তার বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির মতো গুরুতর অভিযোগ। কিন্তু ভক্ত হৃদয়ে তিনি বিশ্বপ্রেমের প্রতীক। ‘তোমার প্রেমই পৃথিবীতে বসন্তের সমাগম করে। ‘ ২০১৪ সালে মুক্তি পাওয়া গানের অ্যালবাম ‘হাইওয়ে লাভ চার্জার’-এ গেয়েছিলেন গুরমিত রাম রহিম সিং ইনসান, যাকে দুনিয়া চেনে ‘রকস্টার বাবা’ হিসেবে। এর এক বছরের কম সময়ের মধ্যে তার প্রথম সিনেমা MSG: The Messenger of God ডেরা সাচা প্রধানের রকস্টার বাবা ভাবমূর্তি পোক্ত করে। হাই ভোল্টেজ এই গুরুর জীবন কিন্তু শুরু হয়েছিল যথেষ্ট সাদামাটা ভাবে।
রাজস্থানের শ্রী গঙ্গানগর জেলার অখ্যাত গ্রাম গুরুসর মোদিয়ায় জন্ম গুরমিত রাম রহিম সিং ইনসানের। শৈশবে অবশ্য তাকে মিতা নামে চিনতেন পড়শিরা। ১৯৯০ সালে হরিয়ানার সিরসা শহরের ডেরা সাচা সওদার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মিতা। সেই সময় সাধারণ সফেদ কুর্তা-পাজামাই তার পোশাক ছিল। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যে নিজের পোশাক ও জীবনযাত্রায় নজরকাড়া পরিবর্তন আনেন ডেরা প্রধান। নিজের নতুন নামকরণের মাধ্যমে সর্বধর্ম সমন্বয়ের প্রয়াস ছাড়াও তার বেশভূষা দেখে তাক লেগে যায় সকলের।
নিন্দুকরা অবশ্য বলেন, তার ওয়ার্ড্রোব আসলে বি আর চোপড়ার জনপ্রিয় টিভি সিরিয়াল ‘মহাভারত’ এবং মার্কিন রক শিল্পীর স্টাইলের মিশেল। কিন্তু লাখ লাখ ভক্তের দৃষ্টিতে তিনি একাধারে সন্ত, দার্শনিক, ধর্ম প্রচারক, সঙ্গীতশিল্পী, বহুমুখী ক্রীড়াবিদ, বাস্তুকার, অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ার, সিনেমা পরিচালক, অভিনেতা, শিল্প নির্দেশক, সঙ্গীত পরিচালক, লেখক, গীতিকার এবং আরও অনেক কিছু।
বছর পঞ্চাশের এই গুরুর মূল শক্তি আসলে বিশ্বজোড়া কয়েক লাখ ভক্ত। সারা দুনিয়ায় তার কোটি কোটি ডলার মূল্যের সম্পত্তি ছড়িয়ে রয়েছে। আদালতে যতই তার বিরুদ্ধে বিবিধ অপরাধের অভিযোগ উঠুক না কেন, বিশ্বাসীদের চোখে তিনি একই অঙ্গে একজন সমাজ সংস্কারক, আধ্যাত্মিক শিক্ষক, কৃষি বিজ্ঞানী এবং চিন্তাবিদ।
মুখে না বললেও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ভক্তজনের জবানে নিজেকে ‘পরম পবিত্রময়’ এবং নিজ পরিবারকে ‘রাজ পরিবার’ হিসেবে শুনতে পছন্দ করেন গুরমিত রাম রহিম সিং ইনসান।
গত কয়েক দশক ধরে বিলাসবহুল জীবনে তিনি অভ্যস্ত। তার গ্যারাজে রয়েছে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ডের কয়েকশো গাড়ি ও মোটরবাইক। এছাড়া নিজস্ব জেটও রয়েছে। আর সে সবই তার নিজস্ব নকশায় সাজানো হয়েছে বলে ভক্তদের দাবি।
এ পর্যন্ত MSG-সহ মোট ৫টি সিনেমা তিনি তৈরি করেছেন। দেশের হাতেগোনা ভিভিআইপিদের অন্যতম এই ধর্মগুরু সরকারি জেড-প্লাস নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। সূত্র: এই সময়
পাঠকের মতামত