
জসিম উদ্দিন টিপু, টেকনাফ::
বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার পার্থক্যে মাঝখানে রয়েছে একটি নদী। যার নাম নাফনদী। এই নদের সৌন্দর্য্য দেখার মতই। একদিকে বাংলাদেশ অন্যদিকে রয়েছে মিয়ানমার। নদীর পশ্চিমে কেওড়া গাছের সবুজ বেষ্টনী যেন প্রকৃতির অপূর্ব এক লীলা ভুমি। বৈকালিন নির্মল হাওয়া ও উপকুলের মনোরম সৌন্দর্র্য্য উপভোগে নাফনদের বেড়ীবাঁধে যুবক-যুবতির পদচারণ ঘটে। এই নদের সৌন্দর্য্য অবলোকনে নারী-পুরুষের আগ্রহ ছিল বেশ আগে থেকেই। এর উপর নতুনভাবে নির্মিত দৃষ্টিনন্দন লম্বা ট্রানজিট জেটি পর্যটন খাতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। টেকনাফ পৌরসভার পূর্ব পাশের্^ নাফনদের কূলঘেষে ট্রানজিট কাম জাহাজঘাট ব্রীজ পর্যটন ক্ষেত্রে সম্ভবনার নব দিগন্ত উদিত হয়েছে। নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্য দিয়ে ব্রীজ নির্মাণের কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে। জেটিতে যাতায়াতের সুবিধার্থে নির্মিত সংযোগ সড়কটি আগন্তুকদের দৃষ্টি আকর্ষণে রং বেরংয়ের সৌন্দর্য্য দিয়ে তৈরী করা হয়েছে। এখন প্রতিদিন শত শত নারী-পুরুষ দৃষ্টিনন্দন ট্রানজিট ব্রীজ এক নজরে দেখতে ছুটে আসছেন। সকাল থেকেই সন্ধ্যা পায়ে হেটে জেটির সৌন্দর্য্য দেখছেন অনেকে। স্থানীয়দের পাশাপাশি টেকনাফ ভ্রমণে আসা পর্যটকরাও ট্রানজিট ব্রীজের সৌন্দর্য্য এবং সন্ধ্যাকালীন নির্মল হাওয়া উপভোগ করতে আসেন। প্রকৃতির অপরুপ মায়া এবং কৃত্রিম সৌন্দর্য্য উপভোগে নাফনদের জেটি এখন পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে বৃহত্তর ব্রীজ প্রকল্পের আওতায় ৩১কোটি ৭৩লক্ষ টাকা ব্যয়ে দীর্ঘ এই ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়েছে। যার দৈর্ঘ্য ৫৫০মিটার, প্রস্থ ৪.০৫মিটার। ল্যান্ডিং এরিয়ার দৈর্ঘ্য ৪২মিটার এবং প্রস্থ ৩১মিটার। ২০১৩সনের ৫সেপ্টেম্বর স্থানীয় সাংসদ ব্রীজ নির্মাণ কাজের শুভ উদ্বোধন করেন। ২০১৭সনের মার্চ মাসে নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। জেটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রামাগার, শৌচাগার, মিয়ানমার এবং দেশীয় ব্যবসায়ীদের ব্যবহারে ৭টি সিড়িঁ রয়েছে। এছাড়া পর্যটকদের সুবিধার্থে জেটির সম্মুখভাগে ৯০মিটার দৈর্ঘ্য ও ৬০মিটার প্রস্থের গাড়ী পাকিংয়ের জায়গা নির্দিষ্ট আছে। আশা করা হচ্ছে, এপ্রিল মাসের শেষের দিকে জেটি তথা ট্রানজিট ব্রীজটি উদ্বোধন করা হবে। জানাগেছে, আগামী বছর থেকে সেন্টমার্টিনগামী সব জাহাজই এই জেটি ব্যবহার করে প্রবালদ্বীপে যাতায়াত করবে। ট্রানজিটও এই জেটিতে স্থানান্তর হয়ে মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা লোড-আনলোডের সুযোগ পাবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ভারপ্রাপ্ত) তুষার আহমদ জানান, সেন্ট মার্টিনগামী পর্যটকদের সুবিধার্থে এবং ট্রানজিট ব্যবহারের লক্ষ্যে জেটিটি করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হওয়ায় পর্যটনের নতুন ক্ষেত্র তৈরী হয়েছে। টেকনাফকে পর্যটনজোনে পরিণত করার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নাফনদের বুকে দৃষ্টিনন্দন জেটিটি তিনিই করেছেন জানিয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি বলেন, এটি টেকনাফের উন্নয়নে ব্যাপক ভুমিকা রাখবে। অল্প সময়েই সহজে সেন্ট মার্টিন যাতায়াত করতে পারবে। পর্যটন ব্যবসার প্রসার ঘটবে।
পাঠকের মতামত