সাথে সামরিক বাহিনীর এই সংঘাতে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। সোমবার মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর একাধিক চৌকিতে হামলা চালিয়েছে জাতিগত সংখ্যালঘু বিদ্রোহীরা। নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে বিদ্রোহীদের এই সংঘর্ষ আরও নতুন দুটি ফ্রন্টে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দা, বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সম্প্রতি সবচেয়ে বড় সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। গত মাসের শেষের দিকে দেশটির জাতিগত সংখ্যালঘু তিনটি গোষ্ঠীর সদস্যরা জান্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে একযোগে সমন্বিত হামলা শুরু করে। ইতোমধ্যে তারা নিরাপত্তা বাহিনীকে হটিয়ে কিছু শহর ও সামরিক চৌকির দখল নিয়েছে।

গত সপ্তাহে দেশটির সামরিক বাহিনীর নিয়োগকৃত প্রেসিডেন্ট বলেছেন, বিদ্রোহ কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হওয়ায় মিয়ানমার ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। দেশটির জেনারেলরা বলছেন, তারা ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

জাতিগত সংখ্যালঘু তিনটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত জোটের সদস্য আরাকান আর্মি (এএ) মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে লড়াই চালিয়ে আসছে। আরাকান আর্মির মুখপাত্র খিন থু খা বলেছেন, রাখাইনের রাথেডাং এবং মিনবিয়া এলাকার মধ্যবর্তী প্রায় ২০০ কিলোমিটার এলাকায় সামরিক বাহিনীর কয়েকটি চৌকি দখলে নিয়েছেন তারা।

তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু চৌকি জয় করেছি এবং আরও কিছু জায়গায় লড়াই চলছে।’’

রাথেডাংয়ের একজন বাসিন্দা বলেন, সোমবার ভোরের দিকে বন্দুকের গুলির শব্দ শোনা গেছে। পরে কয়েক ঘণ্টা ধরে সেখানে বোমা হামলা চালানো হয়েছে। সামরিক বাহিনী এলাকায় প্রবেশের পথ বন্ধ করে দিয়েছে। রাথেডাংয়ের প্রশাসনিক ভবনগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে দেখা গেছে।

ভারতের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের চিন রাজ্যেও নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে বিদ্রোহীদের সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। বিদ্রোহীরা দুটি সামরিক শিবিরে হামলা চালিয়েছে বলে একজন ভারতীয় কর্মকর্তা ও হামলার বিষয়ে অবগত দুটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে।

মিয়ানমার সীমান্তবর্তী মিজোরামের একটি জেলার ডেপুটি কমিশনার জেমস লালরিঞ্চনা বলেছেন, মিয়ানমারে সংঘাত থেকে বাঁচতে প্রায় ৫ হাজার মানুষ ভারতের মিজোরাম রাজ্যে প্রবেশ করেছে।

চিন রাজ্য মিয়ানমারের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বছরের পর বছর ধরে শান্ত ছিল। কিন্তু ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর সেখানকার স্থানীয় হাজার হাজার বাসিন্দা সামরিক প্রশাসনের বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। চলমান সংঘাতের বিষয়ে মন্তব্য জানতে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের একজন মুখপাত্রের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা কম : ইইউ

সামরিক শাসিত মিয়ানমারে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠানোর কোনও পরিকল্পনা নেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের। কারণ এই নির্বাচন ...

‘হামাসকে নিরস্ত্র হতে বাধ্য করা হবে, প্রয়োজনে সহিংসভাবে করব’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, হামাসকে নিরস্ত্র হতে বাধ্য করা হবে। প্রয়োজন হলে ...

রোহিঙ্গাদের জন্য নতুন আন্তর্জাতিক তহবিল তোলার দাবি যুক্তরাষ্ট্রের

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য নতুন আন্তর্জাতিক তহবিলের দাবি তুলেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ...

গাজায় দলে দলে বাড়ি ফিরছে মানুষ

ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বাংলাদেশ সময় ...