প্রকাশিত: ১৯/০৯/২০১৬ ৭:২৮ এএম

9b118c31fb3d35cc841702e753aab096-67_cox-protima-1উখিয়া নিউজ ডেস্ক:;
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ঘিরে প্রতিমা তৈরির ধুম পড়েছে। কারিগরদের দম ফেলার ফুসরত নেই। কয়েক দিন বাদেই প্রতিমার গায়ে পড়বে রঙের আঁচড়।
কক্সবাজার শহরের লালদীঘির পাড়ে শত বছরের পুরোনো সরস্বতীবাড়ি মন্দির। এই মন্দিরের ভেতরে এখন শোভা পাচ্ছে ছোট-বড় শতাধিক প্রতিমা। বাঁশ-কাঠ আর কাদা মাটি দিয়ে তৈরি প্রতিমাগুলো দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন সনাতন ধর্মের লোকজন।
গতকাল রোববার দুপুরে ওই মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত মৃৎশিল্পী (কারিগর) নেপাল ভট্টাচার্য। সেখানে রামু, টেকনাফ, উখিয়া, চকরিয়া, খুরুশকুলসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা লোকজন প্রতিমার দরদাম করছেন। কেউ অগ্রিম দিচ্ছেন।
দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে এই মন্দিরে প্রতিমা তৈরি করে আসছেন নেপাল ভট্টাচার্য (৮২)। তিনি বলেন, আগামী ৬ অক্টোবর মহাপঞ্চমী দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে দুর্গোৎসব শুরু। ১১ অক্টোবর কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই উৎসব। ৭ অক্টোবর মহাষষ্ঠী পূজা থেকে মণ্ডপে মণ্ডপে বেজে উঠবে ঢাকঢোল আর কাঁসার শব্দ।
নেপাল ভট্টাচার্য বলেন, দুই মাস আগে থেকে তিনি প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছেন। এ পর্যন্ত ২৫টি প্রতিমা সেট তৈরি করেছেন। প্রতি সেটে দুর্গার সঙ্গে থাকে অসুর, সিংহ, মহিষ, গণেশ, সরস্বতী, কার্তিক ও লক্ষ্মী প্রতিমা। তিনি বলেন, আগে একটা প্রতিমা সেট তৈরি করতে খরচ হতো ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। সেটি বিক্রি হতো ৩০ থেকে ৬০ হাজার টাকায়। কিন্তু এখন বাঁশ, কাঠ, কাদা মাটিসহ প্রতিমা তৈরির উপকরণের দাম অনেক বেশি। তাই প্রতি সেট প্রতিমা তৈরিতে খরচ হচ্ছে ৪০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। এখন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার বেশি লাভে বিক্রি করা যাচ্ছে না।

শহরের ঘোনারপাড়া কৃষ্ণানন্দধাম মন্দিরে তৈরি করা হচ্ছে বিশাল দুর্গাপ্রতিমা। এ জন্য কারিগর আনা হয়েছে চট্টগ্রাম থেকে। ঘোনারপাড়া দুর্গাপূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ পাল বলেন, এই মন্দিরে প্রতিমা স্থাপন ও আলোকসজ্জার বিপরীতে খরচ হচ্ছে প্রায় সাত লাখ টাকা, যা গত বছর পাঁচ লাখ টাকায় হয়েছে।

কক্সবাজার শহরে ২৩ বছর ধরে প্রতিমা তৈরি করছেন আরেক কারিগর বাবুল ভট্টাচার্য (৪৭)। তিনি বলেন, রামুর বাঁকখালী নদী থেকে কাদা মাটি কিনে এনে প্রতিমা তৈরি করতে হয়। তারপর কাঠ, সুতা, খড়, রং, কাপড় ও মুকুট দিয়ে এক সেট প্রতিমা তৈরি করতে সময় লাগে পাঁচ দিন। কিন্তু প্রতিমা সেট বিক্রি করে তেমন লাভ হচ্ছে না।

কক্সবাজার জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা জানান, গত বছর জেলার বিভিন্ন স্থানে ২৭৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হয়েছে। এবার ১০টি বেড়ে ২৮৬টি মণ্ডপে এই পূজা হবে। দেবীর আগমন ও প্রস্থান হবে ঘোড়ায় চড়ে।

জেলা পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি রণজিৎ দাশ জানান, ১১ অক্টোবর লাখো ভক্তের উপস্থিতিতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের লাবণী পয়েন্টে প্রতিমা বিসর্জন উৎসব হবে। এটিই দেশের সর্ববৃহৎ প্রতিমা বিসর্জন উৎসব। তাই নিরাপত্তার ব্যাপারে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হবে। এ ব্যাপারে ২৩ সেপ্টেম্বর পরিষদের জরুরি সভা আহ্বান করা হয়েছে। ২৬ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে হবে দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা সভা।

পাঠকের মতামত

রামুর ফতেখাঁরকুলে উপ-নির্বাচনে প্রতীক পেয়ে প্রচারনায় ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থী

রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের উপ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধি ৩ প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্ধ দেয়া ...

টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর মনিরুজ্জামানের সম্পদ জব্দ দুদকের মামলা

টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর মো. মনিরুজ্জামানের সম্পদ জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কক্সবাজার জ্যেষ্ঠ স্পেশাল ...