
উখিয়া নিউজ ডেস্ক ::
বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতে কর্মীদের চাঙ্গা করতে বিএনপি আবোল-তাবোল কথা বলছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বিএনপি কতটা আন্তরিক? তাদের কনসার্নটা শুধু রাজনীতির। দেশে তিন দফা বন্যা হলো কিন্তু তিনি না এসে দিনের পর দিন শুধু আসি আসি বলে আশা দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আসেন নাই। তাদের (বিএনপির) যিনি ১ নাম্বার (খালেদা জিয়া) তাঁরই তো রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে কোনো চিন্তা আছে বলে মনে হয় না। আর বাকিরা এসে শুধু প্রেস বিফ্রিং করছেন।’
রবিবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর হোটেল রেডিসের সামনে বিআরটিএ এর মোবাইল কোর্ট পরিদর্শনে এসে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির সমালোচনার জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘যদি কূটনৈতিক উদ্যোগ ব্যর্থ হতো তাহলে মিয়ানমারের সুর নরম হলো কিভাবে? মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের বিতরণ, নির্যাতন করে এটা চরম পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে, তাদের অবস্থান অনড় সেটা বুঝিয়ে দিয়েছিল। এখন তো মিয়ানমারের মন্ত্রী আসার পর একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাদের সুর যদি নরম না হতো অবস্থানের যদি পরিবর্তন না হতো তাহলে মিয়ানমারের মন্ত্রী কিভাবে বাংলাদেশে আসে আলোচনা করে? জয়েন্ট ওয়ার্কিং করে? আমাদের সব কিছুর জন্য ধৈর্য ধরতে হবে। ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে হবে। আমরা যদি তাদের ফাঁদে পা দেই তাহলে গোটা অঞ্চলের ক্ষতি হবে।’
নতুন করে যেন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে না আসে সে জন্য জাতিসংঘে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। আর নতুন করে আর যেন রোহিঙ্গাদের জনস্রোত আসতে না পরে সে জন্য জাতিসংঘে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’
মিয়ানমার কয়েকবার সীমানা লঙ্ঘনের ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তারা কয়েকবার সীমানা লঙ্ঘন করেছে। কিন্তু সবার চাপে এটা এখন আর করছে না।’
যদি রোহিঙ্গা আসতেই থাকে তাহলে বর্ডার বন্ধ করে দেয়া হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মানবিক কারণেই যখন উদারতার প্রকাশ ঘটেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে। প্রধানমন্ত্রী যখন যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন আমি তখন আলাপ করেছিলাম টেলিফোনে। আমাদের যারা নিরাপত্তার দায়িত্ব আছে তারা অনেকেই বলেছিল এখন যেভাবে রোহিঙ্গা আসছে আমার বর্ডার বন্ধ করে দিবো কিনা? তখন প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন আমরা যখন মানবিক কারণে সীমান্তের দরজা খুলে দিয়েছি তখন আবার কী এমন কারণ ঘটল, যে আমাদের মানবিক যে দৃষ্টি কোণ এটার পরিবর্তন ঘটল। যে পর্যন্ত বিশ্ব জনমত এবং জাতিসংঘে চাপে বন্ধ না হবে আমরা জোর করে দরজা বন্ধ করে দিবো না। আমাদের মানবিক দৃষ্টিকোণটা একেক সময় একেক রকম হতে পারে না।’
যেখানে ইউরোপে ৫ লাখ শরণার্থী জায়গা দিতে পারেনি সেখানে আমাদের ছোট দেশে তার চেয়ে বেশি রোহিঙ্গা জায়গা দিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা কী বলেন তাড়িয়ে দিব? নদীতে ফেলে দিব? সাগরে ফেলে দিব? এটা কী হয়? এটা কী মানবিকতা? এটা মানবিক একটা বিপর্যয়। এই মানবতার যে উদার চিত্ততা আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেখিয়েছেন সেই জন্যই তো তিনি বিপন্ন মানবতার লাইট হাউজে পরিণত হয়েছেন। আমি মনে করি এ জন্য ধৈর্য ধরতে হবে। আমাদের কূটনৈতিক চাপ অব্যহত থাকবে।’
চীন-ভাতরকে এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ওপর যে মানব বোঝা চেপেছে তাদের যেন নিজ স্বদেশে ফিরে যেতে পারে সেই ব্যাপারে সহযোগিতা করে। আমাদের দেশে ৩ দফা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাদের অর্থনৈতিক ওপর চাপ আছে। পরিবেশের ওপর চাপ আছে। কক্সবাজারে পর্যটনের ওপর একটা প্রভাব আছে। সেই সব চিন্তা করে আমাদের প্রতিবেশী অন্যান্য বড় বড় দেশ বন্ধু দেশ এবং বিশ্ব জনমতের কাছে আমাদের অনুরোধ বিশেষ করে জাতিসংঘের কাছে যত দূত সম্ভব এই বাড়তি জনসংখ্যা আমাদের ওপর যা চেপেছে তাদের যেন তাদের স্বদেশ ফেরত নেয়া হয় সেজন্য বিশ্বজনমতের কাছে আমরা আহ্বান জানায়। আর প্রতিবেশীর ঘরে যদি আগুন লাগে তাহলে সেই আগুনের আচ আমাদের ঘরেও লাগবে। তাই প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানায় যেন তারা এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসে।
পাঠকের মতামত