চাঁদপুর প্রতিনিধি : চাঁদপুরের নয় বছরের ছোট্ট এক শিশু। অভাবের তাড়নায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতে গিয়েছিল গাজীপুরে। বাড়ি যেতে তার খুব মন চাইত। গৃহকর্তা-গৃহকর্ত্রীর কাছে এ নিয়ে আবদার করত। আর এই আবদারের ‘অপরাধে’ তাকে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত ও ক্ষত নিয়ে সে এখন চাঁদপুরের হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
হাইমচর থানার পুলিশ ও শিশুটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাঁচ সন্তানকে রেখে শিশুটির বাবা অন্যত্র চলে গেছেন। পরে মা ফিরোজা বেগম শিশুটিকে মানুষের বাসায় কাজের জন্য দেন। এক বছর আগে হাইমচরের মোস্তফা সরদার নামের একজন শিশুটিকে গাজীপুরের জয়দেবপুরে জনৈক ওমর ফারুক-মনি বেগম দম্পতির বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে নিয়ে যান। সম্প্রতি শিশুটি বাড়ি যাওয়ার জন্য গৃহকর্তা-গৃহকর্ত্রীর কাছে আবদার করে। এ কারণে তাঁরা শিশুটিকে প্রচ- মারধর ও নির্যাতন করেন।
শিশুটি যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, সেই হাইমচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক দীপন দে বলেন, টাইলসের সঙ্গে মাথা লাগিয়ে নির্যাতন করায় শিশুটির মাথায় বেশ ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে গরম খুন্তি ও বিদ্যুতের তারের আঘাতে ক্ষত হয়ে গেছে। তার পুরোপুরি সুস্থ হতে ১৫ থেকে ২০ দিন লাগবে।
পুলিশ জানায়, খবর পেয়ে মোস্তফা সরদার শিশুটিকে ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে গাজীপুরের ওই বাড়ি থেকে হাইমচরে নিয়ে যান। পরে শিশুটির অবস্থা দেখে স্থানীয় লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। আর মোস্তফা সরদারকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
শিশুটির মা ফিরোজা বেগমের দাবি, ভালো টাকাপয়সা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তাঁর মেয়েকে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন মারধর করে এমন খারাপ অবস্থা করেছে।
হাইমচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর বলেন, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামছুন্নাহারের নির্দেশে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটির প্রতিবেশী হাইমচর এলাকার শাহজাহান ভূঁইয়া বাদী হয়ে তিনজনকে আসামি করে শিশু নির্যাতন দমন আইনে হাইমচর থানায় মামলা করেছেন।নির্যাতনের ব্যাপারে বক্তব্য জানতে ওমর ফারুক ও তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, ওমর ফারুক ঢাকা বিমানবন্দরে চাকরি করেন। তাঁর স্ত্রী মনি বেগম একজন স্কুলশিক্ষিকা।
পাঠকের মতামত