প্রকাশিত: ০১/০৯/২০১৬ ৮:১২ পিএম

mail.google.comএম. বশিরুল আলম, লামাঃ
লামার পাহাড়ে রাবার চাষে ধ্বস নেমেছে। সরকার থেকে জমি লীজ নিয়ে এবং নিজ উদ্যোগে ক্রয় করে গড়ে উঠেছে শত শত রাবার বাগান।  সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা পেলে এসকল বাগানের উৎপাদিত রাবার দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানী করা হচ্ছে বলে রাবার মালিকরা জানিয়েছেন।

পার্বত্য অঞ্চলে ১৯৬০ সালে রাবার চাষ শুরু হওয়ার পর থেকে এই পর্যন্ত বাংলাদেশে বিএফআইডিসি ব্যাক্তি মালিকানা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় প্রায় লক্ষাধিক একর জমিতে রাবার চাষ হচ্ছে যা দেশের সিংহভাগ প্রয়োজন মিটায়।

জানা গেছে, রাবার একটি পরিবেশ বান্ধব অর্থকরী ফসল। রাবার গাছ কষ দেওয়া ছাড়াও পরিবেশ থেকে বছরে ১৪৪.৫ কেজি কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়তা করে। প্রতিটি রাবার বাগান সরকার ২৫ একর করে প্লট ৪০ বছরের জন্য লিজ দেওয়ায় বিভিন্ন ব্যাংক হতে সহজলভ্য ঋণ নিয়ে সৃজিত বাগানের মাধ্যমে একদশক আগে স্বনির্ভর হয়েছিল অনেকে। ২৫ একরের একটি বাগানে কর্মকর্তা ও কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় ২৫ জনের বাৎসরিক কর্ম সৃষ্টি হয়।

বর্তমান সরকার রাবারের গুরুত্ব উপলব্ধি করে রাবার চাষের ৫৩ বছর পরে “রাবার চাষ ও রাবার শিল্পের সার্বিক বিকাশ এবং উন্নয়নের ” লক্ষ্যে ২০১৩ সালে ৩০শে এপ্রিল সংসদে ১৯ নং আইনের মাধ্যমে রাবার বোর্ড প্রতিষ্ঠা করেন। বিশ্ব বাজারে রাবারের দর পতনের সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অবাধে বিপুল পরিমান রাবার আমদানি করে দেশের উৎপাদিত রাবারের দাম নি¤œ পর্যায়ে নামিয়ে এনেছে। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় ৩৫০/৪০০ টাকার রাবার বর্তমানে ১০০/১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যাতে করে হুমকির মুখে পড়েছে রাবার শিল্প। অতিশীঘ্রই আমদানি বন্ধ করে ধ্বংসম্মোখ রাবার শিল্পকে বাঁচানোর আবেদন জানালেন স্থানীয় রাবার বাগান মালিকরা। তা না হলে পথে বসার উপক্রম হয়ে পড়বে এবং হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়বে।

বান্দরবানের লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাতে ব্যাপক হারে রাবার চাষ হয়। রাবার বাগান অত্র অঞ্চলের জলবায়ু ও পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। বাগান পরিচর্যা, রাবার কষ সংগ্রহ, রাবার প্রক্রিয়াজাতকরণ সহ বাগান পরিষ্কারের কাজে নারী পুরুষ হাজার শ্রমজীবি মানুষের কর্মসংস্থান এই শিল্পের মাধ্যমে। বাগান থেকে আহরিত রাবার কষ যখন প্রক্রিয়াজাত করে রোদে শুকাতে দেয়া হয় তখন সাদা এই রাবার সবার মন কেড়ে নেয়। রাবার চাষীরা বলেন এটা রাবার নয় সাদা সোনা। আমাদের ভাগ্য পরিবর্তনের অন্যতম মাধ্যম।

বান্দরবানে রাবার চাষ ও তার সম্ভাবনার বিষয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য ফাতেমা পারুল’র সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে  যারা প্রকৃত রাবার চাষী তাদের ব্যতীত অন্যদের রাবার প্লট বাতিল করা হয়েছে। সরকার কর্তৃক রাবার চাষীদের প্রদত্ত সকল সুযোগ সুবিধা তাদের দৌড়গোড়ায় পৌছে দিতে সরকার বদ্ধপরিকর। তিনি রাবারের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি শ্রমিকদের বেতন-ভাতাও যেন বৃদ্ধি করা হয় সে বিষয়ে রাবার মালিকদের লক্ষ্য রাখা অবশ্যই প্রয়োজন রয়েছে বলে জানান। বাংলাদেশ রাবার বাগান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জাকের হোসেন মুজুমদার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাবার একটি অতি সম্ভাবনাময় কৃষি ফসল। সরকার রাবার বোর্ড প্রতিষ্ঠা করলেও অর্থবল ও লোকবল না থাকায় তেমন কোন কার্যক্রম  নেই। দ্রুত রাবার বোর্ডকে সচল করে ধ্বংসের মুখে পতিত রাবার খাতকে পুনরুদ্ধার করতে সরকারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

পাঠকের মতামত

রামুর ফতেখাঁরকুলে উপ-নির্বাচনে প্রতীক পেয়ে প্রচারনায় ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থী

রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের উপ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধি ৩ প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্ধ দেয়া ...

টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর মনিরুজ্জামানের সম্পদ জব্দ দুদকের মামলা

টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর মো. মনিরুজ্জামানের সম্পদ জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কক্সবাজার জ্যেষ্ঠ স্পেশাল ...