ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৭/০৯/২০২৩ ৫:০৯ পিএম

ক্যাডার কম্পোজিশনের সুরক্ষা, পদোন্নতি, পদসৃজন, স্কেল আপগ্রেডেশন ও আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনসহ বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ন্যায্য দাবিসমূহ আদায়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতি, কক্সবাজার জেলা ইউনিট।

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫ টায় কসবাজার প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে ওই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কক্সবাজার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাফফর আহমদ।
লিখিত বক্তব্য তিনি বলেন, প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষাস্তর সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের নবম গ্রেডের উপরে সকল পদ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত। এসব পদে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা বাদে অন্য কারও পদায়নের সুযোগ নেই। দীর্ঘদিন ধরে আমরা শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত পদ থেকে শিক্ষা ক্যাডার বহির্ভুতদের অপসারণের দাবি জানিয়ে আসছি কিন্তু সেটি করা হয়নি। উপরন্তু আমরা লিখিতভাবে আপত্তি জানাবার পরেও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিলভুক্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ৫১২টি পদ শিক্ষা ক্যাডারের তফসিল বহির্ভূত করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়োগবিধি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটি সুস্পষ্টতই শিক্ষা ক্যাডারের অস্তিত্বের উপর আঘাত। আমরা এসকল কর্মকান্ডকে সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা প্রভাবিত করার শামিল মনে করি। শিক্ষা ক্যাডারকে অন্ধকারে রেখে এই বিধি করার এখতিয়ার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নেই। আমরা শিক্ষা ক্যাডারবিরোধী এসকল কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে এই বিধি বাতিলের দাবি করছি।
শিক্ষার রূপান্তরের অন্যতম কারিগর বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তাগণ। তাঁরাই প্রণয়ন করেছেন নতুন শিক্ষাক্রম, এর বাস্তবায়নেও তাঁরাই অন্যতম শক্তি। শিক্ষা ক্যাডারের ১৬ হাজার কর্মকর্তা বর্তমান সরকারের ভিশন-২০৪১ তথা স্মার্ট বাংলাদেশের যা পুরণে একযোগে কাজ করে যাচ্ছে কিন্তু প্রাপ্য অধিকার ও সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কোন কারণ ছাড়াই পদোন্নতি বন্ধ আছে দুই বছর। এই মুহূর্তে শিক্ষা ক্যাডারের পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তার সংখ্যা ৭ হাজারের বেশি। এর মধ্যে অধ্যাপক পদে পদোন্নতিযোগ্য ১২০০ জন, সহযোগী অধ্যাপক পর্যায়ে পদোন্নতিযোগ্য ৩০০০ জন, সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তা আছেন প্রায় ৩০০০ জন। এই কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য সরকারের কোন অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হবে না। সবাই পদোন্নতিযোগ্য পদের বেতন স্কেলের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছে অবস্থান করছেন। ক্যাডার সার্ভিসে শুন্য পদ না থাকলে পদোন্নতি দেয়া যাবে না এমন কোনো বিধান নেই। অথচ, শিক্ষা ক্যাডারকে শূন্য পদের অজুহাতে পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত রাখা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সকল ক্যাডারের জন্য সুপারনিউমারারি পদে পদোন্নতি দিয়ে ক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশনা দিলেও তা পালিত হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের নির্দেশ দিয়েছেন বারবার। কিন্তু সে নির্দেশনা মানা হচ্ছে না।