
ঠাকুরগাঁও: অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে আওয়ামী লীগকে আবারো আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আলোচনায় বসলে ছাড় দিতে হবে, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আর সেই নির্বাচন সুষ্ঠু হলেই তাদের গদি ছেড়ে বঙ্গোপসাগর যেতে হবে। এ জন্যই তারা বসতে রাজী হচ্ছেনা।
রবিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভেলাজান উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ভেলাজান ইউনিয়ন ছাত্রদল আয়োজিত ছাত্র গণসমাবেশ ও ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এ দেশের অনেক ক্ষতি আপনারা করেছেন। আর ক্ষতি না করে, জনগণের অধিকারকে কেড়ে না নিয়ে আপনারা আসুন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কীভাবে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায় তার ব্যবস্থা করেন। আমরা বসতে রাজি আছি। আমরা বারবার বসার কথা বলছি। আসুন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার মাধ্যমে আমরা সব ঠিক করি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওনারা সংলাপে বসতে রাজি না, কারণ বসলেই ছাড় দিতে হবে। ছাড় দিলেই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। আর সেই নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে দিলেই গদি ছেড়ে বঙ্গোপসাগর যেতে হবে। এ জন্যই তারা বসতে রাজী হচ্ছেনা।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘৫ জানুয়ারির যেমন নির্বাচন বর্জন করেছিলেন, ঠিক তেমনি আগামী দিনের নির্বাচন হলে ভোট রক্ষা করতে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। আমাদের ভোট কাউকে নিতে দেব না।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতন প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই নির্মম অত্যাচার জঘন্য। থানায় নিয়ে পায়ে গুলি করে দেয়। হাত-পা ঝুলায়ে অত্যাচার করে। তারপরও একটা লোককেও বিএনপি থেকে সরাইতে পারে নাই।’
আন্দোলন করতে না পারা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের কোথাও মিটিং করতে দেয় না। আমাদের দেশনেত্রীকে বাইর হতে দেয় না। ঢাকাতে কোনো মিটিও করতে দেয় না। আর মিটিং করবেন কি? ওয়াজ-মাহফিলগুলোও তো আজকাল করতে দেয় না। বলে আরো কী কী পারমিশন লাগবে, কার কার লাগবে।’
ঘুষ দিয়ে চাকরি করা প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চাকরি? পুলিশের কনস্টেবলের চাকরি নেয়ার জন্য নাকি ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দিতে হয়। স্কুলের পিয়নের জন্য নাকি চার-পাঁচ, নয়-দশ লাখ পর্যন্ত দিতে হয়। তো মানুষ যাবে কোথায়? ভিটাবাড়ি বিক্রি করে ফেলতেছে। এই তো এদের বাংলাদেশ। এটা নাকি উন্নয়নের রোল মডেল। এটা উন্নয়নের রোল মডেল নয়- এটা হচ্ছে হত্যা, নির্যাতন, নিপীড়নের রোল মডেল। এরা একদলীয় শাসন কায়েম করতে চায়।’
‘জনগণের বিরুদ্ধে যে যাবে, মানুষের বিরুদ্ধে যে যাবে সে কোনো দিন টিকে থাকতে পারবে না। আজকে আওয়ামী লীগ জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। জনগণের প্রতিপক্ষ হয়েছে।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁও আসে, চিটাগাং যায়। অমুকখানে যায়। তিনদিন পর রাস্তা ভেঙে যাচ্ছে। আর ওদের সেতুমন্ত্রী বলে, সব সুন্দর কোনো অসুবিধা নাই। সব ঠিক আছে। মানুষ তো বোকা না।’
এসময় জেলা ও সদর উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পাঠকের মতামত