প্রকাশিত: ০৭/১০/২০১৯ ৮:৪২ পিএম

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
কক্সবাজারের স্থানীয় মানুষের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কাজ করা সংগঠন“আমরা কক্সবাজারবাসী” উদ্দোগে বেশকিছু দাবী নিয়ে ৭ সেপ্টেম্বর সকালে কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) বরাবরে স্বারকলিপি দিয়েছে।

উক্ত স্বারকলিপিতে নেতৃবৃন্দরা উল্লেখ করে বলেন রোহিঙ্গাদের কারনে অস্বস্তিকর পরিবেশ থেকে কক্সবাজারবাসীকে মুক্ত করতে রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করা অত্যন্ত জরুরী। কিন্তু আমরা অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি যে, রোহিঙ্গা ঢলের পর থেকে সরকার বহুবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করলেও বেশকিছু এনজিও রোহিঙ্গা মাঝি ও রোহিঙ্গা নেতাদের কারনে শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারেনি। এটি স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য বিপদ সংকেত হিসেবে দেখা যাচ্ছে। কারন ইতিমধ্যে রোহিঙ্গারা স্থানীয়দের মাঝে মিশে যেতে শুরু করেছে, এনআইডি কার্ড, পাসপোর্ট সংগ্রহ করে বিদেশে পালানোর চেষ্টা করছে। অন্যদিকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা স্থানীয়দের উপর বার বার আক্রমন করার কারনে স্থানীয়দের জনজীবন হুমকির কারন হয়ে উঠছে এবং স্থানীয়রা নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছে।

রোহিঙ্গা নামক বিষফোঁড়া থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন দেখতে চায় কক্সবাজারবাসী। কারণ রোহিঙ্গারা যত দিন বাংলাদেশে থাকবে ততদিন নতুন নতুন সংকট তৈরি হবে। এই বিপুল রোহিঙ্গা জনগোষ্টি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ও স্থানীয়দের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। অন্যদিকে মুক্তি ও শেডসহ কতিপয় এনজিও হোস্ট কমিউনিটির নামে রোহিঙ্গাদের দেশীয় অস্ত্র সরবরাহ করায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। হোস্ট কমিউনিটি কথা বললেও মূলত এসব অস্ত্র রোহিঙ্গাদের হাতে চলে যাচ্ছে। ফলে যেকোন সময় স্থানীয়দের সাথে রোহিঙ্গাদের সংঘর্ষ তৈরী হতে পারে। আমরা মনে করি যে কোন অবস্থায়ই রোহিঙ্গাদের দেশীয় অস্ত্র সরবরাহ করা যাবে না এবং যেসব এনজিও রোহিঙ্গাদের হোস্ট কমিউনিটির নামে দা, কুদাল, নিড়ানি ও ছুরি সরবরাহ করছে তাদের সকল কার্যক্রম রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে এবং মায়ানমার সরকার কর্তৃক পরিচালিত দুইটি এনজিও পালস্ বাংলাদেশ এর মাধ্যমে ক্যাম্পে পরিচালিত হওয়া পালস্ বাংলাদেশকেও ক্যাম্পে নিষিদ্ধ করতে হবে। এসব এনজিওদের অপ তৎপরতা বন্ধে প্রয়োজনীয় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

সংগঠনের পক্ষ থেকে উদ্বেগের প্রকাশ করে বলেন,স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ ও পাসপোর্ট অফিসের কতিপয় কর্মচারী টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের এনআইডি ও পাসপোর্ট সরবরাহ করেছেন। যা জাতীয় নিরাপত্তা জন্য অত্যান্ত হুমকি। যারা এরকম রাষ্ট্র বিরোধী কর্মকান্ডে সহযোগীতা করেছে তাদেরকে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় বিচার করতে হবে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সন্ত্রাসী কার্যক্রম, ইয়াবাসহ মাদক দ্রব্য, নারী ও শিশু পাচার রোধ এবং রাষ্ট্রদ্রোহী কার্যক্রম বন্ধ করতে হলে এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে হলে ক্যাম্পে চারদিকে কাঁটাতারে বেড়া দেওয়া অত্যান্ত জরুরী। কাঁটাতারে বেড়া দেওয়া হলে রোহিঙ্গারা যেভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে তা অনেকটা রোধ করা সম্ভব হবে বলে আমরা কক্সবাজারবাসী মনে করি। তাই রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারিদিকে কাঁটাতারে বেড়া দেওয়ার জোর দাবী জানান।

