প্রকাশিত: ১৫/০৫/২০১৮ ১০:৩০ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ২:৫৫ এএম

উখিয়া নিউজ ডটকম ::
বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সঙ্কটের জন্ম দিয়েছে উল্লেখ করে ইউএন এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশলান ডেভলপম্যান্টের (ইউএসএআইডি) প্রশাসক মার্ক গ্রিন বলেছেন, মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর আপদকালীন জরুরি সহায়তা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র পূর্ব ঘোষণার অতিরিক্ত ৪৪ মিলিয়ন ডলার প্রদান করেছে।

ইউএসএআইডি’র মাধ্যমে অতিরিক্ত এ অর্থ প্রদান করা হয়। এর ফলে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে সৃষ্ট এ সংকটে মিয়ানমার ও বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার পরিমাণ দাঁড়াল ২০৭ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। ২০১৬ সালের অক্টোবর থেকে মিয়ানমার ও মিয়ানমার থেকে আগত বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর জন্য মোট মানবিক সহায়তার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯৯ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন শেষে ইউএসআইডি প্রশাসক মার্ক গ্রিন এ নতুন অর্থসহায়তার ঘোষণা দেন। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাটসহ পদস্থ কর্মকর্তারা।

এসময় তিনি আরো বলেন, বিশ্বের সর্ববৃহৎ মানবিক দাতা হিসেবে, যুক্তরাষ্ট্র বার্মা-বাংলাদেশ সীমান্তের দু’পাশে জরুরি প্রয়োজন মেটাতে সক্রিয়ভাবে সাড়া দিচ্ছে। জরুরি এ তহবিল ঘোষণার ফলে গত বছরের আগস্ট থেকে এ সঙ্কটে ইউএসএআইডি’র মোট সহায়তার পরিমাণ দাঁড়াল ১০০ মিলিয়ন ডলারে। নতুন তহবিলের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র কক্সবাজার ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে বসবাসরত ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য জরুরি খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা, আশ্রয়, স্বাস্থসেবা এবং অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় সাহায্যও প্রদান করা হবে।

২০১৭ সালের আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র প্রদত্ত ২০৭ মিলিয়ন ডলারের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র পররাষ্ট্র দফতরের পপুলেশন, রিফিউজিস এবং মাইগ্রেশন (পিআরএম) ব্যুরো প্রায় ১২৮ মিলিয়ন ডলারের মানবিক সহায়তা প্রদান করেছে।

আসছে বর্ষা ও ঘূর্ণিঝড়ের মৌসুমে জীবনহানি থেকে রক্ষা, আশ্রয় ও অত্যাবশ্যকীয় সেবা নিশ্চিত করতে শরণার্থীদের প্রস্তুতি গ্রহণে সাহায্য করছে ইউএসএআইডি।

তিনি আরও বলেন, মানবিক সহায়তা তহবিল ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র কৃষি দফতরের ম্যাকগভার্ন-ডোল কর্মসূচি (ইন্টার্ন্যাশনাল ফুড ফর এডুকেশন অ্যান্ড চাইল্ড নিউট্রিশন প্রোগ্রাম: বাংলাদেশ) প্রদত্ত অনুদানের তহবিলে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য সহায়তা প্রদান করছে। এই স্কুল ফিডিং কর্মসূচির অধীন কক্সবাজারে প্রায় ৪৮ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন হাই এনার্জি বিস্কুট প্রদান করা হচ্ছে। এই কর্মসূচির অধীন স্কুল-সংলগ্ন বাগান ও স্থানীয় কমিউনিটিগুলোর জন্য স্বাস্থ্য ও খাদ্যাভ্যাস উন্নয়ন বিষয়ক কর্মকাণ্ডও রয়েছে।

এছাড়ও যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনসন (সিডিসি) রোহিঙ্গাদের রোগ প্রতিরোধ, শনাক্তকরণ এবং রোগের প্রাদুর্ভাব ও অন্যান্য প্রধান জনস্বাস্থ্য বিষয়ে সরাসরি প্রযুক্তিগত এবং বৈজ্ঞানিক সহায়তাও দিয়ে থাকে। সিডিসি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, ইউনিসেফ, এসিএফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, এবং অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের পুষ্টি এবং প্রতিষেধক বিষয়ে ভালোভাবে বুঝে ভবিষ্যত স্বাস্থ্য সংক্রান্ত উদ্যোগের ব্যাপারে তথ্য সরবরাহ করতে কাজ করছে।

এ বছরের শুরুতে সিডিসি পরীক্ষাগারের প্রশিক্ষণ এবং সরঞ্জাম প্রদান করে। যার ফলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় রোহিঙ্গা শিবিরে ডিপথেরিয়ার ব্যাপক প্রাদুর্ভাবের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়।

মার্ক গ্রিন বলেন, এই সংঘাতের কারণে ক্ষতিগ্রস্তের সহায়তা প্রদানে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশে আগত শরণার্থীদের প্রতি দ্রুত ও উদারতার সঙ্গে সাড়া প্রদান করায় শেখ হাসিনার সরকার ও জনগণকে যুক্তরাষ্ট্র সাধুবাদ জানায়।

২০১৭ সালের আগস্ট থেকে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সহিংসতা থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। এর আগে থেকেই প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে অবস্থান করছে। মিয়ানমারে প্রায় ৮ দশমিক ৩ মিলিয়ন মানুষ সংঘাতপূর্ণ এলাকায় বাস করেন। শুধু রাখাইন রাজ্যে নয়, পুরো মিয়ানমার জুড়েই এদের বাস। এ সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সঙ্কটের জন্ম দিয়েছে।

পাঠকের মতামত

সোনার দামে আবারও রেকর্ড, ভ‌রি‌ ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৩৮ টাকা

আবারও সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। প্রতি ভরিতে ...