প্রকাশিত: ০৭/০৬/২০২০ ৫:৪৭ পিএম

কোভিড-১৯ অতিমারির কারণে সারা দুনিয়ার কর্মব্যবস্থাপনায় ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে অফিস আদালতের কর্ম পরিবেশেও।এটিকে কেউ বলছেন ভার্চুয়াল অফিস আবার কেউবা বলছেন ওয়ার্ক ফরম হোম।যে নামেই ডাকুন না কেন নিন্মোক্ত নিয়মাবলি আশা করি আপনার প্রস্ততি গ্রহনে কিছুটা হলেও সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
১.অফিস টাইম মেনে চলুন।প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে বসুন।আপনার সুপারভাইজারকে ইন্টারনেটে সুপ্রভাত জানানো গেলে খুবই ভালো এতে আপনার সরব উপস্থিতি উনার কর্ম পরিকল্পনায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।সঠিক সময়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিতিতে আপনার কর্ম পরিবেশ বিনষ্ট করতে পারে।যদিও আপনি বাসায় তাও আপনাকে বাসা এবং অফিস আলাদা চিন্তা করে প্লান করতে হবে নচেৎ বাসার পরিবেশ আর অফিসের পরিবেশ একাকার হয়ে উভয় পরিবেশই বিশৃঙ্খল হয়ে পড়বে।
২.দৈনন্দিন কাজের তালিকা গুছিয়ে নোট করুন।কার সাথে কবে কোন বিষয়ে কথা বলবেন তাও লিখে রাখুন।মনে রাখবেন সুষ্ঠু পরিকল্পনা কাজের অর্ধেক কিন্তু।
৩.আগামী দিনের মিটিং শিডিউল মেন্টেইন করুন এবং মিটিং আপনার অংশগ্রহন বা প্রেজেন্টেশন রেডি করুন।
৪.নিরিবিলি ঘর নির্বাচন করুন,অতিরিক্ত শব্দ আপনার মনোযোগ নস্ট করতে পারে।
৫.নিয়মিত ওয়ার্ক ফরম হোম করার প্রয়োজনে একটা ছোট টেবিল ও চেয়ার এর ব্যবস্থা আগে থেকেই করে রাখুন।ডাইনিং টেবিল কিংবা সোফায় বসে নিয়মিত অফিস না করায় শ্রেয়।
৬.ওয়ার্ক ফরম হোমের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় অনলাইনে মিটিং এ বসতে হয়।মিটিং এর পূর্বেই আপনার ইন্টারনেট লাইন ঠিক আছে কিনা নিশ্চিত হউন।আপনি যদি ওয়াইফাই কানেক্টেড হয়ে থাকেন তাহলে আগেই আপনার ওয়াইফাই সেবা দানকারী প্রতিষ্টানের সাথে যোগাযোগ করে আপনার চাহিদা মাফিক ইন্টারনেট গতি নিশ্চিত করুন।এক্ষেত্রে অতি প্রয়োজন ব্যতিত মোবাইল ফোন থেকে কম্পিউটারে ইন্টারনেট কানেকশন না নেওয়ায় শ্রেয়।ফোনকলের কারণে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আপনি সভা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারেন।
৭. বর্তমানে অনলাইন মিটিং এর ক্ষেত্রে একেক প্রতিষ্টান একেক ধরণের মিডিয়া ব্যবহার করেন যেমনঃজুম,হোটসএপ,স্কাইপে,মাইক্রোসফট টিম ইত্যাদি।আপনার কম্পিউটারে প্রয়োজনীয় এপসগুলো আগেই ডাউনলোড করে ব্যবহার উপযোগী করে রাখুন।
৮. সভায় অংশগ্রহণের জন্য পূর্বেই নিবন্ধনের ব্যবস্থা থাকলে নিবন্ধন করে রাখুন এবং পরিচিতিমূলক নাম ব্যবহার করুন যাতে অংশগ্রহণকারীরা আপনার নাম দেখে আপনার পরিচয় নিশ্চিত হতে পারে।”মেঘের ডানা” কিংবা “হারানো পথিক” ইত্যাদি নাম ব্যবহার না করায় উত্তম।
৯. আপনি যদি মিটিং এর অর্গানাইজার হয়ে থাকেন তাহলে আগেই আপনার মিটিং আইডি,পাসওয়ার্ড,তারিখ ও সময় সংশ্লিষ্ট সকলকে শেয়ার করুন।মিটিং ডিউরেশন আগে থেকে সেট করে রাখুন অন্যতায় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে মিটিং থেকে সকলকে বিচ্ছিন্ন হতে হবে।ফ্রি মিটিং এর ক্ষেত্রে এ ঝামেলাগুলো বেশি দেখা যায়।
১০.আপনি যদি কোন ভিডিও কনফারেন্স এ অংশ নেন তাহলে অবশ্যই আপনার পোষাক পরিচ্ছদের ব্যাপারে মনোযোগী হউন।অতিরিক্ত সাজঁগোছ কিংবা ঘরোয়া পোশাকে অফিস মিটিংয়ে অংশ না নেওয়া উত্তম।ভিডিও চলাকালীন লক্ষ্য রাখুন আপনার ক্যামেরায় যেন অনাবশ্যক কেউকে বা কোন কিছু দেখা না যায়।মনে রাখবেন আজকাল অধিকাংশ মিটিং রেকর্ড করা হয়।অতিরিক্ত সাবধানতার অংশ হিসাবে নিরিবিলি রুমে বসে এসব মিটিং অংশ নেওয়া ভালো।
১১. সভা চলাকালীন আপনি যদি কথা না বলেন তাহলে আপনার কম্পিউটারের মাক্রোফোন মিউট বা অফ করে রাখুন।কেবল কথা বলার প্রয়োজনে আনমিউট করে আপনার বক্তব্য শেয়ার করুন।
১২. সভায় আপনার কম্পিউটার স্ক্রীন শেয়ার করার প্রয়োজনে হলে সভার পূর্বেই প্রস্ততি নিয়ে রাখুন।প্রয়োজনে কোন সহকর্মীর সহযোগিতা নিন।মনে রাখবেন এই পরিবেশে সবাই নতুন। এখানে শিখার কোন বিকল্প নেই।লজ্জা পেয়ে নিজকে গুটিয়ে না রেখে নতুন বিষয় আয়ত্ত করুন।
১৩. নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগের জন্য বাসায় আইপিএস বা বিকল্প বিদ্যুৎ সরবরাহ রাখতে পারেন।অনেক সয়ম লোডশেডিং এর কারণে কাঙ্ক্ষিত মিটিং মিস হবার আশংকা থাকে।
১৪. যদি সভা চলাকালীন হঠাৎ অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে আপনার বিচ্ছিন্ন হবার আশংকা থাকে তাহলে একই মিটিং এ অংশ নেওয়া অন্য কলিগকে আপনার বক্তব্য/ডকুমেন্টস শেয়ার করে রাখুন।এতে আপনি হঠাৎ বিচ্ছিন্ন হলেও আপনার প্রতিষ্টানের সুনাম রক্ষা হবে।
১৫. মিটিংয়ে কথা বলার আগে Hands up বাটনে কিংবা অন্যকোনভাবে সঞ্চালকের দৃষ্টি আকর্ষণ করুন।উনার অনুমতি পেলেই আপনার বক্তব্য শেয়ার করুন।বিনা অনুমতিতে বক্তব্য রাখলে কিংবা হুড করে কথা বলা শুরু করলে মিটিংয়ের সৌন্দর্য নষ্ট হয় এবং অন্যান্য অংশগ্রহণকারীরা আপনার ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করতে পারে।
১৬. মিটিং চলাকালীন আপনার জরুরি কাজে মিটিং ত্যাগ করতে হলে মিটিং আয়োজকে চ্যাট অপশনে গিয়ে ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ প্রকাশ করুন।
১৭.মিটিং শেষে সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নিন।
১৮. সভার সিদ্ধান্ত আপনার সুপারভাইজারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে তৎক্ষনাৎ অবহিত করুন।ইমেইলের মাধ্যমে অবগতির স্থায়িত্ব তুলনামূলক বেশি থাকে।

লেখকঃ
জিয়াউর রহমান মুকুল,
উপ-পরিচালক,
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা,শেড।
ইমেইলঃ [email protected]

পাঠকের মতামত

একটি পেঁয়াজের ওজন ৯ কেজি

বিশ্বের সবচেয়ে বড় পেঁয়াজ ফলাতে সক্ষম হয়েছেন ব্রিটিশ এক কৃষক। গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ...