
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের পূর্ব পারিরবিল এলাকায় জমি জবরদখলকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে ঘটনাটি ঘটে। হামলায় দা ও কিরিচ ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ সময় নির্মাণাধীন একটি দালানবাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়।
এ ঘটনায় ২১ ডিসেম্বর রাতে পূর্ব পারিরবিল গ্রামের মৃত হাছন আলীর পুত্র বশির আহমদ বাদী হয়ে উখিয়া থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৭–৮ জনের বিরুদ্ধে একটি এজাহার দায়ের করেন।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নুর মোহাম্মদ কিছুদিন আগে বিবাদী পক্ষ শামশুদ্দীন গং-এর কাছ থেকে জমিটি ক্রয় করে ভোগদখলে ছিলেন। ওই জমিতে দালান নির্মাণের কাজ চলাকালে পূর্ব মালিক ও তার সহযোগীরা প্রভাব খাটিয়ে বারবার বাধা সৃষ্টি করে আসছিল। বিষয়টি স্থানীয় মুরব্বিদের জানিয়ে সালিশও বসানো হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় সংঘবদ্ধভাবে জমি জবরদখলের উদ্দেশ্যে পূর্ব পারিরবিল এলাকার মৃত জালাল আহমদের পুত্র
শামশুদ্দীন (৪৫), মোহাম্মদ রিদোয়ান (২৭), মোহাম্মদ ফারুক ওরফে বাদশা (৩৫), মোবারক হোসেন মানিক (৩০), জসিম উদ্দিন ওরফে সোনা মিয়া (৪০), মোহাম্মদ শাহজাহান (৩৭) সহ আরও অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে হামলা চালায়।
হামলাকারীরা প্রথমে কাজরত মিস্ত্রিদের ওপর আক্রমণ করে এবং নির্মাণাধীন দালানবাড়ির ১২টি আরসিসি পিলার, ইটের দেয়াল ও নির্মাণ সামগ্রী ভেঙে ফেলে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে নুর মোহাম্মদকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। এ সময় বাবাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসলে তার ছেলে মিছবাহ হাসানকেও কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। এতে তার একটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক জখম হয়।
আহত নুর মোহাম্মদ স্থানীয়ভাবে চিংড়ি মাছের ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার ছেলে মিছবাহ হাসান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
ঘটনার খবর পেয়ে এলাকাবাসী ও স্বজনরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ভাঙচুরে নির্মাণাধীন দালানবাড়ির পিলার, দেয়াল ও নির্মাণ সামগ্রী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রায় ৪ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানান বাড়ির মালিক।
এ ঘটনায় এলাকাবাসী তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জমি জবরদখলকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
বর্তমানে গুরুতর আহত নুর মোহাম্মদ ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শামশুদ্দীন আত্মগোপনে থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, দু’পক্ষের মধ্যে একটি ঘটনা হয়েছে বলে শুনেছি। এলাকায় শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান। তবে ঘটনার বিস্তারিত জেনে বলতে হবে।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত