প্রকাশিত: ১৯/১১/২০১৬ ৭:১৪ এএম

1dbe07271c6545145c17e6719b861c82-582ee2bf9dca1নিরপেক্ষ সরকারের দাবিও ছেড়ে দিয়েছেন খালেদা জিয়া? খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক ছেড়ে নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে এসেছিলেন। আজকের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি কি সে দাবি থেকেও সরে এসেছেন? বিশ্লেষকরা বলেছেন, এখনও কোনো মন্তব্য করার সময় না এলেও অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে তিনি এখন শুধু স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন পেলেই নির্বাচনে অংশ নিতে চান।

বিশ্লেষকরা বলছেন: বিএনপির সামনে নির্বাচনে আসা ছাড়া বিকল্প নেই। তবে, সরকারেরও দায়িত্ব রয়েছে সুষ্ঠ নির্বাচনের পরিস্থিতি সৃষ্ঠি করার। তবে তার আগে একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন প্রয়োজন বলে জানান তারা।

শুক্রবার বিকালে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে ৭ দফা এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনসহ নানা প্রস্তাব তুলে ধরেছেন।

একটা সময় বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিলো-তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে না আনলে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। পরবর্তীতে সে দাবি থেকে সরে এসে তারা দাবি তোলে- নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের। কিন্তু বিএনপি নেত্রীর আজকের বক্তব্যে অনেকটাই পরিষ্কার নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার নয়, আপাতত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন চাইছে বিএনপি।

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সভাপতি বশির আহমেদ চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন: এখনও এ বিষয়ে কথা বলার সময় আসেনি। তবে, আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জিইয়ে রাখবে বিএনপি।

বশির আহমেদ
বশির আহমেদ

তিনি আরও বলেন, আমার মনে হচ্ছে শেষ পর্যন্ত সেটা সম্ভব না হলে বর্তমান সরকারের অধিনেই নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি। সেজন্য স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশনের ওপর তারা জোর দিচ্ছে। আর এটা শুধু তাদের চাওয়া নয়, দেশের সকলেই চায় একটি  স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এমরান হুসাইনও প্রায় একইরকম সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়ে বলেন,‘ এখন বিষয়টা পরিষ্কার- বিএনপির নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি পূরণ হলেও নির্বাচনে আসবে, না হলেও আসবে। বিএনপি এখন সম্পূর্ণ ভাবে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাদের আবার গণতান্ত্রিক ধারায় ফিরতে হলে নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিকল্প নেই।

ড. এমরান আরও বলেন, গেল নির্বাচনে না এসে তারা  ভুল করেছে। এবার তারা চাইবে-ক্ষমতায় না আসতে পারলেও কিছু সংখ্যক আসনে জয়ী হয়ে সংসদে আসার। তাতে করে তারা অন্তত রাস্তায় গলা না ফাটিয়ে সংসদে গিয়ে দাবি তুলে ধরার সুযোগ পাবে। তাই জোর দিয়ে বলা যায়, দাবি পূরণ হোক আর না হোক নির্বাচনে তারা আসছেই।

amran
ড. এমরান হুসাইন

বেগম জিয়া প্রস্তাবিত নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে ৭ দফা এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ সংশোধনের বিষয়ে বশির আহমেদ বলেন: সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব একেবারেই অবাস্তব। আমরা ইতিপূর্বে কী দেখেছি- কোনো সরকার যদি নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে কালক্ষেপণের চেষ্ঠা করে, তখন সকল দলকে ডেকে আলোচনার কথা বলে। আমি মনে করি বেগম জিয়ার এ প্রস্তাব এখন একেবারেই অবাস্তব। কেননা, নির্বাচন কমিশন গঠনে সময় খুব একটা বেশি নেই। আর তিন মাসের মতো সময় থাকতে পারে।

তবে বিএনপি যেটাই বলুক না কেনো শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে সরকারকে সবচেয়ে বেশি উদ্যোগি হতে হবে বলে মনে করছেন ড. এমরান।

চ্যানেল আই অনলাইনকে তিনি বলেন: রাজনৈতিক দলগুলোর অবশ্যই দাবি দাওয়া থাকবে। শুধু রাজনৈতিক দল কেনো? সকলেরই চাওয়া একটি স্বাধীন, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে সরকারকেই বড় ভূমিকার রাখতে হবে। কেননা, নির্বাচনকে স্বচ্ছ-নিরপেক্ষ ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করতে সবার আগে সরকারকেই উদ্যোগী হতে হবে। এছাড়া, বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসলে দেশ ও দেশেই বাইরে সরকারের গ্রহণ যোগ্যতা থাকবে না।

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। বর্তমানে নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ক কোনো আইন নেই। শুধুমাত্র সংবিধানে বলা আছে, প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন। এরআগে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের উদ্যোগে একটি কমিটির মাধ্যমে বর্তমান কমিশন গঠন করা হয়েছিল। মেয়াদের শেষ হওয়ার কারণে এখন আবার নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের আলোচনা শুরু হয়েছে।

পাঠকের মতামত

ইউসিবি ব্যাংকের ২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাত

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বিদেশে অঢেল সম্পত্তির প্রতিবেদন হয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। রাজনৈতিক পরিচয়ের পাশাপাশি ইউনাইটেড ...

ছাত্র-সংগঠনগুলোর ঐক্যে ফাটল, দুষছেন একে-অপরকে

জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে দলমত নির্বিশেষে রাজপথে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। রাজনৈতিক মতাদর্শে ভিন্নতা ...