প্রকাশিত: ১০/০৩/২০১৭ ১:০২ পিএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::

বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হচ্ছে আলোচিত ঠেঙ্গারচরে? সন্দ্বীপ না হাতিয়ার মালিকানাধীন তা নিয়ে যতোই বিতর্ক থাক না কেন সমুদ্রে জেগে উঠা চরটিতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু হয়েছে। শুধু ঠেঙ্গারচর নয়, সন্দ্বীপকে ঘিরে বঙ্গোপসাগরের আশপাশের এলাকায় অনেকগুলোর চর জেগে উঠছে। সেসব চরকে কিভাবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের কাজে ব্যবহার করা যায় সেলক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে সরকার। গতকাল বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ১১ জন সচিব ঠেঙ্গারচরসহ আশপাশের চরগুলো হেলিকপ্টার দিয়ে পর্যবেক্ষণ করে।
পর্যবেক্ষণের কথা স্বীকার করে বেজার নির্বাহি চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী গতকাল রাতে সুপ্রভাতকে বলেন, আমরা ঠেঙ্গারচরটি হেলিকপ্টার দিয়ে ঘুরে দেখেছি। ভূমির সামান্য উপর দিয়ে হেলিকপ্টারটি চালিয়ে মূলত ভূমির প্রকৃতি দেখার চেষ্টা করেছি। এছাড়া সন্দ্বীপের আশপাশের এলাকায় জেগে উঠা এবং জেগে উঠতে থাকা আরো অসংখ্য চরও দেখেছি।
ঠেঙ্গারচরসহ আশপাশের চরগুলো দেখার উদ্দেশ্য কী জানতে চাইলে পবন চৌধুরী বলেন, ‘সমুদ্রে জেগে উঠা চরগুলো যাতে অর্থনৈতিকভাবে কাজে লাগানো যায় সেজন্য কর্ম পরিকল্পনা ঠিক করতে এই পর্যবেক্ষণ।’
ঠেঙ্গারচর বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসনের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা জানান, মূলত ঠেঙ্গারচরে বিদ্যুৎ সুবিধাসহ সবকিছু স’াপনের মাধ্যমে কিভাবে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা যায় এবং পর্যটনের জন্য জোন তৈরি করা যায় তা নিয়ে পরিকল্পনা করতেই এই পরিদর্শন।
একইসাথে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাটি আরো জানান, ঠেঙ্গারচরে হয়তো রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন করা হতে পারে। তবে বিশেষ ইকোনমিক জোন যে হবে তা নিশ্চিত। কারণ পুরো চরটি তো আর রোহিঙ্গাদের দেয়া হবে না। এমনও হতে পারো রোহিঙ্গারা এই অর্থনৈতিক জোনে শ্রমশক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে। আর এ লক্ষ্যেই প্রায় সাত হাজার একর আয়তনের ঠেঙ্গারচরে বিদ্যুৎ সুবিধার মাধ্যমে কিভাবে অর্থনৈতিক অঞ্চল ও পর্যটনের জন্য বিশেষ অঞ্চল গড়ে তোলা যায় সেই পরিকল্পনা চলছে। বেজার চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীসহ উচ্চ পর্যায়ের টিমটি হেলিকপ্টার দিয়ে ঘুরে দেখেন।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ঠেঙ্গারচর এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পুরো চরে বনায়ন রয়েছে। উপকূলীয় বন বিভাগের আওতায় ২০০৯ সাল থেকে এই চরে বনায়ন করা হচ্ছে। চরের মাঝখানের গাছগুলো অনেক বড় বড় হয়ে গেলেও প্রান্তীয় অংশের গাছগুলো ছোটো ছোটো রয়েছে। স’ানীয় জেলেরা জানান, ভাটার সময় এই চরটি অনেকদূর পর্যন্ত জেগে উঠে। জোয়ারের সময় সন্দ্বীপের উপকূল থেকে ট্রলারে আসতে ৩০ মিনিট সময় লাগলেও ভাটার সময় অনেক কম লাগে। যে হারে চর জেগে উঠছে তাতে আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে হয়তো তা সন্দ্বীপের সাথে জোড়া লেগে যেতে পারে।
২০০৯ সাল থেকে বনায়নের মাধ্যমে ভূমি গঠনের কাজ করতে থাকা উপকূলীয় বন বিভাগ চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির সম্প্রতি সুপ্রভাতকে বলেছিলেন, ‘যে হারে বনায়ন হচ্ছে তাতে আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে চরটি বসবাসের উপযোগী হবে। চরের চারপাশে নতুন আরো ভূমি জেগে উঠছে, কয়েক বছরের মধ্যে সেসব ভূমিও পাওয়া যাবে।’
উল্লেখ্য, শুধু ঠেঙ্গারচর নয়, সন্দ্বীপের পশ্চিমের সবুজ চর, সন্তোষপুর ও উড়িরচর এলাকায় অনেকগুলোর চর জেগে উঠছে। এসব চরগুলো নিয়েও বিশেষ অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। আর এই লক্ষ্যে সরকার মহেশখালির মাতারবাড়ি, সোনাদিয়া, নাফ নদীসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্প নিচ্ছে। সম্প্রতি ঠেঙ্গার চরে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসণ করা হবে বলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেয়ার পর তা নিয়ে আলোচনা হয়। ২৬ বছর আগে সন্দ্বীপের ন্যায়মস্তি ইউনিয়ন নামের এই চরটি সাগরে বিলীন হয়ে যাবার পর একই স’ানে তা আবার জেগে উঠে। প্রধানমন্ত্রী এই চরকে ঠেঙ্গার চর বললেও বন বিভাগের রেকর্ডে তা ন্যায়মস্তি চর এবং গুগলের স্যাটেলাইট ম্যাপে তা চর পিয়া উল্লেখ রয়েছে।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়োগ, পরীক্ষায় অনুপস্থিত থেকেও উত্তীর্ণ!

কক্সবাজারে স্বাস্থ্য সহকারীসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ পরীক্ষাকে ঘিরে গুরুতর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা ...

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যশোরে ৮.৮ ডিগ্রি, টেকনাফে সর্বোচ্চ ৩১

শীতের তীব্রতা বাড়ায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে হাড়কাঁপানো ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যশোরে দেশের ...

১৩ রোহিঙ্গার জন্মনিবন্ধন জালিয়াতি, ইউপি উদ্যোক্তার স্বামী কারাগারে

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ভুয়া সিল–স্বাক্ষর ব্যবহার করে ১৩ জন রোহিঙ্গা নাগরিকের জন্মনিবন্ধন তৈরির ...

খেলাভিত্তিক শিক্ষায় ব্র্যাকের তথ্য বিনিময় অনুষ্ঠান

শিশুদের খেলাভিত্তিক শেখা, অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা ও মনোসামাজিক বিকাশ নিশ্চিতে ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসূচির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো ...