প্রকাশিত: ১৯/১০/২০১৬ ৯:১৬ পিএম

মো: জয়নাল আবেদীন:: কাউখালী, রাঙামাটি
kawkhali-news-pic-1রাঙামাটির কাউখালী উপজেলায় প্রভাবশালী ইটভাটা মালিকের অত্যচারে ভিটেমাটি হারাতে বসেছে ষাটোদ্ধ কুলসুমা বেগম (৬৮)। এমনই এক ঘটনা ঘটছে রাঙামাটির কাউখালী উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের সুগার মিল আদর্শগ্রাম এলাকায়।

একের পর মামলা-হামলা দিয়েও যখন কোনোভাবে ভিটেমাটি থেকে সরানো যাচ্ছেনা ঠিক তখনই ভূক্তভোগিদের অনুপস্থিতিতে ভাড়া করা লোকজন দিয়ে হামলা চালিয়ে মাথা গোজার একমাত্র সম্বল টুকু মাটির সাথে মিশিয়ে দিল সন্ত্রাসীরা। রবিবার বিকেলে এঘটনা ঘটায় সন্ত্রাসীরা।

মাথা গোজার সম্বলটি হারিয়ে সন্তান-নাতি-নাতনিদের নিয়ে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছেন কুলসুমা। বিচারের আশায় চেয়ারম্যান, মেম্বারের দারে দারে ঘুরেও কোন লাভ হয়নি।

বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার কলমপতি ইউনিয়নের আদর্শগ্রাম এলাকার বাসিন্দা স্বামীহারা কুলসুমার ৫০ফুট লম্বা বসতঘরটি এককোণে বসে বিলাপ করছের কুলসুমা। তার সাথে কথা বলে জানাযায়, তার দখলে থাকা খাস জমিতে প্রায় ৪০ বছর যাবৎ তিন ছেলে, দুই মেয়ে ও পূত্রবধূসহ নাতিকে নিয়ে বসবাস করে আসছেন তিনি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে অসহায় কুলসুমার জমির উপর নজর পড়ে এলাকার পার্শ্ববর্তী প্রভাবশালী ইটভাটার মালিক পাইথুই অং মারমা (পার্থিব বাবু), এলাকার ক্ষমতাধর সগির আহাম্মদ ভাই জহির আহাম্মদ ও ওলি আহাম্মদের। ইটভাটার মাটি সংগ্রহ ও উক্ত জায়গায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য পার্থিব বাবু তার বাহিনী দিয়ে বসতঘরের জায়গাটি দখলে নিতে চেষ্টা চালায়। পুরো জায়গা দখলে নিতে না পারলেও ইতিমধ্যে কুলসুমার অনেক জায়গা তারা দখল করে নিয়েছে।

সবশেষ ১৩ অক্টোবর’১৬ তারিখে প্রভাবশীদের করা দায়ের করা মামলায় রবিবার মামলায় জামিনের জন্য রাঙামাটির আদালতে গেলে, একইদিন বিকেলে সন্ত্রাসীরা এসে ধারালোর অস্ত্রের আঘাতে খুটিগুলো কেটে মাটিতে লুটিয়ে দেয় বৃদ্ধার একমাত্র বসতঘরটি। এসময় লুটপাট করা হয় তার মূল্যবান জিনিসপত্র। পরে একই দিন সন্ধ্যায় কাউখালী থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে সেখানেও মামলা নিতে গড়িমসি করে পুলিশ। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, স্থানীয় এক নেতার মধ্যস্থতায় স্থানীয়ভাবে বিষয়টি নিয়ে মিমাংসা করা হবে। শেষ মেষ সোমবার পুলিশের উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কাউখালী থানা পুলিশ ভূক্তভোগিদের কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ নেয়। মামলার নাম্বার হলো- ৭ তারিখ: ১৮/১০/২০১৬ইং।

কুলসুমা আরও জানান- পাথিব বাবু স্থানীয় আঞ্চলিক দলের নেতা। তার অনেক প্রভাব রয়েছে। চুক্তি বিরোধী সংগঠন ইউপিডিএফ’র সাথে রয়েছে তার বিশেষ সখ্যতা। সেই কারনে তার প্রভাবে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না।

এবিষয়ে অভিযুক্ত ইটভাটার মালিক পাথিব বাবুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এসবই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। এছাড়া উক্ত জায়গাটি তার দাদার সম্পত্তি বলেও দাবি করেন তিনি। তাহলে কিভাবে ৪০ বছর ধরে উক্ত জায়গায় কুলসুমা বসবাস করছেন এমন প্রশ্নের কোন উত্তর তিনি দিতে পারেনি তিনি।

এব্যাপারে কাউখালী থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল করিম জানিয়েছেন, ঘটনাটি নিয়ে প্রথমে স্থানীয়দের মাধ্যমে মিমাংসার চেষ্ঠা চালানো হয়েছে। কিন্তু আমরা পরবর্তীতে মামলা গ্রহণ করেছি এবং আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এলেন আরও ৫৯ সেনা-বিজিপি সদস্য

আরাকান আর্মির হামলার মুখে ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সদস্যরা পালিয়ে বাংলাদেশের ঘুমধুম সীমান্ত ফাঁড়ির ...