
হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া ::
মসজিদের ঈমাম, শিক্ষকসহ সৎ জীবন যাপনকারী মানুষগুলো অসহায়। আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি, দ্রব্যমূল্যের উধ্বগতি, পারিপাশ্বিক অবস্থা,সামাজিক রীতিনীতি মেনে চলতে গিয়ে এসব মানুষগুলোর সংসারে আজ দুরাবস্থা বিদ্যমান। ছোট ব্যবসায়ীদের ব্যবসা মন্ধা। কৃষকদের কৃষিকাজে ব্যয় বৃদ্ধিসহ আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারে কৃষিতে পরিবর্তনের হাওয়া লাগলেও বর্গাচাষিদের দুঃসময় কাটছে না। সরকারের বর্গা আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় যুগ যুগ ধরে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বর্গাকৃষকেরা। ফলে অনায়াসেই জমির মালিকেরা উৎপাদিত ফসলে অর্ধেক ভাগ বসাচ্ছেন, কিন্তু আবাদপ্রক্রিয়া থেকে শুরু করে ধান কাটা, মাড়াই পর্যন্ত সব কিছুর ব্যয়ভার বর্গাদারকেই বহন করতে হচ্ছে। আইন অনুযায়ী বর্গাকৃষক ও জমির মালিকের মধ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি লিখিত চুক্তির নিয়ম থাকলেও বাস্তবে এক বছর মেয়াদি মৌখিক চুক্তিই প্রচলিত রয়েছে। লিখিত চুক্তিনামা না থাকায় ব্যাংক কৃষিঋণপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বর্গাচাষিরা। এতে বছরের পর বছর ধরে বাধ্য হয়ে মহাজনের চড়া সুদের ঋণের বেড়াজালে আটকে আছেন এখানকার বর্গাকৃষকেরা। জমির মালিক ও বর্গাকৃষকের মধ্যে সুষম বন্টনের জন্য বর্গা আইন যুগোপযোগী করার দাবি জানিয়েছেন এলাকার জনপ্রতিনিধিরা। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জমি চাষাবাদ থেকে শুরু করে বীজ, সার, সেচ,কীটনাশক ও শ্রমিকসহ সব কিছুর ব্যবস্থা করতে হয় বর্গাকৃষককেই। অথচ উৎপাদিত ফসলের অর্ধেক দিয়ে দিতে হয় জমির মালিককে। যে কারণে জমির মালিকের ভাগ,উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে বর্গাদারের ভাগে তেমন কিছুই থাকে না। এতে অনেকেই কৃষিবিমুখ হয়ে পড়েছেন। এ ব্যাপারে একাধিক কৃষকেরা বলেছেন, আগে যেখানে তারা হালের বলদ আর লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ করতেন, এখন সেখানে ব্যবহার করতে হচ্ছে ট্রাক্টর। সেচের জন্য বৃষ্টির পানি বদলে সেচ যন্ত্র আর ধান মাড়াইয়ের জন্য মাড়াই কল। এসব যন্ত্রপাতি ব্যবহারে যে খরচ হয় তার সবটাই কড়া সুদে আনতে হচ্ছে গ্রাম মহাজনের কাছ থেকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মসজিদের ঈমাম বলেন, আমার মেয়ের বিয়ে। সামাজিক রীতিনীতি মেনেই মেয়েকে বিয়ে দিতে গিয়ে আমি অসহায় হয়ে পড়ি। বিভিন্ন মহাজন ও এনজিওদের কড়াসুদের কারণে গোনাহের কথা চিন্তা করে ঋণ নিতে পারিনি। অবশেষে এক বন্ধুর সহায়তায় ইসলামী ব্যাংক থেকে বিনিয়োগ নিয়ে মেয়ের বিয়ে সম্পাদন করি। প্রবীণ এক প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক তাঁর স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ যোগাতে শরণাপন্ন হলেন, ব্যাংক ম্যানেজারের কাছে। তিনি অগ্রিম চেক নিয়ে টাকা দিলেন সত্যি, কিন্তু এ কাজে তাকে বকশিস দিতে হয়েছে। আর ছোট ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন এনজিও থেকে চড়াসুদে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করছেন। ফলে একদিকে ঋণের কিস্তি পরিশোধ অন্যদিকে সংসার চালিয়ে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
উখিয়ায় অবিরাম বৃষ্টিতে ঘর থেকে বের হচ্ছেনা মানুষ
হুমায়ুন কবির জুশান উখিয়া (কক্সবাজার) তারিখঃ২২-০৪-১৭ইং
গুটি গুটি অবিরাম বৃষ্টিতে ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। উখিয়ার কর্মজীবি মানুষেরা সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন। উপক’লীয় এলাকায় জোয়ারের পানিতে থৈ থৈ অবস্থা হয়েছে। উখিয়া সদর দারোগা বাজারের ড্রেনের ময়লাযুক্ত পানি রাস্তায় জমেছে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের নিচু জায়গায় হাঁটুপানি জমেছে। এ অবস্থায় অনেক এলাকার মানুষ বাসা বাড়ি থেকেই বের হতে পারেননি বলে খবর পাওয়া গেছে। একটানা বৃষ্টিতে চরম ঝুঁকিতে থাকতে হয় পাহাড়ে বসবাসরত মানুষদের। কৃষকেরা জানিয়েছেন, হঠাৎ বৃষ্টিতে কাটা ধান জমিতে রয়েছে। ঘরের উঠানে তোলা ধানগুলো ভিজে গেছে। ধান মাড়াইয়ের কাজতো দুরের কথা কীভাবে পাকাধান রক্ষণাবেক্ষণ করবো তা নিয়ে দুঃচিন্তায় আছি। হঠাৎ অসময়ে বৃষ্টির ব্যাপারে জানতে চাইলে মাওলানা রফিক আহমদ হাশেমী বলেন, শরা শরীয়তের অবমূল্যায়ণের কারণে দোয়া কবুল হয়না। যখন ফাশেকের তারিফ শুরু হয় তখন আল্লাহর গজবের ঢেউ মারে এবং আরশ কাঁফে। আমাদের অবস্থা তাই হয়েছে।
পাঠকের মতামত