প্রকাশিত: ২৯/০৭/২০২২ ৮:৪১ এএম

ইমাম খাইর, কক্সবাজার
কক্সবাজারের বনভূমির অবৈধ দখলদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-৫ এর বিচারক আসাদ উদ্দিন মোঃ আসিফ।

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) নিজের আদালতে মামলাটি করেছেন তিনি। যার মিস মামলা নং-০১/২০২২।

বনভূমি দখলবাজিতে জড়িত ব্যক্তিদের নাম ঠিকানা, সুনির্দিষ্ট ঘটনা বর্ণনা এবং অপরাধ বিষয়ে পরিপূর্ণ প্রতিবেদন আগামী ৩১ আগষ্টের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগীয় কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেছেন বিচারক।

আদেশের কপি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বন সংরক্ষক ও দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তার বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে।

গত ২০ জুলাই স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক দৈনন্দিনের প্রতিবেদন “দক্ষিণ বন বিভাগের সুনাম ক্ষুণ্ন করছে উখিয়া রেঞ্জ। বনভূমি ধ্বস করে চলছে স্থাপনা নির্মাণ। টাকায় ম্যানেজ বন বিভাগ, নেই অভিযান” আদালতের নজরে আসে। এরপর স্বপ্রণোদিত মামলাটি করেছেন বিচারক।

মামলার আদেশে বলা হয়েছে, “বনভূমি জীব বৈচিত্র ও প্রাকৃতিক সম্পদের আধার। একটি এলাকায় বনভূমি কমে গেলে সেখানে মরুকরণ, ভূমিধস ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় বেড়ে যায়। দেশের মোট ভূখণ্ডের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকতে হয়। দেশের মোট বনভূমির একটি উল্লেখযোগ্য স্থান হলো কক্সবাজার।

কক্সবাজারে প্রতিদিন বনভূমির জায়গা দখল করে বন উজাড় হচ্ছে। বন আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত এবং রক্ষিত বনে কোনরূপ অনধিকার প্রবেশ করে বনের কোন ক্ষতি করা যাবে না। এর মধ্যে প্রতিবছরই বন উজাড় হচ্ছে। বনের জমিতে স্থাপনা গড়ে তোলা সম্পূর্ণ বেআইনী। বন রক্ষায় সবার আগে সরকার তথা বন বিভাগকে এগিয়ে আসতে হবে।

কক্সবাজার জেলার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের আওতাধীন সদর ও ওয়ালা বিট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষিত এলাকা। এমন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি/গণ/গোষ্ঠী বনভূমি এবং গাছগাছালি ধ্বংস এবং উজাড় করে উক্ত এলাকাকে সংকটাপন্ন এলাকায় পরিণত করছে যা কক্সবাজার তথা সমগ্র বাংলাদেশের জন্য হুমকিস্বরূপ।

এমতাবস্থায়, পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের উখিয়া রেঞ্জের আওতাধীন সদর ও ওয়ালা বিটসহ একই রেঞ্জের অন্যান্য বিট বন বিভাগের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে চাষাবাদ, পাকা ভবন নির্মাণ, বাড়ি নির্মাণ করে ভাড়া প্রদান, পিএফ জমির বাগান উজাড় করে বহুতল ভবন নির্মাণ, বনভূমির জায়গা দখল পূর্বক তা বিক্রয় করে উল্লিখিত অপরাধ সংঘটনকারী ব্যক্তি/গণ/গোষ্ঠী বন বিভাগের নির্দিষ্ট কোন জায়গায় কি রূপ অপরাধ করেছে/করছে এবং এরূপ অপরাধ সংঘটনে বন বিভাগের কোন কর্মকর্তা/কর্মচারী জড়িত রয়েছে কি না তদন্ত করা একান্ত আবশ্যক।

ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ১৯০ (১)(গ) মতে, অত্রাদালত উক্ত ঘটনা স্বপ্রণোদিত হয়ে আমলে নেয়ার এখতিয়ার রাখেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. সারওয়ার আলম বলেন, পত্রিকার সংবাদটি চোখে পড়ে নি। পড়লে বুঝতে পারতাম। তবু আদালতের নির্দেশনা মতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

তিনি বলেন, বনভূমি দখলদারচক্রের বিরুদ্ধে আমাদের কঠোর অবস্থান। কোন ছাড় নাই। নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে বন উজাড়কারী ও দখলবাজ চক্রের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় অনেক বন মামলার আসামির সাজাও দিয়েছেন বিচারক।

পাঠকের মতামত

সড়ক দুর্ঘটনায় ফের নিহত ১, প্রতিবাদে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়ার চুনতি এলাকায় যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে ধাক্কা খায়। ...

সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি নিজেকেও পরিবর্তন করতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ‘পরিবেশ সুরক্ষায় সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তিরও ...

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে প্রাণ গেল বউ-শাশুড়িসহ একই পরিবারের ৩ জনের

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চন্দনাইশের বাস ও সিএনজি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের বউ-শাশুড়িসহ তিনজন নিহত ...