আমরা আরো দাবী জানিয়ে বলেন আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী হোস্ট কমিউনিটির জন্য বরাদ্ধকৃত ২৫% টাকা পুরোপুরি নিশ্চিত করতে হবে। এই ২৫% টাকা যাতে স্থানীয়দের উন্নয়নে ব্যয় করা হয় তার নিশ্চয়তা প্রদানে আপনার সদয় দৃষ্টি কামনা করছি। ১৯৭৮ সাল থেকে আসা যে সকল রোহিঙ্গা যারা ইতিমধ্যে কক্সবাজারের নাগরিকত্ব পেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে নাগরিকত্ব বাতিল করে ক্যা¤েপ ফেরত পাঠানো, ক্যা¤েপ মোবাইল ব্যবহার বন্ধে কার্যকর ভ‚মিকা নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে কক্সবাজারে বন্ধ থাকা জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম খুলে দেওয়া দাবী জানান। তাছাড়া রোহিঙ্গারা তথ্য গোপন করে তাদের ছেলে-মেয়েদের বাংলাদেশের যে সব স্কুল কলেজে লেখাপড়া করছে তা তদন্ত করে ছাত্রত্ব বাতিল করতে হবে এবং রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বাংলা ভাষায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধে কঠোর নজরদারী বাড়ানোর অনুরোধ করেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্ন এনজিওতে ৩০ হাজার রোহিঙ্গা চাকরি করছে,অনতিবিলম্বে তাদের চাকরি বাতিল করতে হবে। কোন অবস্থায় রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে চাকরি করতে দেওয়া যাবে না বলে জানানো হয়। সে সাথে রোহিঙ্গারা যতদিন বাংলাদেশে থাকবে ততদিন পর্যন্ত কক্সবাজারের স্থানীয় ছেলে মেয়েদের জন্য শতকরা ৭০% চাকরী নিশ্চিত করার দাবীও জানান সংগঠনের পক্ষ থেকে।

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) কার্যলয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব ইশতিয়াক সাহরিয়ারের হাতে স্বারকলিপি প্রদান কলে“আমরা কক্সবাজারবাসী” সংগঠনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সমন্বয়ক কলিম উল্লাহ,সমন্বয়ক নাজিম উদ্দিন, সমন্বয়ক ইব্রাহিম খলিল মামুন, সমন্বয়ক এইচ.এম নজরুল ইসলাম,সমন্বয়ক জসিম উদ্দিন,ইসমাইল সাজ্জদ,এম.এ আজিজ রাসেল,মংথেনলা রাখাইন,নাজমুল ইসলাম মিটু,মমতাজ শফিনা আজিম,মোঃ সে লিম উদ্দিন,আজিজ উদ্দিন,ফয়সাল রিয়াদ প্রমুখ।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়োগ, পরীক্ষায় অনুপস্থিত থেকেও উত্তীর্ণ!

কক্সবাজারে স্বাস্থ্য সহকারীসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগ পরীক্ষাকে ঘিরে গুরুতর অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা ...

দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যশোরে ৮.৮ ডিগ্রি, টেকনাফে সর্বোচ্চ ৩১

শীতের তীব্রতা বাড়ায় দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে হাড়কাঁপানো ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যশোরে দেশের ...

১৩ রোহিঙ্গার জন্মনিবন্ধন জালিয়াতি, ইউপি উদ্যোক্তার স্বামী কারাগারে

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ভুয়া সিল–স্বাক্ষর ব্যবহার করে ১৩ জন রোহিঙ্গা নাগরিকের জন্মনিবন্ধন তৈরির ...