প্রকাশিত: ০৯/১২/২০১৮ ১০:২৭ এএম

ডেস্ক রিপোর্ট:শেষ মুহূর্তে কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে ধানের শীষ প্রতীক বদলে গেছে। এখন ধানের শীষ জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা হামিদুর রহমান আজাদের হাতে। গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানী ঢাকায় জামায়াত নেতারা বিএনপি নেতাদের হাত থেকে কারাগারে আটক হামিদুর রহমান আজাদের পক্ষে প্রতীক বরাদ্দের কাগজ গ্রহণ করেন। গতরাতে একথা নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমীর মওলানা মুস্তাফিজুর রহমান।
এর আগে শুক্রবার বিএনপি’র পক্ষ থেকে আসনটির সাবেক দলীয় এমপি আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজুল্লাহ ফরিদকে দলীয় প্রতীক দেয়ার কথা নিশ্চিত করা হয়েছিল। কিন্তু গতকাল শনিবার বিএনপি’র সেই সিদ্ধান্ত আকস্মিক পরিবর্তন হয়ে গেছে। আকস্মিক এরকম সিদ্ধান্তে মহেশখালী-কুতুবদিয়া দ্বীপের বিএনপি কর্মীরা ‘নীরবে ক্ষুব্ধ’ হয়ে পড়েছেন। অপরদিকে বেজায় খুশি আওয়ামী লীগ দলীয় নেতা-কর্মীরা। অবশ্য বিএনপি’র এরকম সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হওয়ায় ঘুরেফিরেই ভাগ্য আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি পদপ্রার্থীর কাছে ফিরে আসার পথ সুগম হয়েছে বলে মনে করছেন দলীয় লোকজন।
কেননা আওয়ামী লীগ পদপ্রার্থী এমপি আশেক উল্লাহ রফিক এবং বিএনপি পদপ্রার্থী সাবেক এমপি আলমগীর মাহফুজুল্লাহ ফরিদ সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। একারনেই দু’জন পরষ্পর বিরোধী দু’টি দলের প্রার্থী হয়ে ভোটে লড়াটাই ছিল এক প্রকার হাস্যষ্কর ব্যাপার। এ কারনেই গতকালের প্রতীক সহ প্রার্থী বদলে মহেশখালী দ্বীপের চাচা-ভাতিজার পরিবারটি যেমনি রক্ষা পেয়েছে তেমনি ক্ষমতাসীন দলের কর্মীরাও এক প্রকার হাঁফছেড়ে বেঁচেছেন।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার জেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম আরা বেগম স্বপ্না বলেন-‘কক্সবাজার জেলার ৪টি আসনের মধ্যে একটি আসন জামায়াতকে ছেড়ে দেয়ার জন্য আমাদের দল বরাবরই চাপের মুখে ছিল। হামিদুর রহমান আজাদ একই আসনে ২০০৮ সালেও এমপি ছিলেন। তদুপরি তিনি জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রভাবশালী নেতা। তাই তাকে আসনটিতে শেষ মুহূর্তে জোটের মনোনয়ন সহ প্রতীক দিতে আমাদের দল বাধ্য হয়েছে।’ তিনি বলেন, বিনিময়ে জামায়াত কক্সবাজারের অপর ৩টি আসনে বিএনপি’র জন্য মাঠে মরিয়া হয়ে নামার কথা রয়েছে।
অপরদিকে কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমীর মওলানা মুস্তাফিজুর রহমান বলেন-‘ মহেশখালীর বিএনপি নেতা আলমগীর মোঃ মাহফুজুল্লাহ ফরিদ আমাদের কারান্তরীণ দলীয় নেতা হামিদুর রহমান আজাদের বিরুদ্ধে একাধিক রীট দায়ের করেছিলেন। এসব রীট করা হয়েছিল যাতে জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আজাদ কোনভাবেই আসনটিতে প্রার্থী হতে না পারে। সেইসব রীট খারিজ হওয়ায় জামায়াত নেতা হামিদুর রহমান আজাদ এখন এমপি পদে নির্বাচন করতে কোন বাঁধা থাকল না।’
মওলানা মুস্তাফিজ বলেন, উচ্চ আদালতে রীট খারিজ হওয়ার পরই বিএনপি হামিদুরকে ধানের শীষ প্রতীক প্রদান করে। গতকাল শেষ বিকালে প্রতীক পাবার পর পরই হামিদুর রহমান আজাদের পোষ্টার ছাপার কাজও সাথে সাথেই শুরু হয়েছে। প্রসঙ্গত, আসনটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৯৬ হাজার। মহেশখালী দ্বীপের ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ১১ হাজার এবং কুতুবদিয়া দ্বীপের ভোটারের সংখ্যা হচ্ছে ৮৪ হাজার। আওয়ামী লীগের প্রার্থী এমপি আশেক উল্লাহ রফিকের বাড়ী মহেশখালী দ্বীপে এবং জামায়াতের হামিদুর রহমান আজাদ হচ্ছেন কুতুবদিয়া দ্বীপের বাসিন্দা।

পাঠকের মতামত