উখিয়া নিউজ ডটকম::
গত শনিবার মহেশখালীতে জলদস্যুদের আত্বসমর্ম্পন ও কক্সবাজারের হোটেলে অনুষ্টিত মতবিনিময় সভায় ইয়াবা পাচার প্রতিরোধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও র্যাব মহাপরিচালকের কড়া নির্দেশনার প্রেক্ষিতে তৎপর হয়ে উঠেছে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা। মঙ্গলবার টেকনাফ থানায় সদ্য যোগদান করা অফিসার ইনচার্জ প্রদীপ কুমার দাশের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে কয়েকটি চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীর আলিশান ইমারতে অভিযান চালায় পুলিশ। পাশাপাশি জনতাও ইয়াবা ব্যবসায়ীদের গড়া অট্রালিকা ভেংগে ফেলতে শুরু করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় উখিয়া থানা পুলিশ ইয়াবার টাকায় গড়া অট্রালিকার তালিকা প্রনয়নের কার্যক্রম শুরু করেছে। এ খবরে শীর্ষ ইয়াবা পাচারকারীরা বাড়ীঘর ছেড়ে পালিয়েছে।
উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, লোকবল সংকট ও রোহিঙ্গা নিয়ন্ত্রনে ব্যস্ত থাকার কারনে টেকনাফের মতো এ্যাকশন নিতে না পারলেও ইয়াবা পাচারকারীদের ধমনে সর্বশক্তি নিয়োগ করা হবে।
বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজার টেকনাফ সড়ক সংলগ্ন রাজাপালং জাদিমোরা মসজিদের পাশে গিয়ে দেখা যায় একটি বহুতল ভবনের কাজ চলছে। এসময় স্থানীয়রা জানালেন, রাজাপালং খালকাছা পাড়া গ্রামের নুন আনতে পান্তাপোরায় এমন একটি পরিবারের ছেলে, জিনি গত কয়েক বছর আগেও খিলি পান বিক্রি করে জীবন ধারন করেছে সেই ব্যক্তি মোঃ হোছনের ছেলে কবির আহম্মদ (৩৫) এই বহুতল ভবনটি নির্মান করছে। সূত্রে জানা গেছে, তার ছোট ভাই মোঃ ইসলাম (২৫) কবির আহম্মদের ইয়াবার চালান নিয়ে ঢাকা যাওয়ার পথে ৯৮ হাজার ইয়াবাসহ দাউদ কান্দি থানা পুলিশ তাকে হাতে নাতে আটক করে। বর্তমানে সে কুমিল্লা জেল হাজতে রয়েছে। এ ঘটনার পরপরই শীর্ষ ইয়াবা পাচারকারী কবির আহম্মদ ওমরা ভিসা নিয়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যায়।
এছাড়া হিজলিয়ার ইয়াবা সম্রাট বাবুলের বাড়ী,ডিগিলিয়ার শাহজাহান খলিবার বাড়ী,পালং্খালীর আনোয়ার মুজিবের বাড়ী,কুতুপালং জিয়াবুল,জানে আলমের বাড়ী সহ টিএন্ডটি লম্বাঘোনা, কুতুপালং,হাজীরপাড়া,দুছড়ি, থাইংখালী, বালুখালী, পালংখালী, রাজাপালং, টাইপালং, দরগাহবিল, ডেইল পাড়া, জালিয়াপালং ইউনিয়নের পাইন্যাশিয়া, সোনাইছড়ি,জুম্মাপাড়া, লম্বরী পাড়া, সোনার পাড়া, ডেইল পাড়া, ইনানী, মনখালী, ছেপটখালীসহ বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে গড়ে উঠেছে ইয়াবা ব্যবসার কালো টাকায় ২ শতাধিক আলিশান ভবন। নাম প্রকাশ না করা শর্তে এলাকাবাসী জানান, এসব ভবন মালিকদের পূর্বের পারিবারিক অবস্থা ও তাদের আয়ের উৎস খতিয়ে দেখলে থলের বেড়াল বেরিয়ে আসবে।
এদিকে সরকার দেশ থেকে মাদক নিমূলের পরিকল্পনা নিয়ে সারা দেশব্যাপী মাদক বিরোধী অভিযান চলতে থাকলেও ইয়াবার চালান পাচার অপরিবর্তিত থাকার বিষয়টি নিয়ে সচেতন মহলের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সড়ক পথে মাঝে মধ্যে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা কিছু কিছু ইয়াবার চালান উদ্ধার করলেও শীর্ষ পাচারকারীরা ধরা ছোয়ার বাহিরে থাকায় বিষয়টিকেও সচেতন মহল ভিন্ন চোখে দেখছে। অনেকেই বলছে এসব শীর্ষ পাচারকারীরা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে ম্যানেজ করে বীরদর্পে ইয়াবার চালান পাচার অব্যাহত রেখেছে। তবে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের জানান, যে থানায় কমপক্ষে ২০ জন পুলিশ কর্মকর্তা থাকার কথা সেখানে মাত্র দুইজন অফিসার দিয়ে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
কক্সবাজারের নবাগত পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন সংবাদিকদের জানান, ভাল পথে ফিরে আসার জন্য ইয়াবাকারবারীদের অনেক সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ততাপিও তারা ভাল পথে ফিরে আসেনি। এবার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইয়াবাকারবারীদের বিরুদ্ধে হার্ডলাইনে নামতে পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইয়াবার টাকায় গড়ে তোলা আলিশান ভবন গুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেবে।
পাঠকের মতামত