প্রকাশিত: ২৭/০৩/২০১৯ ৪:৪৫ পিএম

নিউজ ডেস্ক::
অধিকৃত গোলান মালভূমির ওপর ইসরাইলের সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিষোদগার করেছেন তুরস্কের রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।ট্রাম্পকে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেছেন, কার ভূমি তুমি কাকে দিচ্ছ, ট্রাম্প? জাতিসংঘের নীতিমালা অনুযায়ী এই জমি তো সিরিয়ার।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকালে ইস্তাম্বুলে র্যালি শেষে এক সমাবেশে এসব কথা বলেন এরদোগান।খবর আল সাবাহর।

তিনি বলেন, গোলাম মালভূমি ইসরায়েলের বলে স্বীকৃতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে সংকট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।এই স্বীকৃতি দেয়র আগে শুক্রবার ওআইসির এক জরুরি সভায় যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোগের কড়া সমালোচনা করেন।বলেন, গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব তুরস্ক কোনো দিনই মেনে নেবে না।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, ৯ এপ্রিল ইসরায়েলের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে গোলানকে ইসরায়েলের স্বীকৃতি দেয়ার মধ্য দিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ফের ক্ষমতায় আসার সুযোগ করে দেয়া হলো।যুক্তরাষ্ট্রই একমাত্র রাষ্ট্র যে কিনা গোলানকে ইসরায়েলের স্বীকৃতি দিল। গোটা বিশ্ব এটিকে দখলিকৃত ভূমি হিসেবেই জানে।

প্রসঙ্গত, সোমবার ওয়াশিংটনে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর উপস্থিতিতে গোলান মালভূমি ইসরাইলের ভূখণ্ড এ ঘোষণাপত্রে সই করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় ইসরাইল এ জায়গাটি সিরিয়ার কাছ থেকে দখল করে নিয়েছিল। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেছিলেন- যুক্তরাষ্ট্র জেনেছে গোলান ইসরাইলের সার্বভৌম। আর এ কারণেই গোলান মালভূমিতে ইসরাইলের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি দেয়া উচিত যুক্তরাষ্ট্রের।

টুইটারে ট্রাম্প বলেন, ৫২ বছর পর গোলান মালভূমিতে ইসরাইলের সার্বভৌমত্বে স্বীকৃতি দেয়ার সময় এটিই।

মালভূমিতে বর্তমানে ২০ হাজার অবৈধ দখলদার বসবাস করছেন। কাজেই এ দখলদারিত্ব কখনই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স্বীকৃতি দিতে পারে না। এদিকে ট্রাম্পের এমন ঘোষণায় বিশ্বজুড়ে সমালোচনা ও নিন্দা জানানো হয়েছে। এর মধ্যে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, তুরস্ক, ফ্রান্সসহ অনেক দেশ রয়েছে।

১৯৬৭ সালে আরবদের সঙ্গে ছয় দিনের যুদ্ধে সিরিয়ার গোলান মালভূমি দখল করে নেয় ইসরাইল। সেই সময় ইহুদিবাদী বাহিনী ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীর ও গাজা উপত্যকারও নিয়ন্ত্রণ নেয়।

পরে ১৯৮১ সালে গোলান মালভূমিকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজ ভূখণ্ড বলে ঘোষণা দেয়। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহল কখনই ইসরাইলের এই দাবির স্বীকৃতি দেয়নি।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ১৬ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গোলান মালভূমির মালিকানা সংক্রান্ত এক ভোটাভুটি হয়।

সেখানে উপস্থিত ১৫৩ দেশের মধ্যে ১৫১ দেশ এ ভূখণ্ডের মালিকানা সিরিয়ার বলে স্বীকৃতি দেয়। শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও ইহুদিবাদী ইসরাইল প্রস্তাবটির বিপক্ষে অবস্থান নেয়।

তা সত্ত্বেও গোলানবাসীর ওপর ৫২ বছর ধরে ইহুদিবাদী দখলদারিত্ব আর অত্যাচার একটুও কমেনি; বরং বেড়েই চলছে।

ট্রাম্পের এই স্বীকৃতির প্রশংসা করে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, গোলানের এই স্বীকৃতি ঐতিহাসিক।সিরিয়া এটি এতদিন এটিকে নিজের দাবি করলেও এটি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণেই থাকবে। আমরা কখনোই এটি ছাড়ব না।

পাঠকের মতামত

আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকট সমাধান প্রয়োজন: ড. ইউনূস

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানো এবং ন্যায়সঙ্গত উত্তরণের পথ নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন ...

জাতিসংঘে প্রেসিডেন্ট পদে লড়বে বাংলাদেশ, প্রতিদ্বন্দ্বী ফিলিস্তিন

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮১তম অধিবেশনের প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে বাংলাদেশ। এবারের নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ...

জাতিসংঘে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব বিপুল ভোটে পাস

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে হামাসমুক্ত স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি প্রস্তাব বিপুল ভোটে পাস হয়েছে। ...