প্রকাশিত: ২৬/০২/২০১৭ ১০:২৭ এএম

আবদুল্লাহ আল আজিজ::
সড়ক দুর্ঘটনা প্রাকৃতিক নয়, মানবসৃষ্ট
কারণ। সে হিসেবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতরা পরোক্ষভাবে হত্যারই শিকার হন। কিন্তু হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনার জনকাঙ্খিত উদ্যোগ নেই বাংলাদেশে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনা না কমে জ্যামিতিক হারেই বেড়ে চলেছে। এমন কোনো দিন নেই, যে দিন সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে না, যেদিন সড়ক দুর্ঘটনায় সাধারণ মানুষ আহত-নিহত হচ্ছে না। রাস্তায় নামলেই মৃত্যুদূত তাড়া করছে যাত্রী বা পথচারীকে। প্রতিদিনই সাধারণ মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় রক্তাক্ত হচ্ছেন, ছিন্নভিন্ন লাশে পরিণত হচ্ছেন। দেশের সড়ক-মহাসড়কগুলো এখন মৃত্যুউপত্যকায় পরিণত হয়েছে।

বিভিন্ন কারণে সড়ক দূর্ঘটনা বাড়ছে, এগুলো হলো-বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালালে যানবাহনের মালিকও অনেক খুশি। কারণ, যত তাড়াতাড়ি একটি ট্রিপ শেষ করা যায় তত তাড়াতাড়ি আরেকটা ট্রিপ পাওয়া যাবে, তাতে ট্রিপও বাড়বে। ট্রিপ বাড়লে মালিক-চালক সবারই আয় বাড়বে। এ জন্যই চালকরা উৎসাহী হয়ে গাড়ির গতি বাড়ান এবং দুর্ঘটনা ঘটান। তাছাড়া ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে অনুসরণ না করা, আনফিট গাড়ি চলাচল বন্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগের অভাব, নিয়ম ভঙ্গ করে ওভারলোডিং ও ওভারটেকিং করার প্রবণতা, চালকদের দীর্ঘক্ষণ বিরামহীনভাবে গাড়ি চালানো, অদক্ষ ও লাইসেন্সবিহীন চালক নিয়োগ, এবং ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক ও সড়কের বেহালদশা, প্রয়োজনীয় সংস্কার নেই। সংস্কার করা হলেও দুর্নীতির কারণে তা যথাযথ হয় না। এইছাড়া দুর্ঘটনায় পর মামলা নিতে গড়িমসি, প্রভাব বিস্তার ও অনিয়ম হয়। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় না। অধিকাংশ দুর্ঘটনায় দোষী ব্যক্তিরা পার পেয়ে যায় আইনের ফাঁক গলে।

এসব চালকরা একটু সচেতন হলে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর যে স্তূপ সৃষ্টি হচ্ছে তা কমিয়ে আনা সম্ভব। এসব দুর্ঘটনায় ঘাতক চালকদের পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশও কম দায়ী নয়। সরকার গাড়ির গতিবেগ মেপে অতিরিক্ত গতির জন্য শাস্তি নিশ্চিত করতে হাইওয়ে পুলিশকে স্পিডগান সরবরাহ করেছে। কিন্তু বিভিন্ন মহলের অভিযোগ হচ্ছে, পুলিশ সেটা ব্যবহার করে না। যদিও মাঝে মধ্যে অনুমানের উপর কিছু বেপরোয়া গতির গাড়ি আটক করে, তারপর চালকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধের লক্ষ্যে মোটরযান চালকদের লাইসেন্স প্রদানে কিছুটা শক্ত প্রক্রিয়া আরোপ করা হয়েছে, যদিও তা যথেষ্ট নয়। বাস, ট্রাক ইত্যাদি ভারী মোটরযানের চালকদের লাইসেন্স প্রদানের প্রক্রিয়ায় আরও কঠোর করা প্রয়োজন। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ছাড়াই গাড়ি চালানোর বিষয়েও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। চালকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে।

সড়ক দুর্ঘটনার কারণ চিহ্নিত করে যুৎসই সমাধান-উদ্যোগের কথা সরকারের পক্ষ থেকে প্রায়শই বলা হলেও বাস্তবে এ বিষয়ে কোনো তৎপরতা নেই। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের কাছে সড়ক দুর্ঘটনায় জীবনের অপচয় যেন নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ কর্তৃপক্ষ কার্যকর উদ্যোগ নিলে সড়ক দুর্ঘটনা ও দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুও মিছিল রোধ করা সম্ভব।

রাষ্ট্র যদি ইচ্ছা করে তাহলে অনেক কিছুই সম্ভব। নিরাপদ সড়কের জন্য কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকেই এবং এর কোনো বিকল্প নেই।

পাঠকের মতামত

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যশোরে ৮.৮ ডিগ্রি, টেকনাফে সর্বোচ্চ ৩১

শীতের তীব্রতা বাড়ায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে হাড়কাঁপানো ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যশোরে দেশের ...

১৩ রোহিঙ্গার জন্মনিবন্ধন জালিয়াতি, ইউপি উদ্যোক্তার স্বামী কারাগারে

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ভুয়া সিল–স্বাক্ষর ব্যবহার করে ১৩ জন রোহিঙ্গা নাগরিকের জন্মনিবন্ধন তৈরির ...

খেলাভিত্তিক শিক্ষায় ব্র্যাকের তথ্য বিনিময় অনুষ্ঠান

শিশুদের খেলাভিত্তিক শেখা, অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ও মনোসামাজিক বিকাশ নিশ্চিতে ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ...

১২ ফেব্রুয়ারি ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত অনুমতি ছাড়া ওয়াজ মাহফিল নিষিদ্ধ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ধর্মীয় প্রচার কার্যক্রমে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। ...