প্রকাশিত: ২৭/০২/২০১৭ ৯:১৭ এএম

উখিয়া নিউজ ডটকম::
কক্সবাজারের সর্বদক্ষিণে মিয়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন ২৬১ দশমিক ৮০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের উখিয়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে প্রবহমান প্রায় ১৩টি খাল শুকিয়ে মরুতে পরিণত হয়েছে। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য বঙ্গোপসাগরের মোহনায় অবসি’ত রেজুখাল অন্যতম। নাব্যতা হারিয়ে খালগুলো পানিশূণ্য হয়ে পড়ার কারণে বোরোসহ রবিশস্য উৎপাদন নিয়ে কৃষকদের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাছাড়া বেগুন, মরিচ, ভেন্ডি, শিম, ফুলকপি, বাধাঁকপিসহ বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজি-আবাদ করা হয়েছে খালের পাড়ে।
কৃষকদের অভিমত, খালের পানি দিয়ে তারা শাক-সবজি আবাদ করে পরিবারের চাহিদা পূরণ করবে। উদ্বৃত্ত তরিতরকারি বাজারজাত করবে। রেজুখালের পাড়ে বসবাসরত কৃষক শামশুল আলম (৬০), জসিম উদ্দিন (৪৫) জানান, বিভিন্ন স’ানে পাহাড় কাটা, মাটি-বালির পলি জমে রেজুখাল ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে জোয়ার-ভাটা হচ্ছে না। যে কারণে খালের উভয় পাশে বসবাসরত পরিবারগুলো তাদের আবাদ করা বোরোসহ শাক-সবজি বাঁচাতে পারবে কিনা তা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়েছে। অনেকে অগভীর নলকূপ স’াপন করেও বিফল হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স’ানীয় কৃষিবিদ জামাল উদ্দিন জানান, এ উপজেলার খালগুলো কখনো খনন করা হয়নি। উপরন’ খাল-ছড়া দখল করে অবৈধ স’াপনা নির্মাণসহ পাহাড় কাটা মাটি ও বালিতে খালগুলো নাব্যতা হারিয়ে ফেলার কারণে শুষ্ক মৌসুমে খালগুলো শুকিয়ে যায়। বর্ষা মৌসুমে পানিপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হওয়ায় জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে খালের দুপারে বসবাসরত অসংখ্য পরিবারকে পোহাতে হয় নানা সমস্যা।
স’ানীয় প্রবীণ ব্যক্তিবর্গের তথ্য মতে, মিয়ানমারের ওয়ালিদং পাহাড়ের পাদদেশ থেকে সৃষ্টি হওয়া ঐতিহ্যবাহি রেজুখালটি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বঙ্গোপসাগরের সাথে সংযুক্ত হওয়ায় এখানে নিয়মিত জোয়ার-ভাটা হয়ে আসছিল এক সময়।
পশ্চিম ডিগলিয়া রাবার ড্যাম পানি ব্যবস’াপনা সমিতির আওতাধীন কৃষক আব্দুর রহমান জানান, ২০০৫ সালেও রেজুখালের পানি দিয়ে ডেইলপাড়া, চাকবৈঠা, দরগাহবিল, টাইপালং, হিজলিয়া, রাজাপালং, খারাশিয়া, সাদৃকাটা, তুতুরবিলসহ বেশকিছু এলাকায় হাজার-হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষসহ বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজি উৎপাদন করা হয়েছে।
জালিয়াপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী জানান, রেজুখাল থেকে খননযন্ত্র দিয়ে অবৈধ বালি উত্তোলন ও খাল দখল করে স’াপনা নির্মাণসহ খালটি খননের আওতায় না আনার কারণে এ খালে জোয়ার-ভাটায় প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে।
ফলে শুষ্ক মৌসুমে খালের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় খালের পাড়ে বসবাসরত পরিবারগুলো পানির অভাবে শাক-সবজি উৎপাদনসহ নিত্য ব্যবহার্য পানি সংকটে তাদের দিন কাটাতে হচ্ছে।
এব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কৃষি কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম জানান, ভূগর্ভস’ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কারণে খালগুলি শুকিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি অধিকাংশ অগভীর নলকূপেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না।
তবে এতে বোরো উৎপাদনের কোনো ক্ষতি হবে না বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাঈন উদ্দিন জানান, রেজুখাল থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজার জলবায়ু উদ্বাস্তু পুনর্বাসন প্রকল্প থেকে ৪৪০৯ জনের নাম বাতিল

কক্সবাজারে জলবায়ু উদ্বাস্তু পুনর্বাসন প্রকল্পে (খুরুশকুল) পুনর্বাসনের চার হাজার ৪০৯ জনের তালিকা বাতিল করা হয়েছে। ...

জনগণ সচেতন হলে মব-চাঁদাবাজি বন্ধ হবে: কক্সবাজারে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘জনগণ সচেতন হলে মব ভায়োলেন্স ...

আজ ১২ ঘন্টার সফরে কক্সবাজারে আসছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) ...