প্রকাশিত: ১৩/১০/২০১৭ ৯:৩৫ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১২:১৯ পিএম

হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ ::
৩ দিন ধরে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ ৩ বছরের রোহিঙ্গা শিশুর হদিস পাওয়া গেছে। ১৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় ৩ বছর বয়সী রোহিঙ্গা শিশু মোঃ সালামের (৩) সন্ধান মিলে। টেকনাফের লেদা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ঘটেছে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা। এদিকে মিথ্যা অভিযোগ মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন ‘সি’ ব্লক ১৫৯ এর বাসিন্দা মৃত জাকের হোসেনের পুত্র হাসিম উল্লাহ (৪০)।

জানা যায়, টেকনাফের লেদা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ‘সি’ ব্লক ১২১ এর বাসিন্দা মৃত মতিউর রহমানের পুত্র মোঃ রফিক (২৬) ও নুর কায়েদা বেগমের (২১) ৩ সন্তানের মধ্যে মোঃ সালাম ২য়। তাদের বড় মোঃ ইসমাইল (৫) এবং সবার ছোট মোঃ রিয়াজ (১৩ মাস)। গত কিছু দিন আগে মোঃ রফিক নিজ স্ত্রী নুর কায়েদাকে হাসিম উল্লাহর সাথে অনৈতিক সম্পর্কের মিথ্যা অভিযোগ তুলে ব্যাপক মারধর করে বড় ২ জন শিশু সন্তান কেড়ে নিয়ে তাড়িয়ে দেয়। নুর কায়েদারা মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গা হলেও বাবা-মা বর্তমানে মালয়েশিয়া। সৎ মা থাকেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেশখালীয়াপাড়ায়। স্বামীর নির্দয় প্রহারে গুরুতর আহত নুর কায়েদা নিরুপায় হয়ে দুগ্ধ পোষ্য ১৩ মাস বয়সী শিশু পুত্র মোঃ রিয়াজকে নিয়ে সৎ মায়ের আশ্রয়ে চলে যান।

এদিকে পাশ্ববর্তী রোহিঙ্গা হামিদা বেগম ও হাসিম উল্লাহ পরিবারের মধ্যে পৃথক আরেকটি মারামারির ঘটনায় হাসিম উল্লাহ গা ঢাকা দেয়। এ সুযোগে হাসিম উল্লাহকে ফাঁসাতে ৩ বছরের রোহিঙ্গা শিশু পুত্রকে লুকিয়ে রেখে মোঃ রফিকের পরিবার হাসিম উল্লাহসহ আরও কয়েক জনের বিরুদ্ধে শিশু কিডন্যাপ করার মিথ্যা অভিযোগ তুলে। এমনকি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে মিথ্যা বুঝিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে থাকে। ৩ দিন আগে ১০ অক্টোবর ৩ বছর বয়সী শিশু নিখোঁজের এ ঘটনা পুরো রোহিঙ্গা ক্যাম্প জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। ওদিকে স্বামীর নির্দয় প্রহারে গুরুতর আহত মা নুর কায়েদা শিশু পুত্র নিখোঁজের খবরে ভেঙ্গে পড়েন। আহত ও অসুস্থ শরীর নিয়ে পাগলের মত শিশু পুত্রকে খুঁজতে থাকেন।

১৩ অক্টোবর বিকালে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংবাদ সংগ্রহকালে ‘এ’ ব্লকে কাকতালীয়ভাবে ইলিয়াস নামে এক যুবক নিখোঁজ হওয়া শিশু নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের রাস্তায় চলে আসেন। মিয়ানমার নাগরিক রোহিঙ্গা যুবক ইলিয়াস (৩০) মৃত কালা চাঁনের পুত্র। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দোকান করেন। থাকেন গবি সুলতানের ভাড়া বাসায়। রোহিঙ্গা যুবক ইলিয়াস বলেন ‘৩ দিন আগে এশার পরে রাস্তায় শিশুটি পেয়ে বাসায় নিয়ে যাই। পরদিন থেকে প্রচারণা করলেও অভিভাবক পাওয়া যায়নি। শিশুটি অসুস্থ ছিল। মুখে ক্ষত ছিল। চিকিৎসা করে ও মুখে চন্দন লাগিয়ে সুস্থ করে তুলেছি। এসময় উপস্থিত রোহিঙ্গাদের সামনে ‘সি’ ব্লকের মাঝি ফয়েজ মুরুব্বী শিশুটি ৩ দিন আগে নিখোঁজ হওয়া মোঃ রফিকের শিশু পুত্র মোঃ সালাম বলে সনাক্ত করেন। বর্তমানে শিশুটি আমার হেফাজতে রয়েছে’।

এদিকে নিখোঁজ শিশু পুত্রের সন্ধান লাভের খবর পেয়ে মা নুর কায়েদা এক নজর দেখার জন্য রাতেই লেদা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলে আসেন। স্বামীর নির্দয় প্রহারে গুরুতর আহত মা নুর কায়েদা অঝোর কান্নায় বলেন ‘মিথ্যা অপবাদ দিয়ে স্বামী আমাকে মারধর করে তাড়িয়ে দিয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে আমার শিশু পুত্র কিডন্যাপ করার অভিযোগ তুলছে তা সত্য নয়’। ##

পাঠকের মতামত