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বর্তমান শিক্ষা ক্যাডার নিয়ন্ত্রিত সরকারি কলেজসমূহে উচ্চ মাধ্যমিক এবং উচ্চশিক্ষা স্তরে প্রায় ৫০ লক্ষ শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষকের পদ সৃজন অপরিহার্য। অথচ সরকারি কলেজসহ শিক্ষাপ্রশাসনে কর্মরত শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তার সংখ্যা মাত্র ১৬ হাজার। শিক্ষার মতো এত গুরুত্বপূর্ণ একটি খাতে ১২৪৪৪টি পদ সৃজনের প্রস্তাব আটকে আছে দীর্ঘ ৯ বছর। শিক্ষার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরে ৪র্থ গ্রেডের উপর কোন পদ নেই। অন্য ক্যাডার কর্মকর্তারা পঞ্চম গ্রেড হতে তৃতীয় গ্রেডে পদোন্নতি পান। কিন্তু শিক্ষা ক্যাডারে সর্বোচ্চ পদ অধ্যাপক পদটি চতুর্থ গ্রেড হওয়ায় শিক্ষা ক্যাডারের পঞ্চম গ্রেড হতে তৃতীয় গ্রেডে পদোন্নতির সুযোগ নেই। চতুর্থ গ্রেডেই আটকে থাকছেন। অধ্যাপক পদটি তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত করা এবং আনুপাতিক হারে প্রথন ২য় গ্রেডের পদ সৃষ্টি করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ২০১৫ সালে নতুন পে-স্কেলে সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১-কে অধ্যাপকদের ৩য় গ্রেডে (সিলেকশন গ্রেড) উন্নীত হওয়ার সুযোগ রহিত করার সে তাঁদের ৪র্থ গ্রেডে অবনমন ঘটে। বিষয়টি সেসময় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনা হলে তিনি তৎকালীন অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি কমিটি ও মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে আরেকটি কমিটি গঠন করে তার সাথে নতুন পে-স্কেলে সমস্যাসমূহ সমাধানের নির্দেশ দেন। এ কমিটিসমূহের সুপারিশে শিক্ষা ক্যাডারের অধ্যাপক পদমর্যাদাসম্পন্ন পদসমূহের মধ্যে ৪২৯টি পদ তৃতীয় গ্রেতে উন্নীত করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। কিন্তু সম্পূর্ণ অজ্ঞাত কারণে মাত্র ৯৮টি পদ ৩য় গ্রেডে উন্নীত করতে প্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্মতি দেয়। এক্ষেত্রেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা কার্যকর করা হয়নি।
শিক্ষা ক্যাডারের ন্যায্য দাবি পূরণে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আগামী ১০, ১১ ও ১২ অক্টোবর টানা তিন দিনের কর্মবিরতি পালন করা হবে বলেও জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মলনে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা কক্সবাজার জেলা ইউনিট সভাপতি প্রফেসর মোহাম্মদ সোলায়মান, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুবীর দাশ, সহকারী অধ্যাপক (গণিত), জেলা ইউনিটের উপদেষ্টা অরুণ বিকাশ বড়ুয়া, সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (ইতিহাস), যুগ্ম-সম্পাদক মোজাফফর আহমেদ, সহকারী অধ্যাপক (রাষ্ট্রবিজ্ঞান), কক্সবাজার কলেজ ইউনিট এর সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবুল মনসুর, সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (রাষ্ট্রবিজ্ঞান), যুগ্ন-সম্পাদক ড. অলক চক্রবর্ত্তী, সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (ইংরেজি), প্রাক্তন জেলা সম্পাদক মুফিদুল আলম, সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (পদার্থবিদ্যা) মোহাম্মদ অহিদুল ইসলাম, সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (রসায়ন), মোহাম্মদ শাহ আলম, সহকারী অধ্যাপক (অর্থনীতি), কক্সবাজার সরকারি মহিলা কলেজ

পাঠকের মতামত

বদি যদি আমাকে সন্তান হিসেবে মেনে নেন, তাহলে মনোনয়ন প্রত্যাহার করবো

কক্সবাজার-৪ (টেকনাফ-উখিয়া) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও ফোরামের গাড়ির ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও ফোরামের একটি গাড়ির (চট্টমেট্রো চ-১১৮৬৫৯) ধাক্কায় দু’বছরের এক রোহিঙ্গা শিশুর ...